নয়াদিল্লি: সমুদ্রের বুকে শক্তি বাড়াল ভারত৷ শত্রু শিবিরের চিন্তা বাড়িয়ে ভারতীয় নৌবাহিনীতে জুড়ল নতুন সাবমেরিন আইএনএস বাগির। সোমবার মুম্বইয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে ভারতীয় নৌবাহিনীর অন্তর্ভুক্ত হল এই ডুবোজাহাজ৷ কালভারি শ্রেণির এই ডুবোজাহাজের বিশেষত্ব হল এর ইঞ্জিন। ডিজেলচালিত এই ইঞ্জিন খুব সহজেই বিভিন্ন অভিযানের জন্য দ্রুত ব্যাটারি রিচার্জ করতে পারে। শুধু তাই নয়, সাগরের অতলে নিজেকে লুকিয়ে রেখে বিপক্ষকে বিভ্রান্ত করতেও ওস্তাদ বাগির৷
আরও পড়ুন- একাধিক ফাটলের কবলে বদ্রীনাথও, ঘিরে ধরছে জোশীমঠ আতঙ্ক
কিন্তু জানেন কি কোথা থেকে এই বাগির নামের উৎপত্তি? বাগির আসলে এক ধরনের বালির মাছ। তার নামেই নামকরণ করা হয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনীর এই নতুন সদস্যের৷ বাগির মাছের একটা বিশেষত্ব রয়েছে৷ এরা খুব দূর থেকে শিকারের অবস্থান বুঝে নিয়ে নিজেদের প্রস্তুত করে। সুবিধা মতো জায়গায় ঘাপটি দিয়ে বসে থাকার পর অতর্কিতে শিকারের উপর হামলা চালায়৷ ভারতীয় নৌবাহিনী জানিয়েছে, আইএনএস বাগিরেরও মধ্যেই শত্রুর চোখে ধুলো দিয়ে আক্রমণ হানার ক্ষমতা রয়েছে৷ আইএনএন বাগিরে রয়েছে অসংখ্য সেন্সর। যার সাহায্যে অনেক দূর থেকেই শত্রুপক্ষের অবস্থান বুঝে নিতে পারবে এই সাবমেরিন। এছাড়াও শত্রুপক্ষের সাবমেরিনের ছোড়া টর্পেডোকে বিভ্রান্ত করার ক্ষমতা রয়েছে ডুবোজাহাজ বাগিরের৷
১৯৭৩ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আইএনএস বাগির নামের আরও একটি সাবমেরিন ভারতীয় নৌবাহিনীর অংশ ছিল। তবে পুরনো সেই ডুবোজাহাজটি ছিল রাশিয়া এবং স্পেনের যৌথ প্রযুক্তিতে তৈরি। নতুন আইএনএস বাগির জুবোজাহাজটি বানিয়েছে মুম্বইয়ের মাজাগন ডক শিপবিল্ডার লিমিটেড। ফরাসি প্রযুক্তির সাহায্যে নতুন ডুবোজাহাজটি বানানো হয়েছে। গত বছর পরীক্ষামূলক ভাবে জলে ভেসেছিল বাগির। সেই পরীক্ষা সফল হয়৷
গত কয়েক মাস ধরে ভারত মহাসাগরে ক্রমশ আনাগোনা বাড়াচ্ছে পড়শি চিনের। সে দেশের সেনাদের উপস্থিতির পাল্টা জবাব দিতেই আইএনএস বাগিরের নৌসেনায় অন্তর্ভুক্তি বলে মনে করছেন ভারতের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। যদিও গত বছর সফল পরীক্ষার পর এ বছরের শুরুতেই নৌসেনায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা ছিল আইএনএস বাগিরের।
সোমবার মুম্বইয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নৌসেনা প্রধান আর হরিকুমার। ডুবোজাহাজ উদ্বোধন করার পরে তিনি জানান, গত দু বছরে এই নিয়ে তৃতীয় সাবমেরিন ভারতীয় নৌবাহিনীর সদস্য হল। বিশাল অস্ত্রভাণ্ডারের অধিকারী এই ‘বাগির’-কে ‘লিথাল প্ল্যাটফর্ম’ বলেও উল্লেখ করেছেন নৌসেনা প্রধান। মহাসাগরে চিনকে টক্কর দিতে এই সাবমেরিনই এখন ভারতের হাতে নয়া অস্ত্র।
ভারতীয় নৌবাহিনীতে কালভারি শ্রেণির পঞ্চম সাবমেরিন হল বাগির৷ নৌবাহিনীর তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ভারতীয় নৌবাহিনীর গোয়েন্দা হিসাবে কাজ করবে এই সাবমেরিন। বিপক্ষের উপর নজরদারি এবং তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি, বিপদ বুঝলে বিপক্ষকে আক্রমণ করার ক্ষমতাও রাখবে বাগির৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>