হোমিওপ্যাথির সঙ্গে মাদার টিংচার, রুখে দিচ্ছে প্রিডায়াবেটিকদের সুগার, সাড়া ফেললেন ৩ বাঙালি চিকিৎসক

হোমিওপ্যাথির সঙ্গে মাদার টিংচার, রুখে দিচ্ছে প্রিডায়াবেটিকদের সুগার, সাড়া ফেললেন ৩ বাঙালি চিকিৎসক

কলকাতা:  বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই বাসা বাঁধে মধুমেহ রোগ৷ এ রাজ্যে কমবেশি ১৫ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্কের ডায়াবেটিসের শিকার৷ আর যাঁদের সুগার ধরবে ধরবে করছে চিকিৎসা পরিভাষায় তাঁদের বলা হয় প্রি-ডায়াবেটিক৷  সেই সংখ্যা জানেন কত? পরিসংখ্যান বলছেন, ডায়াবেটিস আক্রান্তদের থেকে এই সংখ্যাটা অনেকটাই বেশি৷ প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার প্রায় ২৩ শতাংশ প্রি-ডায়াবেটিকে আক্রান্ত। যা প্রায় দেড় কোটি মানুষ। 

আরও পড়ুন- বদহজম না হার্টের সমস্যা বুঝবেন কীভাবে? উপায় রয়েছে অনেক

এই প্রি-ডায়াবেটিকদের চিকিৎসার ক্ষেত্রেই এক যুগান্তকারী গবেষণা আলোড়ন ফেলেছে। বলা হচ্ছে, হোমিওপ্যাথিক ওষুধের সঙ্গে মাদার টিংচারের ব্যবহার প্রি-ডায়াবেটিকদের ডায়াবেটিস রুখতে অত্যন্ত কার্যকর। সম্প্রতি এমনই দাবি করেছেন তিন বাঙালি চিকিৎসক ও গবেষক।    

পাবমেড নথিভুক্ত গবেষণা পত্রিকা ‘জার্নাল অব ইন্ডিগ্রেটেড অ্যান্ড কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিন’-এ এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। এই তিনজনের মধ্যে দু’জন হোমিওপ্যাথ ও একজন গবেষক। তাঁরা হলেন ডি এন দে হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক শুভময় ঘোষ৷ ওই কলেজেরই  সহকারী অধ্যাপক ডাঃ শুভ্রনীল সাহা এবং সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ডঃ ভার্গব চট্টোপাধ্যায়।
 

এই ত্রয়ীর কথায়, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা  ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়। প্রি-ডায়াবেটিকদের ক্ষেত্রেও তেমনটাই। নেট্রাম মুর, সালফার, লাইকোপোডিয়াম, পালসেটিলা, ক্যালকেরিয়া হার্ব রোগীভেদে এইসব ওষুধের সঙ্গে যদি সেফল্যান্ডা ইন্ডিকা (তেলাকুচা গাছের নির্যাস),  সিজিজিয়াম জাম্বোলেনামের (জাম গাছের নির্যাস), জিমনেমা সিলভেসট্রার (গুলমার গাছের নির্যাস)-র মতো কয়েকটি মাদার টিংচার ব্যবহার করা যায়, তাহলে দারুণ ফলাফল মিলবে৷  

কিন্তু প্রশ্ন হল কারা প্রি-ডায়াবেটিক? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু বলছে, যাঁদের ফাস্টিং ১১১-১২৬, পিপি ১৪০-২০০ এবং গ্লাইকোলেটেড হিমোগ্লোবিন বা এইচবিএওয়ানসি ৫.৬-৬.৫,  তাঁদেরকেই প্রি-ডায়াবেটিক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। গত তিন বছর ধরে এই গবেষণা চালিয়েছেন তিন বাঙালি চিকিৎসক৷ ২ হাজার ২৫৩ জনকে নির্বাচিত করার পর তাঁদের একাধিক প্রশ্ন ও স্কোর বিশ্লেষণ করা হয়। তাঁদের রক্তপরীক্ষা করার পর ৮৯ জনকে গবেষণার জন্য বেছে নেওয়া হয়৷ 

তাঁদের দু’টি ভাগে ভাগ করে চলে গবেষণার কাজ। একটি দলে ছিল ৪৫ জন। অন্যটিতে ৪৪ জন। একটি গ্রুপের রোগীদের উপসর্গ বিভেদে শুধুমাত্র হোমিওপ্যাথিক ওষুধ দেওয়া হয়। অপর গ্রুপের রোগীদের হোমিওপ্যাথিক ওষুধের সঙ্গে দেওয়া হয় তিন রকমের মাদার টিংচার। ডাঃ শুভময় বলেন, দেখা গিয়েছে শুধুমাত্র হোমিওপ্যাথিক ওষুধ যত না কাজ করেছে  মাদার টিংচার যোগে চিকিৎসা করলে প্রি-ডায়াবেটিকদের সুগারের মাত্রা অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণে থাকছে।