কলকাতা: দীর্ঘ দিন আবেদন-নিবেদন-আন্দোলনেও চাকরি জোটেনি ২০১৪ সালের আপার প্রাইমারি প্রার্থীদের৷ পরীক্ষায় পাশ করলেও নিয়োগ নিয়ে বারবার গড়িমসি করেছে রাজ্য সরকার৷ মঙ্গলবার নিয়োগের দাবিতে ফের পথে নামলেন বিক্ষোভরত আপার প্রাইমারি চাকরি প্রার্থীরা৷ এদিন করুণময়ীর এসএসসি অফিসের সামনে থেকে বিকাশভবন পর্যন্ত অভিযানের ডাক দিয়েছিল আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চ৷ তাঁরা ডেপুটেশন জমা দেওয়ার আর্জিও জানিয়েছিল৷ কিন্তু পুলিশ তাঁদের অনুমতি দেয়নি৷ তবে পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে বিকাশভবনের দিকে এগিয়ে চলে চাকরি প্রার্থীদের মিছিল৷ তাঁদের পথ আটকায় পুলিশ৷
আরও পড়ুন- গৃহীত হল না ডেপুটেশন, কালীঘাট থেকে খালি হাতেই ফিরলেন প্রাথমিকের চাকরি প্রার্থীরা
এদিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রার্থীরা এই অভিযানে সামিল হতে সল্টলেক পৌঁছয়৷ ইন্টারভিউ দেওয়া সকল আপার প্রাইমারী চাকরিপ্রার্থীর নিয়োগের দাবিতেই এই আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এদিন দেখা যায় করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ডের কাছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল পুলিশ৷ বাস বা রিক্সা থেকে সন্দেহভাজন কাউকে নামতে দেখলেই তাঁদের সোজা তোলা হয় পুলিশ ভ্যানে৷ দীর্ঘ সাত বছর ধরে বঞ্চনার শিকার টেট পরীক্ষায় পাশ করা আপার প্রাইমারির এই প্রার্থীরা৷ এদিন আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চ জানায়, ‘‘সাত বছর ধরে নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকারের টালবাহানা আর সহ্য করা হবে না৷ প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও প্রার্থীরা নিয়োগপত্র হাতে পাননি৷ ফলে আর প্রতিশ্রুতি নয়৷ সমাধান চেয়েই আন্দোলনে নেমেছি৷’’
এদিন করুণাময়ীতে দেখা যায় পুলিশের জল কামানও৷ আপার প্রাইমারির প্রার্থীরা মিছিল করে বিকাশ ভবনের দিকে এগোতে শুরু করলে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়৷ অনেক প্রার্থীকে তুলে বিধাননগর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও খবর৷ তবে চাকরি প্রার্থীরাও অনড়৷ তাঁদের সাফ বক্তব্য, মেরিট লিস্ট প্রকাশিত হলেও কাউন্সিলিংয়ের নোটিশ দেওয়া নিয়ে টালবাহানা চলছে৷ অবিলম্বে কাউন্সিলিংয়ের নোটিশ দিতে হবে রাজ্য সরকারকে৷ আজকের মধ্যে কাউন্সিলিংয়ের নোটিশ দেওয়া না হলে আমরণ অনশনে বসবেন তাঁরা৷
আরও পড়ুন- করোনাকালে লাইফ সার্টিফিকেট জমা দেওযার সময়সীমা আরও বাড়াল সরকার
আন্দোলনে সামিল এক প্রার্থী বলেন, ২০১৪ সালে যে প্রাইমারি পরীক্ষা হয়েছিল, তাতে সরকার বলেছিল ৪২ হাজার শিক্ষক করা হয়েছে৷ ২০২০ সালে আরও সাড়ে ১৬ হাজার প্রার্থী নিয়োগের ঘোষণা করা হল৷ অথচ আমাদের নিয়োগ করা হল না৷ ক্ষোভে ফেটে পড়া এই প্রার্থীদের বক্তব্য, ‘‘যত খুশি পুলিশ এনে আমাদের গ্রেফতার করা হোক৷ প্রত্যেকে জেলে যেতে প্রস্তুত৷ কেউ ঘরে ফিরবে না৷’’ তাঁদের দাবি, আজই ফয়সলা করতে হবে৷ না হলে তাঁদের জেলে ভরা হোক৷ এইভাবে বেকারত্বের জ্বালা সহ্য করার চেয়ে জেলে থাকা ভালো৷ হয় চাকরি নয় জেল৷ এই দাবিতেই সোচ্চার হয়েছেন তাঁরা৷ দীর্ঘদিন ধরে ১৯,৩৪০ শিক্ষক পদে নিয়োগ আটকে রয়েছে আইনি জটিলতায়৷ দ্রুত রায়দান এবং আপডেট ভ্যাক্যান্সিতে শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানাচ্ছেন চাকরি প্রার্থীরা।