নয়াদিল্লি: চিনের সামরিক কৌশলবিদ সান তজু তাঁর বিখ্যাত বই ‘আর্ট অফ ওয়ার’-এ লিখেছিলেন, খ্রীষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে এমন একটি রণনীতি নেওয়া হত, যেখানে যুদ্ধ না করেই পরাস্ত করা হতো শত্রুকে৷ পরাস্ত করা হত মানসিক ভাবে৷ সেই অস্ত্রেই নতুন করে শান দিয়েছে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি এবং চিনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র৷ লাদাখে নিযুক্ত ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ শুরু করেছে লাল ফৌজ৷
আরও পড়ুন- ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ, কী বলছেন শিক্ষামন্ত্রীরা?
একটি সর্বভারতীয় সংবাদপত্র বলছে, ভারতীয় সেনা প্যাংগং লেকের দক্ষিণে রেজাং লা- রেচিং লায় চিনা বাহিনীকে রোখার পর, লেকের উত্তরে তাদের সেনা সরিয়ে নিয়ে যায় ফিঙ্গার ফোর-এর পাহার চূড়া দখলে রাখার জন্য৷ চিনা ফৌজও তাদের ট্যাঙ্ক এবং পাদাতিক বাহিনী নিয়ে ভারতকে ডরানোর চেষ্টা শুরু করে দেয়৷ কিন্তু লাল ফৌজের শক্তি প্রদর্শনে ভীত হওয়া তো দূর, ভারতীয় বাহিনী স্পষ্ট জানিয়ে দেয় রেড লাইন লঙ্ঘন করলেই পাল্টা প্রতিশোধ নেওয়া হবে৷
লাল ফৌজের শক্তি দেখে ভারতীয় সেনা যখন একেবারেই বিস্মিত বা ভীত সন্ত্রস্ত নয়, অন্য এক কৌশল নিল পিএলও৷ সীমান্তে পাঞ্জাবী গান বাজাতে শুরু করলেন পিএলএ কমান্ডাররা৷ যাতে পাহাড় চূড়ায় বসে থাকা প্রতিদ্বন্দ্বী সেনাদের মানসিক ভাবে দুর্বল করা যায়৷ এদিকে, প্যাংগং লেকের উত্তর যখন পাঞ্জাবী গানে মত্ত তখন চুসুলের মলডো গ্যারিসনে বসানো হল আরও একটি লাউড স্পিকার৷ যেখানে বারবার ভারতীয় সেনাকে নিজেদের দাবি মনে করিয়ে দিতে লাগল তারা৷ প্যাংগন লেকের দক্ষিণে লাগানো লাউড স্পিকারগুলিতে শুদ্ধ হিন্দিতে ভারতের কাছে বার্তা পৌঁছে দিল চিন৷ তাঁদের বার্তা, শীতের মরশুমে পাহার চূড়ায় সেনা মোতায়েন নিরর্থক৷ শুধু তাই নয়, ভারতীয় রাজনীতিবিদদের প্রসঙ্গেও নানা মন্তব্য করে তারা৷
আরও পড়ুন- BREAKING: চলতি মাসেই বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলার রায়, আডবানি-জোশীদের হাজিরার নির্দেশ
ভারতের প্রাক্তন সেনা প্রধানের কথায়, ‘‘১৯৬২-র যুদ্ধ এবং ১৯৬৭ সালে নাথুলা যুদ্ধে একইভাবে লাউড স্পিকার থিওরি ব্যবহার করেছিল চিন৷’’ তিনি বলেন, ‘‘কিন্তু ফিঙ্গার ফোরে পাঞ্জাবী গান নিয়ে সতর্ক ছিল ভারতীয় সেনা৷ চিন হয়তো ভেবেছিল পাঞ্জাবী সেনারাই ফিঙ্গার ফোরের চূড়া দখল করে রয়েছে৷’’ এদিকে, পিএলএ যখন লাউড স্পিকার নীতি নিয়েছে, তখন চিনের কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্রে তুলে ধরা হচ্ছে ১৯৬২ সালে ভারতের ব্যর্থতার কথা৷ বলা হচ্ছে ভারতের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তার কথা৷ ভারতে কী ভাবে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে তুলে ধরা হচ্ছে সেই পরিসংখ্যান৷ অথচ একবারও উল্লেখ করা হচ্ছে না যে, চিনের উহান থেকেই ছড়িয়েছে এই মারণ ভাইরাস৷ এমনকী অভ্যন্তরীণ কোন্দল থামানোর জন্যই সীমান্তে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে বলেও বর্ণনা দিচ্ছে চিন৷