কাবুল: গোটা আফগানিস্তান জুড়ে এখন তালিবানি রাজ৷ এরই মধ্যে ব্যতিক্রম পঞ্জশির৷ উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে নর্দান অ্যালায়েন্সের বিরোধিতার মুখে পড়েছে তালিবান৷ পারস্য শব্দ পঞ্জশিরের বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায় পাঁচটি সিংহ৷ আফগানিস্তানের বুকে দুর্দমনীয় তালিবানেকে একাই রুখেছে পঞ্চ সিংহের এই প্রদেশ৷
আরও পড়ুন- ক্ষমতা দখল করেই ভারতের সঙ্গে আমদানি-রফতানি বন্ধ করল তালিবান
১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ পর্যন্ত আফগানিস্তান শাসন করেছে তালিবান৷ সেই সময়েও পঞ্জশিরে ঢুকতে পারেনি তারা৷ এমনকী এখানে পা রাখতে পারেনি সোভিয়েত ও মার্কিন সেনাও৷ বরাবরই মুক্তাঞ্চল হিসাবে নিজের অস্তিত্ব জাহির করেছে পঞ্জশির৷ ৫১২টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এই প্রদেশ৷ রাজধানী বাজারক৷ জনসংখ্যা ১,৭৩,০০০৷ অবস্থান রাজধানী কাবুল থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার দূরে৷ তালিবানের দখলে গোটা দেশ চলে যাওয়ার পর পঞ্জশিরেই আশ্রয় নিয়েছেন আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা নিজেকে তত্ত্বাবধায়ক রাষ্ট্রপতি দাবি করা আমরুল্লাহ সালে। প্রসঙ্গত, আমুরাল্লাহের জন্ম পঞ্জশির প্রদেশেই৷ তাঁর প্রশিক্ষণও হয়েছে এখানে৷ আর তাঁর নেতৃত্বেই আরও শক্তিশালী হয়েছে প্রতিরোধ৷
কথিত আছে দশম শতাব্দীতে পাঁচ ভাই মিলে এই অঞ্চলে বন্যা প্রতিরোধে সক্ষম হয়েছিল৷ গজনীর সুলতান মাহমুদের জন্য একটি বাঁধ তৈরি করেছিলেন তাঁরা৷ এই এলাকার ভৌগলিক অবস্থান এখানকার মানুষকে সিংহ হৃদয় করে তুলেছে৷ নর্দান অ্যালায়েন্স পুনরুদ্ধারের জন্য গোটা দেশ তাকিয়ে রয়েছে পঞ্জশিরের দিকে৷ তালিবান বিরোধী এই জোটের পতাকা এখনও উড়ছে পঞ্জশিরে৷ তালিবান মোকাবিলায় এই জোট গড়ে উঠেছিল ১৯৯৬ সালে৷ যাদের সমর্থন করেছিল ভারত, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, ইরান ও তুর্কমেনিস্তানের মতো দেশ৷
আরও পড়ুন- ‘চটি ছেড়ে বুট গলানোর সুযোগটুকু পাইনি’, দাবি ‘খালি হাতে’ পালানো গনির
পঞ্জশিরে ঢুকতে না পারলেও এর চারপাশে রয়েছে তালিবানের শক্ত ঘাঁটি৷ আর মার্কিন বাহিনীর আফগান বাহিনীকে যে অত্যাধুনিক অস্ত্রে শক্তিশালী করেছিল, তা এখন তালিবানের দখলে৷ কিন্তু সারা বিশ্ব যথন ভেবেছিল গোটা আফগানিস্তান দখল করবে তালিবান, তখন অন্য ইতিহাস লিখল পঞ্জশির৷