Aajbikel

যে কোনও সময় কেঁপে উঠতে পারে হিমালয়, সেই ভূমিকম্প হবে আরও ভয়ঙ্কর, আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের

 | 
হিমালয়

নয়াদিল্লি:  মঙ্গলবার রাত তখন দু’টো৷ কেঁপে উঠে নেপালের মাটি৷ তাসের ঘরের মতো হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে একের পর এক ঘর-বাড়ি৷ প্রকৃতির রোশে মৃত্যু হয় ৬ জনের৷ সেই কম্পনের ধাক্কা লেগেছিল ভারতের মাটিতেও৷ কম্পন অনুভূত হয় দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, বিহার সহ উত্তর ভারতের বিভিন্ন অংশে৷ এদিকে, বুধবার মধ্যরাতে সগরের অতলে সংঘর্ষ হয় দুটি প্লেটের৷ কেঁপে ওঠে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের মাটি৷ একের পর এক ভূমিকম্পে উদ্বেগে বিজ্ঞানীরা৷  

আরও পড়ুন- শপথগ্রহণ সম্পন্ন, দেশের ৫০ তম প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়

২০১৫ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল নেপালে৷ প্রকৃতির সেই তাণ্ডবে প্রায় গুঁড়িয়ে গিয়েছিল ড্রাগনের দেশ৷ সেই স্মৃতি উসকে মঙ্গলবার ফের ভূমিকম্প হল সে দেশে৷ রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৩৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, আগামীতেও রয়েছে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা৷ ভবিষ্য়তে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা করেছেন ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট অফ হিমালয়ান জিওলজির ভূপদার্থবিদ অজয় পাল। তিনি জানান, হিমালয় অঞ্চলে ভবিষ্যতে ভূমিকম্পের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘ভারতীয় এবং ইউরেশীয় প্লেটের সংঘর্ষের ফলেই হিমালয়ের উৎপত্তি। ভারতীয় প্লেটের উপর ইউরেশীয় প্লেটের ক্রমাগত চাপের কারণে কম্পনের সৃষ্টি হয়। ফলে ওই এলাকায় ভূমিকম্প হওয়া খুবই স্বাভাবিক।’’ তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে ভূমিকম্প হলে কম্পনের মাত্রা আরও তীব্র হবে৷ সেই প্রবণতা প্রবল৷


অজয় বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে যদি হিমালয় অঞ্চলে ভূমিকম্প হয়, তাহলে তা অত্যন্ত শক্তিশালী হবে৷  কম্পন মাত্রা সাত বা তার বেশিই থাকবে। কিন্তু এই ভূমিকম্প ঠিক কোন সময়ে হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। এক মাসের মধ্যেও হতে পারে আবার আগামী ১০০ বছরেও হতে পারে। ভবিষ্যতের কথা ভেবে ওই এলাকার বাসিন্দাদের এখন থেকেই প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রয়োজন৷ যাতে তীব্র কম্পন হলেও তাঁরা নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারেন।’’   


তিনি বলেন, জাপানও কিন্তু ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। কিন্তু জাপানিরা সুরক্ষার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছেন৷ তাই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ভারতের চেয়ে তুলনামূলক কম। ভারতের মধ্যে উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচল প্রদেশে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা অনেক বেশি বলেই অনুমান ভূপদার্থবিদদের।

উল্লেখ্য,  গত ১৫০ বছরে বেশ কয়েকটি ভূমিকম্প হয়েছে হিমালয় ও তৎসংলগ্ন এলাকায়। ১৮৯৭ সালে শিলংয়ে তীব্র কম্পন অনুভূত হয়েছিল। এর পর ১৯০৫ সালে কাঙ্গরায়, ১৯৩৪ সালে বিহার-নেপাল সীমান্তে ও ১৯৫০ সালে অসমে ভূমিকম্প হয়। এছাড়া ১৯৯১ সালে উত্তরকাশীতে, ১৯৯৯ সালে চামোলি ও ২০১৫ সালে নেপালে যে ভূমিকম্প হয়েছিল, তা ছিল ভয়ঙ্কর৷


সিনিয়র জিওগ্রাফিসিস্ট অজয় পাল জানান,  ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া কখনই সম্ভব নয়৷ সেক্ষেত্রে নিজেদের আগে থেকে প্রস্তুত রাখা প্রয়োজন। এতে বড় ক্ষয়ক্ষতি যেমন এড়ানো যায়, তেমনই ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতিও দক্ষ হাতে সামাল দেওয়া যায়৷ তাঁর পরামর্শ, ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলে ঘরবাড়ি এমনভাবে বানানো উচিত, যাতে ভূমিকম্পের বিশেষ প্রভাব না পড়ে৷ জাপানেও এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়।


 

Around The Web

Trending News

You May like