সীমান্ত থেকে সেনা সরাক চিন, মস্কোয় দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বার্তা জয়শঙ্করের

সীমান্ত থেকে সেনা সরাক চিন, মস্কোয় দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বার্তা জয়শঙ্করের

নয়াদিল্লি: লাদাখে ক্রমশ গম্ভীর হচ্ছে সীমান্ত পরিস্থিতি৷ বারবার আগ্রাসী হয়ে উঠছে ড্রাগনের রক্তচক্ষু৷ এরই মধ্যে মস্কোয় সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-এর পার্শ্ববৈঠকে দু’দফায় মুখোমুখি হলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। মধ্যাহ্নভোজনে ভারত ও চিনের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রীও। সন্ধ্যায় আলোচনার টেবিলে মুখোমুখি হয় ভারত ও চিন। ভারতীয় সময় মধ্যরাত পর্যন্ত চলে এই বৈঠক৷ 

আরও পড়ুন- এবার অনলাইনে মিলবে ফুটপাতের খাবার! নয়া অনলাইন গড়ছে মোদী সরকার

সূত্রের খবর, চিনা বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সীমান্তে সশস্ত্র চিন সেনার উপস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর৷ একাধিকবার চিনা সীমান্তবাহিনীর উস্কানিমূলক আচরণ দ্বিপাক্ষিক চুক্তি লঙ্ঘন করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷ সীমান্তে শান্তি ফেরাতে ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চিনকে আরও একবার সেনা সরানোর বার্তা দেন বিদেশমন্ত্রী৷ 

এদিন প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক৷ ওই বৈঠকে জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘সীমান্তে বিপুল সেনাবাহিনী মোতায়েন ১৯৯৩ এবং ১৯৯৬ সালের দ্বিপাক্ষিক চুক্তির পরিপন্থী৷ এর ফলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে৷’’ অন্যদিকে, সীমান্তে ভারতীয় সেনাবাহিনী সমস্ত ও চুক্তি ও প্রোটোকল মেনে চলছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷ সূত্রের খবর, ভবিষ্যতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অবিলম্বে ডিসএনগেজমেন্ট (মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছনো)-এর প্রয়োজন রয়েছে বলেও চিনা বিদেশমন্ত্রীকে বার্তা দেন জয়শঙ্কর৷ উভয় দেশের স্বার্থে সীমান্ত পরিস্থিতি অবিলম্বে স্বাভাবিক করার উপর প্রথম থেকে জোড় দিয়ে আসছে নয়াদিল্লি৷ জানা গিয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার উত্তেজনা প্রশমনে পাঁচ দফা পরিকল্পনায় সম্মত হয়েছে দুই দেশ৷ এর মধ্যে রয়েছে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও প্রোটোকল মেনে চলা, সীমান্তে শান্তি বজায় রাখা এবং পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠতে পারে এমন পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকা৷ সূত্রের কথায়, ‘‘লাদাখ সীমান্তে উত্তেজনা কমানো এবং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সেনা সরানোই ছিল বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয়৷ ’’ লাদাখ সংঘর্ষ শুরুর পরে এই প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ হল জয়শঙ্কর এবং ওয়াং-এর।

আরও পড়ুন- BREAKING: নজরে চিন, জাপানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি সাক্ষর ভারতের

গত মে মাস থেকেই সীমান্তে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে৷ একাধিকবার ভারতীয় ভূখণ্ড দখলের চেষ্টা করেছে লাল ফৌজ৷ গত ১৫ জুন পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় রক্তও ঝরেছে৷ শহিদ হয়েছেন ২০ ভারতীয় সেনা৷ ২৯/৩০ অগাস্ট রাতে ফের একইভাবে উস্কানিমূলক সামরিক পদক্ষেপ করে চিন৷ ৪৫ বছর পর লাদাখ সীমান্তে চলে ‘ওয়ার্নিং শট’৷ 

সীমান্তের প্রভাব পড়েছে দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কেও৷ নিষিদ্ধ হয়েছে চিনা অ্যাপ৷  চিন থেকে আসা লগ্নি, পণ্য পরিষেবা বন্ধের চিন্তাভাবনাও শুরু করে দিয়েছে ভারত৷ চিনের কাছে যা বেশ চাপের৷ কারণ, এবার ভারতের বিপুল বাজার হাতাছাড়া হতে চলেছে বেজিংয়ের৷ আমদানি কমিয়ে ‘আত্মনির্ভর ভারতে’র স্লোগান তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − fifteen =