কলকাতা: নতুন করে আর মামলা নয়৷ উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আপাতত ডিভিশন বেঞ্চে যাচ্ছে না রাজ্য সরকার৷ উচ্চ প্রাথমিকের রায় নিয়ে পরবর্তী ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ করা হবে, সোমবার সেই বিষয়ে আলোচনা করতেই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন রাজ্য স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর আধিকারিকরা৷ পরামর্শ নেওয়া হয় আইনজীবীদেরও৷ এর পরেই ডিভিশন বেঞ্চে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ জানা গিয়েছে, এই রায়ের বিরুদ্ধে কোনও রকম আপিল করবে না কমিশন৷ ফলে আপাতত স্বস্তিতে চাকরি প্রার্থীরা৷
আরও পড়ুন- IIT-র দরজা খুলতেই করোনা সংক্রমণ, আক্রান্ত ৬৬ পড়ুয়া!
হাইকোর্টের রায়কে মান্যতা দিয়ে আগামী ৪ জানুয়ারি থেকে ভেরিফিকেশনের কাজ শুরু করতে চলেছে এসএসসি। জানা গিয়েছে, সোমবারের বৈঠকে ঠিক হয়েছে আপাতত ভেরিফিকেশন পর্ব শুরু করবে এসএসসি। পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। রাজ্য চায় দ্রুত উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হোক৷ ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করলে এই প্রক্রিয়া আরও বিলম্বিত হবে। তাই সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়কেই মান্যতা দিয়েছে রাজ্য সরকার। ২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগেই রাজ্য সরকার উচ্চপ্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে চাইছে বলে সূত্রের খবর৷
শুক্রবার এক ঐতিহাসিক রায়ে আপার প্রাইমারিতে ১৪ হাজারেরও বেশি শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া খারিজ করে দেন বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের সিঙ্গল বেঞ্চ৷ নিয়োগে অস্বচ্ছতা আর বেনিয়মের অভিযোগকে মান্যতা দেন তিনি৷ ফলে প্যানেল থেকে শুরু করে মেরিট লিস্ট সবই বাতিল হয়ে যায়৷ সেই সঙ্গে দ্রুত নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশও দেন তিনি৷ সেই নির্দেশ মতোই আগামী ৪ জানুয়ারির মধ্যে কাউন্সেলিং, ডকুমেন্ট জমা নেওয়ার কাজ শুরু করে দিতে হবে রাজ্যকে৷ এপ্রিল মাসের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত৷ ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে চূড়ান্ত মেধাতালিকা প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে সিঙ্গল বেঞ্চ৷ সর্বোপরী আদালতের নির্দেশে ২০২১-এর ১০ মে’র মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে৷ করোনা আবহে কমিশন ভার্চুয়াল প্রক্রিয়ার উপর জোড় দিতে পারে বলেও জানিয়েছে আদালত৷
আরও পড়ুন- প্রকাশিত UGC NET ২০২০-র ই-সার্টিফিকেট, পাওয়া যাবে অফিশিয়াল ওয়েবসাইটেই
এই মামলায় হাইকোর্ট জানিয়েছিল, উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের মূল নিয়মগুলিই মানা হয়নি৷ ২০১৬ সালে কমিশন যে মেরিট লিস্ট প্রকাশ করেছে তাতে অস্বচ্ছ্বতা রয়েছে৷ প্যানেলে একাধিক দুর্নীতি হয়েছে বলেও আদালতের পর্যবেক্ষণ৷ যে সকল অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীদের নেওয়া হয়েছিল, তাঁদের বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ প্রকৃত যোগ্যরা সুবিচার পায়নি বলেই অভিযোগ তুলেছিল হাজার হাজার মামলাকারী৷ প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের টেট নিয়ে প্রায় ২০০০ পৃথক মামলা দায়ের হয়েছিল আদালতে৷