মহাকাশে মিলল ‘নতুন’ উল্কার খোঁজ, আতঙ্ক বাড়ছে পৃথিবীর

মহাকাশে মিলল ‘নতুন’ উল্কার খোঁজ, আতঙ্ক বাড়ছে পৃথিবীর

ওয়াশিংটন: আরও এক রহস্যের পর্দা ভেদ৷ সূর্যের দৃষ্টি আচ্ছন্নকারী রশ্মির জাল সরিয়ে এক বিশালাকার উল্কার খোঁজ পেলেন আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল। এই উল্কার নাম দেওয়া হয়েছে ‘২০২২ এপি৭’৷ এই সাফল্যে যেমন সকলে উচ্ছ্বসিত, তেমনই ঘিরে ধরেছে আশঙ্কার কালো মেঘ৷ কারণ, পৃথিবীর কক্ষপথকে ‘ক্রস’ বা অতিক্রম করছে এই উল্কাটির কক্ষপথ। এখানেই তৈরি হয়েছে আশঙ্কা৷ বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ভবিষ্যতে পৃথিবীর সঙ্গে এই উল্কার সংঘর্ষ ঘটলেও ঘটতে পারে৷ তবে সবটাই আশঙ্কা৷ আর যদি তেমনটা হয়ও, তা অদূর ভবিষ্যতে নয়৷ এই সম্ভাবনা লুকিয়ে রয়েছে সুদূর ভবিষ্যতের গর্ভে৷ আপাতত এ নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই বলেই বিজ্ঞানীদের আশ্বাস৷  

আরও পড়ুন- ৭০ ফুটের পিস্তল থেকে দুরন্ত গতিতে ছুটছে গুলি! অফুরান জ্বালানি তৈরির পথে বিজ্ঞানীরা

সূর্য রশ্মির তেজ পার করে গবেষণামূলক কাজ চালানো বিজ্ঞানীদের কাছে সবসময়ই একটা বড় চ্যালেঞ্জ৷ সেই প্রেক্ষিতে প্রায় ১.৫ কিলোমিটার চওড়া একটি উল্কাটির হদিশ পাওয়াটা নিঃসন্দেহে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের কাছে একটা বড় সাফল্য। ‘ডার্ক ম্যাটার’ পর্যালোচনার জন্য চিলিতে ভিক্টর এম. ব্লাঙ্কো নামে একটি টেলিস্কোপ রয়েছে। সেটির সঙ্গে একটি শক্তিশালী প্রযুক্তিতে তৈরি যন্ত্র জুড়ে মহাকাশে অনুসন্ধান চালান বিজ্ঞানীরা। 

তবে শুধু ‘২০২২ এপি৭’-ই নয়৷ আরও দু’টি উল্কারও সন্ধান পেয়েছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। সেগুলিও পৃথিবী খুব কাছেই ঘুরপাক খাচ্ছে৷ যাদের মধ্যে একটি এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত হওয়া সূর্যের সবচেয়ে কাছের উল্কা বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে পৃথিবীর জন্য এই দু’টি ‘ক্ষতিকর নয়’ বলেই জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তবে যত আতঙ্ক ‘২০২২ এপি৭’-কে নিয়েই।

এই গবেষণা রিপোর্টটি ‘দ্য অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল জার্নাল’-নামক একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্টের মূল লেখক, কার্নেগি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স-এর স্কট শেফার্ড বলেন, ‘‘২০২২ এপি৭ পৃথিবীর কক্ষপথকে ক্রস করবে৷ সে কারণেই পৃথিবীর কাছে তা দুশ্চিন্তার কারণ। তবে ভবিষ্যতে এই উল্কার গতিপথ বদলে পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটার পরিস্থিতি তৈরি হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে আর পাঁচটা মহাজাগতিক বস্তুর মতো ভবিষ্যতে বিভিন্ন গ্রহের মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবে যে এর গতিপথে বদল আসবে না, সেটা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় না। ফলে সুদূর ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।’’  

গত আট বছরে আবিষ্কৃত মহাকাশীয় বস্তুগুলির মধ্যে সবচেয়ে বড় ‘২০২২ এপি৭’৷ সম্ভবত পৃথিবীর জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকরও, এমনটাই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা৷ কারণ কোনও ভাবে পৃথিবীর সঙ্গে এই উল্কার ধাক্কা লাগলে, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে যে পরিমাণ ধুলো ছড়িয়ে পড়বে তাতে একাধিক প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যাবে। যদিও আগামী একশো বছরের মধ্যে তেমনটা  ঘটার কোনও সম্ভাবনাই নেই৷