Aajbikel

বাবা কাঠমিস্ত্রি, দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করেই UPSC-তে সফল জয়প্রকাশ, সর্বভারতীয় র‍্যাঙ্ক ২৭

 | 
ইউপিএসসি

নয়াদিল্লি: দরিদ্র পরিবারে জন্ম তাঁর৷ বাবা সামান্য কাঠ মিস্ত্রি৷ মা মাঠে ছাগল চড়িয়ে বাকি সময়টা দিতেন সংসারের কাজে৷ জ্ঞান হওয়া ইস্তক দুঃখ-কষ্টই দেখে এসেছেন তিনি৷ ফলে তাঁর শৈশব যে খুব একটা সুখকর ছিল না, তা বলাই বাহুল্য৷ ছোট থেকেই জীবনে এসেছে একাধিক প্রতিবন্ধকতা। কিন্তু সমস্ত বাধা অতিক্রম করে ইউপিএসসির (UPSC) ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল সার্ভিস(ISS) পরীক্ষায় দারুণ সফল জয়প্রকাশ শাহ৷ শুধু তাই নয়, তাঁর সর্বভারতীয় ব়্যাঙ্ক ২৭৷ 

আরও পড়ুন- প্রবল শৈত্যপ্রবাহ, শীতের 'কামড়ে' উত্তরপ্রদেশে মৃত ৪


মা গায়ত্রী দেবী মাঠে ছাগল চরিয়েও ছেলের জন্য সময় বার করে তাঁর দেখাশোনা করতেন। বাবা কানহাইয়া শাহ করতেন ছুতোরের কাজ৷ মাঝৌলিয়া ব্লকের জোকাটিয়া পঞ্চায়েতের ওয়ার্ড-৬-এর বাসিন্দা জয়প্রকাশ ছোট থেকেই মেধাবী৷ মাত্র ২৬ বছর বয়সেই ইউপিএসসির  অধীনে আইএসএস পরীক্ষায় সফল ভাবে উত্তীর্ণ হন তিনি। 


ইউপিএসসি হল আমাদের দেশের অন্যতম কঠিন পরীক্ষা৷ আইএসএসে সারা ভারতে মোট ২৯ জন প্রার্থীকে নেওয়া হয়, যার মধ্যে জয়প্রকাশ ২৭ তম স্থানে রয়েছেন। দু’বছর প্রশিক্ষণের পর কোনও না কোনও মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হবে জয়প্রকাশকে৷ 


২০১২ সালে  গ্রামের স্কুলের পাঠ শেষ করে পাটনা বিজ্ঞান কলেজে ভর্তি হন জয়প্রকাশ। সেখান থেকে ডিগ্রি নিয়ে চলে আসেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ সেখান থেকে ম্যা ক পাশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ও বাবাই তাঁর পড়াশোনার খরচ জোগাতেন৷ পরে একটি কোম্পানিতে  ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন৷ এর পর আর বাবার কাছে হাত পাততে হয়নি তাঁকে৷ নিজের পড়াশোনার খরচ নিজেই বহন করতে থাকেন৷ 


প্রথম থেকেই নিজের লক্ষ্যে স্থির ছিলেন জয়প্রকাশ। নিজের স্বপ্ন পূরণের পথে কোনও কিছুর সঙ্গে আপোশ করেননি৷  তিনবার আইএসএস পরীক্ষায় বসেন৷ অবশেষ আসে সাফল্য৷ গত চার বছর গ্রামের বাড়িতে ফেরননি জয়৷ কারণ তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, ইউপিএসসি পাশ করার পরেই গ্রামে পা রাখবেন। তাঁর এই সাফল্যে শুধু পরিবার নয়, উচ্ছ্বসিত  গোটা গ্রাম৷ 

জয়প্রকাশের বাবা কানহাইয়া শাহ কাজের সূত্রে বছরের বেশিরভাগই সময়ই ভিন রাজ্যে থাকেন৷ সেখানে কাঠের শ্রমিক হিসাবে কাজ করেন। বর্তমানে তিনি উত্তরাখণ্ডের নৈনিতাল শহরে আছেন। জয়প্রকাশের মা গায়ত্রী দেবী একজন গৃহবধূ৷ স্বামীর পাশে দাঁড়িয়ে সংসারের হাল ধরতে পরিবারকে সামলানোর পাশাপাশি ক্ষেতে ছাগল চরাতেন তিনি৷  জয়প্রকাশের দুটি ছোট ভাইও আছেন, তাঁরা গ্রামের স্কুলেই পড়াশোনা করছেন। তাঁদের কাছে আদর্শ তাঁদের দাদা৷

 

Around The Web

Trending News

You May like