নয়াদিল্লি: দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে চৈত্র নবরাত্রি৷ এরই মাঝে উঠল আমিষ-নিরামিষ বিতর্ক৷ নবরাত্রি উপলক্ষে ইতিমধ্যেই মাছ এবং মাংসের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিজেপি পরিচালিত দক্ষিণ দিল্লি পুর নিগমের মেয়র। এই নির্দেশিকা নিয়ে বিতর্কের মাঝেই পশ্চিম দিল্লি লোকসভা আসনের বিজেপি সাংসদ পরবেশ সাহিব সিং বর্মার দাবি, শুধু দিল্লি নয়, চৈত্র নবরাত্রির সময় গোটা দেশেই মাছমাংসের দোকান বন্ধ রাখা উচিত৷
আরও পড়ুন- ৫০ বার ‘ফেল’! সম্প্রীতির বেতন এখন ১ কোটি টাকার বেশি
এদিকে, মাছ-মাংসের দোকান বন্ধের নির্দেশিকাকে কেন্দ্র করে বিতর্কের ঝড় উঠেছে উত্তরপ্রদেশের ফরিদাবাদ, গাজিয়াবাদেও। গুরুগ্রামে গায়ের জোড়ে মাংসের দোকান বন্ধ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। দেখতে গেলে আমাদের দেশে বহু মানুষ ১২ মাস নিরামিষ খান৷ কিন্তু আমিষভোজীদের উপর সেই নিয়ম জোড় করে চাপিয়ে দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ জানেন কি দেশের কত মানুষ আমিষাশী?
ভারতে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সংখ্যা ৩৬। দেশের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকাশিত সর্বশেষ রিপোর্ট তৈরি হয়েছে এই ৩৬টি জায়গা মধ্যে ৩০টিতে করা সমীক্ষার উপর৷ তাতে দেখা গিয়েছে, অর্ধেকের বেশি রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ৯০ শতাংশ মানুষ মাছ-মাংস খেয়ে থাকেন। প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে অন্তত একদিন তাঁদের পাতে থাকে মাছ, মাংস কিংবা ডিম। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষায় (ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে-৫) এমনই তথ্য উঠে এসেছে। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের হিসাব অনুযায়ী, দেশে এমন একটিও রাজ্য নেই যেথানে ২০ শতাংশের কম মানুষ আমিষাশী৷ কেন্দ্রীয় পরিবার ও স্বাস্থ্য কল্যাণ মন্ত্রকের হয়ে এই সমীক্ষাটি চালিয়েছিল মুম্বইয়ের ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর পপুলেশন সায়েন্সেস।
তাদের রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ১৬টি রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ পাতে আমিষ খাবারই বেশি পছন্দ করেন। এর মধ্যে চারটিতে ৭৫-৯০ শতাংশ মানুষই আমিষ প্রেমী৷
রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ভিত্তিতে মাছ, মাংস বা ডিম পছন্দের ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা রিপোর্টও মিলেছে। দেখা গিয়েছে, ১৪টি রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ মাছ-ভক্ত। চারটি অঞ্চলে ৭৫-৯০ শতাংশ, ছ’টি অঞ্চলে ৫০-৭৫ শতাংশ, তিনটি অঞ্চলে ২৫-৫০ শতাংশ এবং অন্য তিনটিতে ২৫ শতাংশের কম মাছ ভক্ত৷
আবার মাংসের ক্ষেত্রে রয়েছে অন্য হিসাব৷ ১৫টি রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ৯০ শতাংশ মানুষই মুরগি কিংবা অন্য প্রাণির মাংস খেতে অধিক পছন্দ করেন। পাঁচটি রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সেই হার ৭৫ থেকে ৯০ শতাংশ, পাঁচটিতে ৫০-৭৫ শতাংশ, চারটিতে ২৫-৫০ শতাংশ এবং একটিতে ২৫ শতাংশের কম।
দেখতে গেলে ডিমের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি৷ এমন একটিও রাজ্য বা কেন্দ্র কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল নেই যেখানে ২৫ শতাংশের কম মানুষ ডিম খান। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১৫টি রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ডিম খান ৯০ শতাংশ মানুষ, ছ’টিতে ৭৫-৯০ শতাংশ, পাঁচটিতে ৫০-৭৫ শতাংশ এবং চারটিতে ২৫-৫০ শতাংশ মানুষ।
আমিষভোজীদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে বাংলা৷ ৯৭ শতাংশ বঙ্গবাসী মাছ ভক্ত। মাংস আর ডিমের ভক্ত ৯৬ শতাংশ মানুষ।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>