বিশ্বকাপে ট্র্যাজিক হিরো তিনি! জানেন ব্যক্তি এমবাপে কেমন মানুষ?

বিশ্বকাপে ট্র্যাজিক হিরো তিনি! জানেন ব্যক্তি এমবাপে কেমন মানুষ?

কলকাতা: কাতার বিশ্বকাপ যেন মেসিময়৷ তাঁর ঔজ্জ্বল্যে ঢাকা পড়েছে বাকি সবকিছু৷ তবে রবিবার রাতে কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে আরও এক জাদুকর ফুটবল বিশ্বকে মুগ্ধ করেছেন৷ তিনি কিলিয়ান এমবাপে৷ কিছুক্ষণের জন্য হলেও ২৪ বছরের এই ফরাসি তরুণ প্রায় একাই রুখে দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার দুর্বার গতিকে৷ ফাইনাল ম্যাচে হ্যাট্রিক করে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি গোলের মালিকও হয়েছে তিনি৷ তবে বিশ্বকাপ ছিনিয়ে আনতে পারেননি৷ তাঁই হ্যাট্রিক করেও কাতার বিশ্বকাপের ট্যাজিক নায়ক এমবাপে৷ দিনের শেষ পরাজিত এক সৈনিক৷ 

আরও পড়ুন- ট্রফি দেওয়ার আগে মেসিকে পরানো হল ‘আলখাল্লা’, কী এই জিনিস

এদিন যখন সোনার বুট হাতে তুলে নিচ্ছিলেন, তখন তাঁর মুখ থমথমে৷ পোডিয়ামে ফটো তোলার মাঝে খানিকটা বিমর্ষ মুখেই সোনার বুট হাতে মঞ্চ থেকে সরে যান তিনি৷ অনেক চেষ্টা করেও যে দলকে জেতাতে ব্যর্থ এই নায়ক! 

১৯৯৮ সালে ২০ ডিসেম্বর ফ্রান্সের প্যারিস শহরে জন্ম কিলিয়ান এমবাপের৷ কিন্তু তাঁর বেড়ে ওঠা  প্যারিসের শহরতলি কমিউন বন্ডিতে৷ এমবাপের বাবার নাম উইলফ্রেদ। তিনি ক্যামেরুন থেকে ফ্রান্সে চলে এসেছিলেন৷ মা ফায়জা লামারি ছিলেন আলজেরিয়ান৷ তিনি প্রাক্তন হ্যান্ডবল খেলোয়াড়৷ এমবাপের শৈশব ছিল অত্যন্ত সাদামাটা৷ তবে ছোট থেকেই সঙ্গী ছিল ফুটবল৷ বাবা উইলফ্রেড স্থানীয় ক্লাব এএস বন্ডির কোচ ছিলেন।

২০১৫ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে ফরাসি শিবিরে সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে থিয়েরি অঁরির রেকর্ড ভাঙেন ফরাসি ফুটবল তারকা এমবাপে। ফরাসি শিবিরে প্রথম মরসুমেই তিনি ২৬টি গোল করেন। মাত্র ১৮ বছর বয়সে ফ্রান্সের জাতীয় দলে অভিষেক হয় তাঁর। 

২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপেও খেলেছিলেন এমবাপে৷ তাঁর ঝুলিতে এসেছিল ৪টি গোল৷ সেবার চ্যাম্পিয়ন হয় ফ্রান্স। সে সময় এমবাপে এক উদীয়মান তরুণ ফুটবলার৷ কিন্তু, কাতার পেল পরিণত এমবাপেকে। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর মতো তারকাও মনে করছেন, ‘এমবাপেই ফুটবলের নয়া ভবিষ্যৎ৷’ 

ফুটবল দুনিয়ায় তিনি উজ্জ্বল নক্ষত্র৷ পাশাপাশি প্যারিসের একজন ফ্যাশন আইকন। ফুটবল মাঠের এই তারকা ফ্রান্সের একজন ‘এলিজেবল ব্যাচেলর’ও বটে৷ ফ্যাশনের দুনিয়ায় পা রাখার পরেই তাঁর পরিচিতি বাড়তে থাকে তড়তড়িয়ে। সুইস ঘড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা হুব্লটের আইওয়্যার ব্র্যান্ডের গ্লোবাল অ্যাম্বাসাডর এমবাপে। হাই প্রোফাইল সুন্দরীদের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্কের গুঞ্জন রয়েছে৷ তবে মাঠের বাইরেও তিনি কী ভাবে ‘বল’ কাটাচ্ছেন তা এখনও রহস্যে মোড়া। যদিও কানাঘুষো, তাঁর চেয়ে বয়সে ৪ বছরের বড় মডেল বছর ২৭-এর রোজ বার্ট্রামের সঙ্গে ডেটিং করছেন তিনি। আবার বছরের শুরুতেই একজন ট্রান্স মডেলের সঙ্গে ইয়টে ভ্রমণ করতে দেখা গিয়েছিল এমবাপেকে৷

খুব অল্প বয়সেই দেশের আইকন হয়ে ওঠা এমবাপের সঙ্গে আজও শিকড়ের টান৷ নীতিবোধ অক্ষুন্ন৷ ২০১৮ সালে বিশ্বকাপ জয়ের পর নিজের প্রাপ্য থেকে ৪০০,০০০ পাউন্ড  শিশুদের দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান করেন এমবাপে৷ তাঁর কথায়, ‘আমি মনে করি যারা অসহায় তাদের পাশে থাকাটা জরুরি।’ শহরের সুবিধা থেকে বঞ্চিত যুবকদের জন্য নিজস্ব ফাউন্ডেশনও চালু করেছেন তিনি। এ ছাড়াও অ্যালকোহল, জুয়া ও ফাস্ট ফুডের সঙ্গে যুক্ত কোনও ব্র্যান্ডকে সমর্থন করতে অস্বীকার করেছেন এই ফরাসি ফুটবল তারকা৷