কলকাতা: মন্ত্রিসভার রদবদলের মধ্যেই আচমকা যুব মোর্চা সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিলেন সৌমিত্র খাঁ৷ কারণ দর্শিয়ে নিজের কাঁধে নিলেন বিপর্যের দায়৷ সৌমিত্র বলেন, বিধানসভা ভোটে পরাজয়ের দায় আমারও৷ সে কারণেই যুব মোর্চার পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা দলকে জানিয়েছিলাম৷ তবে নরেন্দ্র মোদীর প্রতি আমরা পূর্ণ আস্থা থাকবে৷ যত দিন বেঁচে থাকব৷ কিন্তু ২০১৯ সালে যে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন, আজ তা বদলে গিয়েছে৷ বিরোধী দলনেতার ভূমিকা নিয়েও প্রকাশ্যে মুখ খুললেন সৌমিত্র৷
আরও পড়ুন- হঠাৎ পদত্যাগ সৌমিত্রের! ছেড়ে দিলেন বিজেপি যুব সভাপতির জায়গা
এদিন ফেসবুল লাইভে এসে বিষ্ণুপুরের সাংসদ বলেন, যে ভাবে একজন নতুন নেতা এসে বলছেন তাঁর নেতৃত্বে সবকিছু হচ্ছে, সেটা ভেবে দুঃখ লাগছে৷ এলাকায় না ঢুকে বিষ্ণপুরে জিতেছিলাম৷ যুব মোর্চার পদে দায়িত্ব নিয়ে লড়াই করেছি৷ দল যা বলেছে করেছি৷ কিন্তু এখন বিধানসভার যে দলনেতা হয়েছেন, তিনি নিজেকে জাহির করছেন, দলকে নয়৷ বর্তমান যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে যুব মোর্চাকে চালানো সম্ভব ছিল না৷ সৌমিত্রর কথায়, আমরা সকলকে নিয়ে লড়াই করেছি৷ এখন সম্পূর্ণ ফোকাস একটা জায়গায় চলে গিয়েছে৷ নরেন্দ্র মোদী, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে দেখে ভারতীয় জনতা পার্টিতে এসেছিলাম, কোনও লোভ নিয়ে আসিনি৷ তবে দুঃখের বিষয়, উনি বারবার দিল্লি গিয়ে নেতাদের ভুল বুঝিয়ে দেখাতে চাইছেন, তিনি সবচেয়ে বড় বিজেপি নেতা৷ এক সময় তিনি দেখাতেন তৃণমূলের বড় নেতা৷
আরও পড়ুন- কোভিড খাত থেকে উচ্চশিক্ষা, কোথায় কত বরাদ্দ হল?
দিলীপ ঘোষকেও একহাত নিয়েছেন সৌমিত্র৷ স্পষ্ট ভাষায় সৌমিত্র বলেন, সভাপতিকে কোনও কথা বললে তিনি অর্ধেকটা বোঝেন, অর্ধেকটা বোঝেন না৷ বাংলায় বিজেপি যে ভাবে চলছে, তাতে ভালো কিছু হওয়ার নেই৷ আমাদের বহু কর্মী মারা গিয়েছে৷ বহু কর্মী ঘর ছাড়া৷ তাঁদের ঠিক ভাবে আমরাই রাখতে পারিনি৷ কয়েকদিন আগে যুব মোর্চার যে অনুষ্ঠান হয়েছিল, তাতেও যোগ দিইনি৷ কারণ মনে হয়েছিল, নতুন নেতা এসে যে ভাবে ভুল পথে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে পরিচালনা করছে তাতে যুব মোর্চা চালানো সম্ভব নয়৷ গোটা দল একটি জেলাতেই কেন্দ্রীভূত হয়েছে৷ নিজের এলাকাতেও তিনি কাজ করতে পারছিলেন না বলেই অভিযোগ৷ সৌমিত্র কথায়, ভোটের আগে সমস্ত চোরদের বিজেপি’তে নিয়ে এসেছিলেন৷ অথচ বিরোধী দলনেতা দেখাতে চাইছেন তিনি একা আত্মবলিদান দিয়েছেন, আমরা নই৷
তাঁর কথায় দল কেন্দ্রীভূত হয়ে যাচ্ছে৷ তবে সৌমিত্রর সাফ কথা, তিনি কখনই বিজেপি বিরোধী নন, তবে ভুলটা ভুলই৷ তবে কি শুভেন্দুর উত্থানেই নিজেকে গুটিলে নিলেন সৌমিত্র?