‘কৃষি আইনের যাবতীয় কৃতিত্ব বিরোধীদেরই’, কৃষকদের ভুল না বোঝানোর আর্জি নমোর

‘কৃষি আইনের যাবতীয় কৃতিত্ব বিরোধীদেরই’, কৃষকদের ভুল না বোঝানোর আর্জি নমোর

নয়াদিল্লি: কৃষক বিদ্রোহে উত্তাল গোটা দেশ৷ কৃষি আইনে প্রত্যাহারের দাবিতে ২৩ দিন ধরে সিঙ্ঘু সীমান্তে চলছে লাগাতার আন্দোলন৷ এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই কৃষকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ কংগ্রেস সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরে তুলোধোনা করলেন তাদের৷ 

আরও পড়ুন- IPS পোস্টিং: কেন্দ্রকে তুলোধনা, মমতার সমর্থনে কেজরি

শুক্রবার মধ্যপ্রদেশের রায়সেন জেলায় ‘কিষান কল্যাণ’ অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নয়া কৃষি আইনে কৃষকদের স্বপ্ন পূরণের কথা শোনালেন তিনি৷ তাঁর কথায়, কৃষিতে সংস্কারের দাবি দীর্ঘদিনের৷ কিন্তু কংগ্রেস সরকার কৃষকদের সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি৷ কৃষকদের যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তা পালন করা হয়নি৷ তারা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেটাই পূরণ করা হয়েছে নয়া কৃষি আইনে৷ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কাজ ২৫-৩০ বছর আগে হওয়ার কথা ছিল, সেই কাজ আজ করতে হচ্ছে৷ গত ৬ বছরে বিজেপি সরকার কৃষকদের প্রতিটি চাহিদার উপর গুরুত্ব দিয়েছে৷ তাঁদের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ কৃষকদের দীর্ঘদিনের দাবি দাওয়াও পূরণ করা হয়েছে৷ নয়া কৃষি আইন নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে দেশজুড়ে ব্যপক চর্চা হচ্ছে৷  তবে এই পরিবর্তন রাতারাতি আসেনি৷ এর উপর বিস্তীর্ণ আলোচনা করেছে৷ কম বেশি প্রায় প্রতিটি সংগঠন এই বিষয়ে আলোচনা করেছে৷ বিগত ২০ থেকে ৩০ বছর ধরে কেন্দ্র, রাজ্য, অর্থনীতিবিদ, দেশের কৃষক সংগঠন, কৃষি বিশেষজ্ঞ, কৃষি বিজ্ঞানী এবং প্রগতিশীল কৃষকদের কথা শোনার পর এই আিন আনা হয়েছে৷  ক্রমাগত কৃষিক্ষেত্রে পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন তাঁরা৷ এটা তারই ফলশ্রুতি৷ 

আরও পড়ুন- কৃষকদের প্রতিবাদ করার অধিকার আছে, হস্তক্ষেপ করবে না সুপ্রিম কোর্ট

নমো বলেন, এর আগের সরকার তাদের ইস্তেহারে কৃষি ক্ষেত্রে পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল৷ বড় বড় স্বপ্ন দেখিয়ে কৃষকদের ভোট আদায় করা হয়েছিল৷ কিন্তু ইস্তেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করা হয়নি৷ কৃষকদের দাবি নিয়ে গড়িমশি করা হয়েছে৷ পুরনো সমস্ত রাজনৈতিক দলের ইস্তেহার, তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি দেখলে বোঝা যাবে আজকের কৃষি আইন তার থেকে আলাদা নয়৷ ওঁরা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেটাই রাখা হয়েছে এই কৃষি আইনে৷ তাঁর কথায়, ‘‘আসলে আজকে ওরা ভাবছে যে কাজ আমরা করতে পারিনি৷ সেই কাজ মোদী কী ভাবে করলেন? কেন করলেন?’’ 

কৃষক আইন নিয়ে কথা বলার সময় আবেগপ্রবণ মোদী বলেন, ‘‘সমস্ত রাজনৈতিক দলের আমার বিনীত আবেদন, আপনারা যাবতীয় কৃতিত্ব নিন৷ আপনাদের পুরনো ইস্তেহারকেই আমি কৃতিত্ব দিচ্ছি৷ আমার কোনও কাজের জন কৃতিত্ব চাই না৷ আমি শুধু চাই কৃষকদের জীবন আরও সহজ হয়ে উঠুক৷ তাঁদের জীবনে সমৃদ্ধি আসুক৷  কৃষিক্ষেত্রে আধুনিকীকরণ ও উন্নয়ন চাই৷ দেশের কৃষকদের দয়া করে ভুল বোঝাবেন না৷ তাঁরা ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পাবেন৷’’ 

আরও পড়ুন- প্রতিবাদী ৬ কৃষককে ৫০ লক্ষ টাকার বন্ড জমা দেওয়ার নোটিস প্রশাসনের

তাঁর অভিযোগ,  রাজনীতের স্বার্থে কৃষকদের ভুল বোঝানো হচ্ছে৷ কৃষকদের কাঁধে বন্দুক রাখা হচ্ছে৷ এই আইনে কী সমস্যা রয়েছে বারবার সে কথা জিজ্ঞেস করা হয়েছ৷ অথচ এ বিষয়ে কোনও দৃঢ় জবাব দিতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলি৷ যাদের পায়ের নীচে রাজনীতির মাটিটুকু নেই তারাই কৃষকদের জমি হারানোর ভয় দেখিয়ে নিজেদের রাজনীতির জমি খুঁজছে৷ মোদী বলেন, কৃষকদের নিয়ে বড় বড় কথা বললেও, তাঁরা আসলে কতটা নির্দয় তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হল স্বামীনাথন কমিটির রিপোর্ট৷ স্বামীনাথ কমিটির সুপারিশ ৮ বছর চাপা দিয়ে রেখেছিল কংগ্রেস৷ বিজেপি সরকারই স্বামীনাথন কমিটির রিপোর্ট খুঁজে বার করে তাদের সুপারিশকে লাগু করেছে৷ এছাড়াও কৃষকদের কিষান ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়েছে৷ মধ্যপ্রদেশের কৃষকরা কতখানি উপকৃত হয়েছে, এদিন সে কথাও জানিয়েছেন নমো৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × five =