কলকাতা: প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের দাবি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন চলছে রাজ্যে৷ নিয়োগের দাবিতে আবারও পথে নামলেন চাকরি প্রার্থীরা৷ পরীক্ষায় পাশ করার পরেও চাকরি থেকে বঞ্চিত তাঁরা৷ সেই ক্ষোভ জানিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর দরবারে ডেপুটেশন জমা দিতে গিয়েছিলেন তাঁরা৷ কিন্তু ফিরতে হল খালি হাতে৷ দ্রুত নিয়োগের দাবিতে শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে ডেপুটেশন দিতে গিয়েছিলেন ২০১৬ সালের এসএলএসটি নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ওয়েটিং চাকরি প্রার্থীরা৷ কিন্তু অভিযোগ, মিলন সঙ্ঘ ক্লাবের সামনে থেকেই তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়৷ সেখান থেকে তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় জনতার দরবারে৷ সেখানে গিয়েও খাতি হাতে ফিরতে হয়৷ জমা নেওয়া হয়নি খাম বন্দি স্মারকলিপি৷
আরও পড়ুন- করোনাকালে লাইফ সার্টিফিকেট জমা দেওযার সময়সীমা আরও বাড়াল সরকার
এক চাকরি প্রার্থী বলেন, ‘‘কালীঘাটে পৌঁছনোর পর আমাদের জনতার দরবারে পাঠানো হয়৷ কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর বিষয়টি দেখেই আমাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়৷’’ নিয়োগের দাবিতে ২০১৯ সালের মার্চ মাসে প্রেস ক্লাবের সামনে অনশনে বসেছিলেন চাকরি প্রার্থীরা৷ সেই সময় অনশন মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাঁদের অবিলম্বে চাকরিতে নিয়োগ করা হবে৷ কিন্তু এক বছর কেটে গেলেও সমস্যার সমাধান হয়নি৷ দীর্ঘ লড়াইয়ের পরও তাঁরা বঞ্চিত৷
অন্যদিকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সামনে নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান ২০১৪ সালে প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ ১৩০ জন চাকরি প্রার্থী৷ বিক্ষোভরত এক চাকরি প্রার্থী বলেন, আমাদের নিয়োগের জন্য ১৩০টি শূন্যপদ পাওয়া যাচ্ছে না৷ অথচ সাড়ে ১৬ হাজার শূন্যপদ কী ভাবে হল? তাঁদের কথায়, তাঁরা সকলেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত৷ এই ১৩০ জন প্রার্থীকে বঞ্চিত করে কী ভাবে সাড়ে ষোল হাজার প্রার্থীকে নিয়োগ করা হচ্ছে, সেই জবাব পর্ষদ সভাপতিকে দিতে হবে৷
আরও পড়ুন- কেন থেমে আপার প্রাইমারি নিয়োগ? ফের বিকাশ ভবন অভিযান
প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগেই টেট উত্তীর্ণদের মধ্যে ১৬ হাজার ৫০০ জনকে আগামী দু’ মাসের মধ্যে চাকরিতে নিয়োগ করার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের এই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন ২০১৪ সালের কিছু টেট পরীক্ষার্থী৷ মামলাকারীদের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত বলেন, টেট পাশ করার পরও তাঁদের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছিল না৷ আদালত জানিয়েছে এটা অন্যায়৷ তাঁদেরও নতুনদের সঙ্গে পরীক্ষায় বসার সুযোগ দিতে হবে৷ কিন্তু প্রশ্ন হল, যে সরকার সাত বছরে ১৩০ জন প্রার্থীকে নিয়োগ করতে পারেনি, সেই সরকার কী ভাবে ২ মাসের মধ্যে সাড়ে ষোল হাজার প্রার্থীকে নিয়োগ করবে? রাজ্যজুড়ে চলা এই ক্ষোভ প্রশমনেই কি বিজ্ঞপ্তি? উঠছে প্রশ্ন৷