কলকাতা: স্কুল সার্ভিস কমিশনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় মেধাতালিকাভুক্ত অথচ দুর্নীতির কারণে বঞ্চিত হবু শিক্ষক পদপ্রার্থীদের আন্দোলন ২০১৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৩ দফা মিলে মোট ৪০০ দিন পূর্ণ করল মঙ্গলবার। তারা প্রথম দফায় ২০১৯ সালে প্রেস ক্লাবের সামনে ২৯ দিন; দ্বিতীয় দফায় ২০২১ সালে সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কের ৫ নং গেটের কাছে ১৮৭ দিন; তৃতীয় দফায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ১৮৪ দিন যাবৎ অবস্থান বিক্ষোভ ও অনশন চালিয়ে যাচ্ছে ন্যায্য চাকরির দাবিতে।
আরও পড়ুন- ২০১৬-র পর হয়নি পরীক্ষা, কবে হবে জানা নেই, দুর্নীতির কাঁটায় বিদ্ধ এসএসসি
স্কুল সার্ভিস কমিশন মেধা তালিকায় থাকা শিক্ষক পদপ্রার্থীদের নিয়োগ না দিয়ে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ করে গোপনে অবৈধ নিয়োগ দিয়ে চলেছে, যা শুধু আন্দোলনকারীদের বক্তব্য নয়, কলকাতা উচ্চ আদালতে যা বারবার প্রমাণিত হয়েছে। নম্বর ভিত্তিক মেধাতালিকা না প্রকাশ; গেজেটকে লঙ্খন করে ১:১.৪ রেশিও না মেনে নিয়োগ; এসএমএসে অবৈধ নিয়োগ; সামনের সারির ব্যক্তিকে বঞ্চিত রেখে মেধাতালিকায় পেছনের সারির প্রার্থীকে নিয়োগ, এমনকি অকৃতকার্য প্রার্থীদের চাকরিতে নিয়োগ দুর্নীতির প্রতিবাদে সম্পুর্ণ অরাজনৈতিক ভাবে ৩ দফায় চলছে তাদের এই দীর্ঘ আন্দোলন।
বঞ্চিত মেধাতালিকাভুক্ত আন্দোলনকারী শিক্ষক পদপ্রার্থীগণ জানিয়েছেন, প্রথম দফায় ডাক পেয়েও মেধাতালিকাভুক্ত বঞ্চিতরা ন্যায্য চাকরির দাবিতে ৪০০ দিন ধরে ধর্না অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছে আর অকৃতকার্যরা পরীক্ষায় পাশ না করেও চাকরি করছে এর থেকে লজ্জার কিছু হয় না। বঞ্চিত মেধাতালিকাভুক্তদের ন্যায্য চাকরির দাবিতে উচ্চ আদালতের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবিও ফের একবার জানিয়েছে তারা। দুর্নীতি হয়েছে এটা জানার পরও উনি যেন নীরব না থেকে বঞ্চিত মেধাতালিকাভুক্তদের প্রতি সুবিচার করেন, এই অনুরোধ তাদের সকলের। পাশাপাশি এও জানান হয়েছে, সোমা দাসের লড়াই আগামীতেও সবার অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। আসলে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের মেধা তালিকায় নাম ছিল সোমার। কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতির যে অভিযোগ তাতেই তিনি আর চাকরি পাননি। এদিকে তিনি মারণ রোগ ক্যানসারে আক্রান্ত। তাঁর পাশে দাঁড়ানোর জন্য রাজ্যকে পরামর্শও দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
সম্প্রতি আদালতে গ্রুপ ডি মামলায় রিপোর্ট পেশ করেছে বিচারপতি বাগের অনুসন্ধান কমিটি। সেখানে জানান হয়েছে, ৬০৯ টি ভুয়ো সুপারিশ পত্র দেওয়া হয়েছিল। নিয়ম অনুসারে, সুপারিশ পত্রের হিসাব রাখার জন্য আলাদা রেজিস্ট্রার ছিল। কিন্তু চেয়ারম্যানকে না জানিয়েই এই সুপারিশ পত্র দেওয়া হত। এই নিয়োগপত্র গুলি পর্ষদের অফিস থেকে না দিয়ে এসএসসির নবনির্মিত ভবন থেকে দেওয়া হয়েছে। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর আরও অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন- সময়মতো শিক্ষিকাকে চাকরিতে যোগদানে বাধা, পদ গেল প্রধান শিক্ষকের