সিভিল সার্ভিসে দেশের দ্বিতীয় কলকাতার অঙ্কিতা, শোনালেন উত্তরণের কাহিনী

সিভিল সার্ভিসে দেশের দ্বিতীয় কলকাতার অঙ্কিতা, শোনালেন উত্তরণের কাহিনী

কলকাতা: ইউপিএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে সোমবার৷ এই বছরের মেধা তালিকায় রয়েছে বিশেষ চমক৷ কারণ, ২০২১ সালে হওয়া সর্বভারতীয় পরীক্ষায় প্রথম চারজনই নারী৷ তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কলকাতার মেয়ে অঙ্কিতা আগরওয়াল৷ তৃতীয় বারের চেষ্টায় সফল লেকটাউনের মেয়ে৷  

আরও পড়ুন- আচমকা পিছল কলেজে শিক্ষক নিয়োগের ইন্টারভিউ, নেপথ্যে মন্ত্রী-কন্যা? বাড়ছে জল্পনা

কলকাতায় রুবি পার্কের কাছে এক বেসরকারি স্কুলে পড়াশোনা তাঁর৷ স্কুলের পাঠ শেষ করে পাড়ি দেন দিল্লি৷ সেখানে দিল্লি বিশ্বিদ্যালয়ের সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক। রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ছিল তাঁর ঐচ্ছিক বিষয়৷ স্নাতক পাশ করার পর অঙ্কিতা যোগ দেন কর্পোরেট সংস্থার চাকরিতে৷ সেখানে ছিল মোটা বেতনের চাকরি সত্বেও দেশের জন্য কাজ করার তাগিদ অনুভব করেছেন মনের ভিতরে।  কর্পোরেট সংস্থায় কাজ করতে করতেই শুরু করেন সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি৷

২০১৯ সালে প্রথমবার বসেন ইউপিএসসি পরীক্ষায়৷ কিন্তু সফল হতে পারেননি৷ এর পরেই আসে ইন্ডিয়ান রেভিনিউ অফিসার হিসাবে কাজ করার সুযোগ৷ ছাড়েন কর্পোরেট সংস্থার চাকরি৷ সোমবার যখন সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয় তখন তিনি ছিলেন ফরিদাবাদে ন্যাশানাল আকাদেমি অফ কাস্টমসে ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্য়ান্ড নারকোটিকসে৷ আইআরএস চাকরির ট্রেনিংয়ের জন্যই আপাতত ফরিদাবাদে রয়েছেন অঙ্কিতা৷ এরই মধ্যে ২০২১ সালে ফের ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসেন৷ অবশেষে আইএএস হওয়ার স্বপ্নপূরণ৷

সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, কেউ সিভিল সার্ভেন্ট হতে চাইসে তাঁর লক্ষ্যটা সবার আগে স্থির থাকতে হবে৷  কারণ কঠিন দিন গুলিতে এই লক্ষ্যই তাঁকে এগিয়ে নিয়ে যাবে৷ ধারাবাহিকতাই সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি৷ তাঁর কথায়, ‘‘এবার মেয়েদের রেজাল্ট উল্লেখযোগ্য৷ একই সঙ্গে এটা সম্মান ও গর্বের বিষয়৷’’ 

পরীক্ষায় সফল হওয়ার জন্য কঠিন অধ্যাবসায় তো ছিলই, মন স্থির রাখতে ছেড়েছিলেন  সোশ্যাল মিডিয়ার সমস্ত প্ল্যাটফর্ম৷ কারণ এগুলো বড্ড মনসংযোগ নষ্ট করে৷ প্রথমসারির এক সংবাদমাধ্যমকে অঙ্কিতা বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নতির পাশাপাশি মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করতে চাই। এ ছাড়াও গ্রামোন্নয়নে জন্য কাজ করার ইচ্ছাও রয়েছে। আমি বাংলার ক্যাডার। কাজ করার জন্য বাংলাকেই বেছে নেওয়ার চেষ্টা করব।’’

বছর পাঁচেকের এই প্রস্তুতি পর্বে বাড়িতে পড়াশোনার পাশাপাশি ভর্তি হয়েছিলেন কোচিং সেন্টারেও। দিনে কখনও ছয় ঘণ্টা, তো কখনও ১২ ঘণ্টা পড়াশোনা করেছেন৷ তবে এটা ছিল নিয়মিত। অঙ্কিতার কথায়, এখানে এক শতাংশও ফাঁকিরও জায়গা নেই৷ আগামী দিনের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার্থীদের জন্য তাঁর পরামর্শ,  নিজের লক্ষ্যে অবিচল থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে৷ তাঁর কথায়, ‘‘পড়াশোনায় ধৈর্য্য হারালে চলবে না। নিজের উপর ভরসা রাখতে হবে৷ সিভিল সার্ভিসে আসার কারণকেই অনুপ্রেরণা হিসাবে কাজে লাগাতে হবে।’’