নয়াদিল্লি: ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত৷ বুধবার দুপুরে তামিলনাড়ুর কুন্নুরে ভেঙে পড়ে তাঁর চপার৷ সন্ত্রীক ওই কপ্টারে সফর করছিলেন তিনি৷ গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন জেনারেল বিপিন রাওয়াত ও তাঁর স্ত্রী মধুলিকা৷
আরও পড়ুন- এর আগেও হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন রাওয়াত, বেঁচে গিয়েছিলেন বীরের মতো
১৯৫৮ সালে উত্তরখণ্ডের পৌরি গাড়ওয়াল জেলায় জন্ম বিপিন লক্ষ্ণণ সিং রাওয়াতের। তাঁর বাবাও ছিলেন সেনাবাহিনীর জেনারেল৷ তবে তিনি সেনাপ্রধান হননি৷ তাঁর বাবার নাম লক্ষণ সিং রাওয়াত। ক্যামব্রিয়ান হল (দেহরাদুন), সিমলার সেন্ট এডওয়ার্ড স্কুল এবং সবশেষে ‘ইন্ডিয়ান মিলিচারি অ্যাকাডেমি’ থেকে পাশ করেন রাওয়াত৷ ভালো ফল করায় তিনি ‘সোর্ড অফ অনার’ও পান৷ এছাড়াও তিনি ডিফেন্স সার্ভিস স্টাফ কলেজ, ওয়েলিংটন এবং আমেরিকার আর্মি কমান্ড অ্যান্ড জেনারেল স্টাফ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েট হন৷
১৯৭৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর গোর্খা রাইফেলসের পঞ্চম ব্যাটেলিয়নের সঙ্গে তিনি যুক্ত হন৷ উল্লেখ্য বিষয় হল, তাঁরা বাবাও ছিলেন এই ব্যাটেলিয়নেরই সদস্য৷ হাই অলটিটিউডে শত্রু মোকাবিলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর৷ কর্মজীবনের ১০ বছর জঙ্গিবিরোধী অভিযানে অতিবাহিত করেছেন৷ তিনি ছিলেন জঙ্গি দমনে সিদ্ধহস্ত৷ পাকিস্তানে সার্জিকাল স্ট্রাইকের অন্যতম কাণ্ডারী৷ জম্মু-কাশ্মীরের উরির একটি কোম্পানির মেজরও ছিলেন তিনি৷ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পূর্ব সেক্টরে ১১ গোর্খা রাইফেলসকে কমান্ড করেছিলেন রাওয়াত৷
১৯ তম পদাতিক ডিভিশনের অধিনায়ক এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি (সার্দান কমান্ডের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং-ইন-চিফ) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেনা প্রধান হওয়ার আগে তিনি ‘ভাইস চিফ অব আর্মি স্টাফ’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন৷ ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে এই পদে ছিলেন তিনি৷ সেনাপ্রধান হওয়ার সময় তাঁর নাম নির্বাচিত হয়েছিল দুই ঊর্ধ্বতন জেনারেলকে টপকে৷ তাঁরা হলেন প্রবীণ বকশী এবং পি এম হারিয।
২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর দেশের প্রথম সিডিএস হন রাওয়াত এবং ১ জানুয়ারি ২০২০ থেকে কার্যভার গ্রহণ করেন৷ সিডিএস হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে, তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২৬তম সেনাপ্রধান এবং চিফ অফ স্টাফ কমিটির ৫৭ তম এবং শেষ চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
আরও পডুন- চপার দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত জেনারেল বিপিন রাওতের স্ত্রী মধুলিকা
জানা যায়, এর আগে ২০১৫ সালে নাগাল্যান্ডের প্রায় একই রকমের দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ছিলেন তিনি। সেবার আশ্চর্যজনকভাবে রক্ষা পেয়েছিলেন। নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন৷ সেনা হেলিকপ্টার ‘চিতা’ প্রায় কুড়ি ফুট ওপর থেকে ভেঙে পড়ে৷ কিন্তু এই দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যান তৎকালীন লেফটেন্যান্ট জেনারেল বিপিন রাওয়াত। আজকের এই দুর্ঘটনা ৬ বছর আগের সেই দুর্ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। সকলে প্রার্থনা, সে বারের মতো এবারেও যেন বীরের মতো ফিরে আসতে পারেন বর্তমান চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত।