নয়াদিল্লি: লাদাখ সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে চূড়ান্ত গোপনীয়তা বজায় রেখে চলছে দু’দেশের বৈঠক৷ এরই মধ্যে জানা গিয়েছে, পিপলস লিবারেশন আর্মি চায় প্রথমে ‘সেনা সংখ্যা কমানো’ (ডিএসক্যালেশন) প্রক্রিয়া সম্পন্ন হোক৷ পরবর্তী ক্ষেত্রে হোক ‘সেনা পিছনো’ (ডিসএনগেজমেন্ট) প্রক্রিয়ায়৷ তাদের দাবি, ট্যাঙ্ক এবং অন্যান্য সমরাস্ত্র প্রথমে মিউচুয়ালি সরানো হবে৷
আরও পড়ুন- পুজোর মুখে ভ্যাকসিন নিয়ে বড় খবর, রাশিয়ার স্পুটনিকের ট্রায়ালে ছাড়পত্র দিল ভারত
অন্যদিকে ভারতের তরফে বলা হচ্ছে, প্রথমে ধাপে ধাপে সেনা পিছনো বা ডিসএনগেজমেন্ট করা হবে৷ তার পর হবে ডিএসক্যালেশন৷ নয়াদিল্লির তরফে জানানো হয়েছে ডিসএনগেজমেন্ট প্রক্রিয়ায় ভারতীয় সেনা পূর্ব অবস্থানে ফিরে যাবে৷ অর্থাৎ লাদাখে ১,৫৯৭ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ২০২০-র এপ্রিল পর্যন্ত যে অবস্থানে ছিল, সেখানেই ফিরে আসবে সেনা৷ এর পরই শুরু হবে ডিএসক্যালেশন প্রক্রিয়া৷
বিশেষজ্ঞদের মতে, সামরিক শর্তে বিতর্কিত এলাকাগুলি থেকে ট্যাঙ্ক ও আর্টিলারি প্রত্যাহার ভারতীয় সেনার পক্ষে হিতকর হবে না৷ কারণ বেজিং এলএসি পর্যন্ত ইতিমধ্যেই রাস্তা তৈরি করে ফেলেছে৷ যার ফলে ভারতের চেয়ে অনেক দ্রুত সীমান্তে সেনা মোতায়েন করার ক্ষমতা রাখে চিন৷ সেনা আধিকারিক সূত্রে খবর, লাল ফৌজ সীমান্তে ডিসএনগেজমেন্টের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত শীতের মধ্যে পূর্ব লাদাখের উঁচু পার্বত্য এলাকাগুলিতে বহাল থাকবে ভারতীয় সেনা৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সেনা কর্তা বলেন, ‘‘উঁচু পার্বত্য এলাকায় মোতায়েনের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ রয়েছে ভারতীয় সেনার৷ পরিস্থিতির মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা সেখানেই মোতায়েন থাকবে৷ ভারতীয় সেনা সুরক্ষিত অবস্থানে রয়েছে বলেও জানান তিনি৷
আরও পড়ুন- আর নয় বঞ্চনা! ডিজিটাল মিডিয়াকে সরকারি স্বীকৃতি, সুযোগ-সুবিধার সুপারিশ কেন্দ্রের
প্রসঙ্গত, গত মে মাস থেকেই সীমান্তে উত্তেজনা বাড়তে থাকে৷ ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফলতে শুরু করে লাল ফৌজ৷ গত ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে মৃত্যু হয় ২০ ভারতীয় জওয়ানের৷ এর পরও একাধিকবার সীমান্তে আগ্রাসী পদক্ষেপ করেছে চিন৷ দফায় দফায় বসেছে সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চক্র৷ আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান চাইছে ভারত৷ ভারতের কয়েকটি পদক্ষেপের পর এখন চিনের মনোভাব অনেকটাই শিথিল বলে ভারতীয় সেনা সূত্রের খবর৷ সাম্প্রতিক বৈঠক প্রসঙ্গে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, দুই দেশের মধ্যে কথোপকথন অত্যন্ত গোপনীয়৷ এখনই এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করাটা উচিত হবে না৷ জানা গিয়েছে, শুধু গালওয়ান উপত্যকা, প্যাংগং হ্রদ বা গোগরা হট স্প্রিং-এর মতো পূর্ব লাদাখের বিতর্কিত অঞ্চল নিয়েই নয়, অরুণাচল পর্যন্ত বিস্তৃত যে যে বিতর্কিত এলাকা নিয়ে মতভেদ রয়েছে, সেই সবকটি এলাকা নিয়েই আলোচনা চালাচ্ছে ভারত।