কলকাতা: ক্রমেই বদলে যাচ্ছে বিশ্বের জলবায়ু৷ হাজারো নিষেধাজ্ঞা থেকে গিয়েছে খাতায় কলমে৷ তাতে কর্ণপাতও করেনি মানুষ৷ এই পরিস্থিতির মধ্যেই উদ্বেগজনক তথ্য প্রকাশ করল কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক৷ তাদের পরিসংখ্যান বলছেন, ২০২১ সালে ভারত সহাসাগরের উপর দিয়ে ৬টি তাপপ্রবাহ বয়ে গিয়েছে৷ তাও মাত্র ৫২ দিনের মধ্যে৷ বঙ্গোপসাগরের পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক৷ ৬টির মধ্যে ৪টি দুর্যোগই হয়েছে বঙ্গোপসাগরে৷
আরও পড়ুন- বাংলার সাংসদদের হঠাৎ বাসভবনে আমন্ত্রণ করলেন মোদী, ব্যাপার কী
রাজ্যসভায় লিখিত জবাবে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং জানিয়েছেন, দেশের চারপাশে যে কটি মহাসাগর রয়েছে, প্রত্যেকটির উপরেই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে৷ পুরনো রেকর্ড ভেঙে তাপপ্রবাহের নতুন রেকর্ড গড়ছে৷ যা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি৷ ভারত মহাসাগরে যে তাপপ্রবাহ সৃষ্টি হচ্ছে, সেটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়৷ বিশ্বউষ্ণায়নের আঁচে পুড়ছে সমুদ্র৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ‘গত কয়েক দশকে ভারত মহাসাগরের পশ্চিম অংশে তাপপ্রবাহের মাত্রা প্রায় চারগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি দশকে বেড়েছে দেড়গুণ করে৷ বঙ্গোপসাগরে তাপপ্রবাহের মাত্রা ২ থেকে ৩ গুণ বেড়ে গিয়েছে৷ পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৫১ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে সমুদ্রের উপরিভাগের তাপমাত্রা প্রতি দশকে ০.১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস করে বৃদ্ধি পেয়েছে৷
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল মেটিরিওলজির সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ১৯৮২ থেকে ২০১৮-র মধ্যে ভারত মহাসাগরে ৬৬টি তাপপ্রবাহ ও বঙ্গোপসাগরে ৯৪টি তাপপ্রবাহের ঘটনা ঘটেছে৷ পরিস্থিতি যে অত্যন্ত জটিল, সেই ইঙ্গিত দিয়েছে রাষ্ট্রসংঘের আবহাওয়া সংক্রান্ত প্যানেল৷ তাঁদের সতর্কবার্তা, চলতি শতাব্দীর শেষে জলের তলায় তলিয়ে যাবে ভারতের ১২টি উপকূল শহর৷ তিন ফুট উঁচুতে জল উঠে যাবে৷ এই শহরগুলির মধ্যে রয়েছে মুম্বই, চেন্নাই, কোচি এবং বিশাখাপত্তনম৷
এদিকে, চৈত্রের শুরু থেকেই গরমে জ্বলছে মরুরাজ্য৷ চিন্তা রয়েছে বাংলাকে নিয়েও৷ চলতি সপ্তাহের শেষেই দক্ষিণবঙ্গের একাংশে তাপপ্রবাহ শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস৷ তাপপ্রবাহের আশঙ্কা আছে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রামে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাসের কথায়, রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে গেলেই তাকে তাপপ্রবাহ বলা হবে। সতর্কতা জারি করা হয়েছে ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশার একাংশেও। দিল্লির মৌসম ভবন জানিয়েছে, রাজস্থান, হরিয়ানা-সহ উত্তর-পশ্চিমের বিস্তীর্ণ এলাকায় তাপপ্রবাহ শুরু হয়ে গিয়েছে৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>