দুয়ারে নির্বাচন, বেতন বৈষম্যে বিদ্রোহ শিক্ষকদের! মামলা-পথে নামার হুঁশিয়ারি

দুয়ারে নির্বাচন, বেতন বৈষম্যে বিদ্রোহ শিক্ষকদের! মামলা-পথে নামার হুঁশিয়ারি

 

কলকাতা: ভোটের আগে বেতন বৈষম্য নিয়ে বিক্ষোভ শিক্ষক মহলে৷ মাধ্যমিক স্তরে গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য অবিলম্বে দূর করার দাবি উঠেছে৷ এই বৈষম্য না মিটলে  আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছেন গ্র্যাজুয়েট বিভাগের ১ লক্ষ ১০ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা৷ রাজ্যে শিক্ষকদের এই বেতন বৈষম্যের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন প্রায় ১০ হাজার শিক্ষক৷ তাঁদের দাবি পূরণ না হলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে শিক্ষক সংগঠন বৃহত্তর গ্র্যাজুয়েট টিচার’স অ্যাসোসিয়েশন বা বিজিটিএ৷ অন্যদিকে সাংবাদিক বৈঠক করে বেতন বৈষম্যের বিরুদ্ধে সরব হলেন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা৷ আন্দোলনে নামার হুমকি দিলেন স্টেট ফোরাম অফ হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস সংগঠনের প্রতিনিধিরা৷

আরও পড়ুন- হয় চাকরির নয় জেল! শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন, বাধা পুলিশের

বৃহত্তর গ্র্যাজুয়েট টিচার’স অ্যাসোসিয়েশন বা বিজিটিএর রাজ্য সম্পাদক সৌরেন ভট্টাচার্য বলেন, রোপা ২০০৯ এ যে বেসিক পে এবং গ্রেড পে দেওয়া হয়েছিল তা সর্বভারতীয় স্তরের সঙ্গে সাজুয্য যুক্ত নয়৷ অথচ পোস্ট গ্র্যাজুয়েট শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যে বেসিক এবং গ্রেড পে দেওয়া হয়েছিল তার সঙ্গে সর্বভারতীয় স্তরের সাযুজ্য রয়েছে৷ এছাড়াও গ্র্যাজুয়েট এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকদের মধ্যে বেসিক পে’তেও যে বৈষম্য রয়েছে তা অবিলম্বে দূর করতে হবে৷ এই বিষয়ে ২০১৮ সালে মামলা দায়ের করা হয়৷ আদালত তাঁদের দাবিকে মান্যতা দিয়েছে বলেও জানান সৌরেনবাবু৷ 

আবেদনকারীরা রাজ্যের সরকার পোষিত বিভিন্ন হাইস্কুলের মাধ্যমিক স্তরে নিযুক্ত গ্র্যাজুয়েট ক্যাটাগরির শিক্ষক৷ তাঁদের দাবি শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সমগ্র ভারতবর্ষের নিরিখে গ্র্যাজুয়েট ক্যাটাগরির টিচাররা সর্বনিম্ন বেতনের অধিকারী৷ সরকারের কাছে বারবার আবেদন জানিয়ে তাঁরা ব্যর্থ৷ এর পরই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা৷ ২০১৯ সালের জুলাই মাসে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ তার রায়ে জানায়, এই বিভাগের শিক্ষকরা বঞ্চিত৷ তাঁদের যে গ্রেড পে এবং পে স্কেল পাওয়া উচিত ছিল তাঁরা তা পায়নি৷ অবিলম্বে এই বৈষম্য দূর করার জন্য পে কমিশনের চেয়ারম্যানকে তিনি দায়িত্ব দেন৷ রাজ্যের পে কমিশন দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে গত ২৩ সেপ্টেম্বর শুনানির সময় জানায় এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে৷ কোর্টে একটি হলফনামাও জমা দিয়েছে৷ ১৫ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে৷

আরও পড়ুন- ‘ভাতা নয়, চাকরি চাই’! নিয়োগের দাবিতে যুবশ্রীদের বিদ্রোহে উত্তাল রাজধানী

অন্যদিকে প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন স্টেট ফোরাম অফ হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসের তরফে বেতন বৈষম্য নিয়ে সরব প্রাথমিকের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও৷ রাজ্যের ১০ হাজার প্রথামিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা এই বেতন বৈষম্যের শিকার৷ গত ১০ বছর ধরে একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে৷ কিন্তু কোনও লাভ হয়নি৷ এদিন প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য সরকারকে হুঁশিয়ারি দেয়৷ তাঁরা জানায়, আগামী এক মাসের মধ্যে রাজ্য সরকার যদি তাঁদের দাবিদাবা না মানা হলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *