গতে বাঁধা কোচিং নয়, বাড়িতে পড়েই UPSC-তে সফল, তাক লাগালেন নদিয়ার দিয়া

গতে বাঁধা কোচিং নয়, বাড়িতে পড়েই UPSC-তে সফল, তাক লাগালেন নদিয়ার দিয়া

কলকাতা: মনের অদম্য জেদ আর অধ্যাবসায়ের জোরেই যে সফল্য ছিনিয়ে আনা যায় তা আরও একবার প্রমাণিত৷ ইউপিএসসি পরীক্ষায় ৬১২ ব়্যাঙ্ক পেয়ে সাফল্যের নতুন অধ্যায় লিখলেন নদিয়ার তেহট্টের মেয়ে দিয়া গোলগার৷ গতানুগতিক ভাবে কোনও কোচিং সেন্টার বা ছকে বাঁধা পড়াশোনা নয়, বরং মনের জেদ আর আত্নবিশ্বাসে ভর করে এগিয়ে গিয়েছেন দিয়া৷ 

আরও পড়ুন- সোমার চাকরিতে খুশি, অন্য লড়াই চালাচ্ছেন ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত অনুপ 

বাবা অজিত গোলদারের আদি বাড়ি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের প্রত্যন্ত বেতাই গ্রামে৷ পেশায় ডব্লুবিসিএস অফিসার অজিতবাবুকে কর্মসূত্রে জেলায় জেলায় ঘুরতে হয়৷ আপাতত তাঁর ঠিকানা বেহালা৷ বাবাকে দেখেই ছোট থেকে আমলা হওয়ার ইচ্ছা উঁকি দিয়েছিল দিয়ার মনে৷ সেই মতোই নিজেকে গড়ে তোলা শ৷ 

খড়গপুর আইআইটি-র ছাত্রী দিয়া লকডাউনের সময় থেকেই ঠিক করে ফেলেন ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসবেন৷ সেই মতো শুরু হয় প্রস্তুতি৷ অজিতবাবু বলেন, ‘‘লকডাউনের সময়েই দিয়া সিদ্ধান্ত নেয়, অযথা বাড়িতে বসে না থেকে ইউপিএসসি’র জন্য প্রস্তুতি নেবে৷ মেয়ের ইচ্ছাকে সমর্থন জানিয়ে আমি ও আমার স্ত্রী ওকে সবরকম সহযোগিতা করেছি৷ ওকে উৎসাহ দিয়ে এসেছি৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কোনও কোচিং ছাড়াই মেয়ে এত ভালো ফল করতে ভাবতে পারিনি৷’’

অজিত ও শান্তা গোলদারের দুই সন্তান৷ দিয়াই বড়৷ মেয়ের সাফল্যে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত মা শান্তা গোলদার৷ তাঁর কথায়, ‘‘স্বামীর কর্মসূত্রে আমাদের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে হয়েছে৷ বাড়ি প্রত্যন্ত গ্রামে হলেও, দিয়ার জন্ম কৃষ্ণনগরে৷ সেখানেই পড়াশোনার পাঠ শুরু৷ তার পর শিলিগুড়ি৷ পরে কলকাতা৷ কোচিং ছাড়া নিজের চেষ্টায় ও যে এত ভালো ফল করেছে, তাতে আমরা খুবই খুশি৷’’  

দিয়া জানান, নিজের মতো করে নোট তৈরি করে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তিনি৷ প্রাক্তন টপারদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে, নেট ঘেঁটে সেরেছেন প্রস্তুতি৷ তাঁর কথায়, ‘‘চলতি বছর ৭ জানুয়ারি ৫ লক্ষ ৫০ হাজার পরীক্ষার্থীর সঙ্গে আমিও পরীক্ষায় বসি৷ এপ্রিল মাসে ভাইবার জন্য ডাক পাই৷ ৩০ মে ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর জানতে পারি ৬১২ ব়্যাঙ্ক করেছি৷’’

দিয়ার এই সাফল্যে খুশির হাওয়া তাঁদের পৈতৃক গ্রামেও৷ ভাইঝির সাফল্যে দারুণ খুশি কাকা অরবিন্দ গোলদার৷ প্রতিবেশী, পরিজনদের মধ্যে শুরু হয়েছে মিষ্টি বিলি৷ দিয়ার সাফল্যে উচ্ছ্বসিত গ্রামবাসীরাও৷ বড় অফিসার হয়ে তাঁদের গ্রামের মেয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে, এটাই আশা তাঁদের৷