পাঁচ বছরেও মেলেনি নিয়োগ, মৃত্যুর কোলে হবু স্কুল শিক্ষিকা

পাঁচ বছরেও মেলেনি নিয়োগ, মৃত্যুর কোলে হবু স্কুল শিক্ষিকা

কলকাতা:  পাঁচ বছর আগে মেধা তালিকায় নাম উঠেছিল তাঁর৷ কিন্তু দীর্ঘ অপেক্ষার পরেও স্কুলের চাকরিটা জোটেনি৷ চাকরি করার স্বপ্ন পূরণের আগেই চিরবিদায় নিলেন মিঠু মণ্ডল৷ নিয়োগের দাবিতে ধর্মতলায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসেছে নবম-দ্বাদশ স্তরের মেধাতালিকাভুক্ত বঞ্চিত চাকুরিপ্রার্থীরা৷ ১১৪ দিনের ধর্না অবস্থানের পর গত ১৯ দিন ধরে চলছে নির্জলা উপবাস। অনশনের ফলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন  চাকরিপ্রার্থীরা৷ দফায় দফায় তাঁদের এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মালদা জেলার বাসিন্দা একাদশ-দ্বাদশ স্তরের মেধাতালিকাভুক্ত প্রার্থী মিঠু মণ্ডলও৷ শুক্রবার মানসিক অবসাদ থেকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মার যান তিনি। চাকরি প্রার্থীদের অভিযোগ, যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করে অযোগ্য ও মেধাতালিকা বহির্ভূত প্রার্থীদের নিয়োগ করেছে  স্কুল সার্ভিস কমিশন৷ চরম নিয়োগ দুর্নীতিই মিঠুর মৃত্যুর জন্য দায়ী। 

আরও পড়ুন- গ্রুপ সি মামলার তদন্তভার রঞ্জিত কুমার বাগের কমিটিকে দিল হাই কোর্ট

মিঠুর মৃত্যুর পর আরও একবার প্রকাশ্যে নবম থেকে দ্বাদশের শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি৷ মালদহের আকন্দবাড়িয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের রামনগরের বাসিন্দা ছিলেন মিঠু৷ বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন বছর উনত্রিশের ওই চাকরি প্রার্থী৷ তাঁর দিদি শম্পা মণ্ডল বলেন, ‘‘মিঠু গত দুই মাস ধরে অসুস্থ ছিল৷ শুক্রবার দুপুরে হার্টফেল করে৷’’ মিঠুর বাবা ছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক৷ ছয় ভাইবোনের মধ্যে মিঠুই ছিলেন সবচেয়ে ছোট৷ চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, দীর্ঘদিন চাকরি না পেয়ে হতাশা থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন মিঠু৷ 

 ধর্নায় অংশ নেওয়া সোয়াজ্জেম হোসেন নামে এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘মিঠু রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একাদশ-দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থী ছিলেন৷ ১৬ ফেব্রুয়ারি আমাদের ধর্না মঞ্চেও এসেছিলেন৷ কয়েক দিন এখানে ছিলেনও৷ চাকরি না পেয়ে খুবই উদ্বেগে ভুগছিলেন৷  দু’দিন আগে যখন মিঠুর সঙ্গে ফোনে কথা হয়, তখনও তাঁর গলায় ছিল চাকরি না পাওয়ার হতাশা৷ এদিকে, স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, ‘‘নবম-দ্বাদশের নিয়োগের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন৷ মামলা চলছে৷ চাকরিপ্রার্থীদের প্রতি আমকা সহানুভূতিশীল৷’

প্রথম দফায় ডাক পাওয়া সত্ত্বেও স্কুল সার্ভিস কমিশন নম্বর ভিত্তিক মেধাতালিকা প্রকাশ না করে ১:১.৪ অনুপাতে নিয়োগের গেজেটকে লঙ্ঘন করে৷ ফলে মেধাতালিকার সামনের দিকে থাকা চাকরি প্রার্থী হয়েও নিয়োগ পাননি অনেকে৷ অথচ মেধাতালিকার পেছনের দিকে থাকা বহু প্রার্থী এমনকি ফেল করা প্রার্থীদেরও অবৈধভাবে চাকরিতে নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ।