মোদীর বক্তৃতা লেখেন কে? রাজনীতি থেকে কূটনৈতিক ভাষণ, সবের নেপথ্যেই বহু পর্ব

মোদীর বক্তৃতা লেখেন কে? রাজনীতি থেকে কূটনৈতিক ভাষণ, সবের নেপথ্যেই বহু পর্ব

নয়াদিল্লি:  তিনি বরাবরই বাগ্মী হিসাবে পরিচিত। কথায় বুননে তাবড় তাবড় রাজনীতিবিদদের হার মানায়। স্থান-কাল ভেদে বারবার তাঁর বক্তৃতার ধাঁচে বদল পরিলক্ষিত হয়েছে। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় তিনি যে ভাবে বলতেন,  প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার পর তা সম্পূর্ণ পাল্টে গিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হয়ে কে বা কারা এই সব বক্তৃতা লেখেন? এই নিয়ে কৌতূহল অন্তহীন৷ তবে এ বিষয়ে কখনও কোনও সদুত্তর দেয়ন বিজেপি৷ 

আরও পড়ুন- তৃণমূল মুখপাত্রকে এবার গ্রেফতার করল ইডি! কী কারণ

২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসেন নরেন্দ্র মোদী৷ এই আট বছরে তাঁর বক্তৃতায় অনেক বদল এসেছে। প্রতিদিনই তিনি কোথাও না কোথাও, কোনও না কোনও কর্মসূচিতে ভাষণ দিয়ে থাকেন। প্রশাসনিক বৈঠকেও তাঁকে বক্তব্য রাখতে হয়৷ তবে দলের সাংসদের নিয়ে বৈঠকে তিনি যে ভাবে কথা বলেন, রাজনৈতিক সভায় সে ভাবে বলেন না। কারণ, রাজনৈতিক বক্তৃতা নির্ভর করে কোন  রাজ্যে, কোন পরিস্থিতিতে সভা করছেন, তার উপরে। সেই অনুযায়ী বদলে যায় বক্তৃতার বিষয় এবং ভঙ্গি৷ বক্তৃতা দেওয়ার আগে স্থানীয় রাজনীতি, স্থানীয় সমস্যা, স্থানীয় সংস্কৃতি, ভাষা- এই সব কিছুরই খেয়াল রাখতে হয় তাঁকে।

কিন্তু এতগুলো দিক প্রধানমন্ত্রীর মতো ব্যস্ত মানুষের পক্ষে একা দেখাটা সম্ভবপর নয়। শোনা যায়, মোদীর বক্তৃতা তৈরি করে তাঁর একটি টিম। কিন্তু, কারা রয়েছেন সেই দলে? কত পারিশ্রমিকই বা পান? 

এই সব প্রশ্নের উত্তর পেতে বছর খানেক আগে একটি সংস্থা তথ্য জানার অধিকার আইনে আবেদন করেছিল প্রধানমন্ত্রীর দফতরে। সেই আর্জির বিনিময়ে কোনও সদুত্তর মেলেনি৷ তবে জানানো হয়, কোন ধরনের অনুষ্ঠানের জন্য বক্তব্য রাখবেন নমো, তার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ব্যক্তি, সরকারি কর্তা, দফতর এবং সংস্থা ভাষণ তৈরিতে সাহায্য করে। তবে সকলেই নাকি তথ্য সরবরাহ করে থাকেন। মূল বক্তব্যের চূড়ান্ত রূপ দেন স্বয়ং নমো। তবে এই বক্তৃতা তৈরির জন্য কত খরচ হয়, তা নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেনি প্রধানমন্ত্রীর দফতর৷ 

দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুও নিজের বক্তৃতা নিয়ে ছিলেন অত্যন্ত সচেতন৷ প্রতিটি ভাষণের জন্য তিনি অনেকটা সময় দিতেন৷ বক্তৃতা নিয়ে সতর্ক ছিলেন ইন্দিরা গান্ধীও। দেশের প্রথম বিজেপি প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীও নাকি ছিলেন একই পথের পথিক৷ তাঁদের বক্তৃতা কারা লিখতেন বা লিখতে সাহায্য করতেন,  সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনও তথ্য না থাকলেও শোনা যায়, বাজপেয়ীর অধিকাংশ বক্তৃতা লেখার পিছনেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন প্রাক্তন সাংবাদিক সুধীন্দ্র কুলকার্নির। সেই সময় তিনি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর দফতরের ‘ডিরেক্টর’ পদে৷  

আমেরিকায় প্রেসিডেন্টের বক্তৃতা লেখার জন্য আলাদাভাব নিয়োগ করার রেওয়াজ রয়েছে। রুজভেল্ট, কেনেডি, নিক্সন, রেগন, ক্লিন্টন, ওবামা থেকে  ট্রাম্প – সকলেরই আলাদা বক্তৃতা লেখক ছিলেন। বাইডেনরও আছেন৷