বাড়ছে পৃথিবীর গতি! ২৪ ঘণ্টার আগেই সম্পূর্ণ হচ্ছে দিন, এর ফল কতটা ভয়াবহ হবে?

বাড়ছে পৃথিবীর গতি! ২৪ ঘণ্টার আগেই সম্পূর্ণ হচ্ছে দিন, এর ফল কতটা ভয়াবহ হবে?

 কলকাতা: ছোট থেকেই ভূগোল বইতে পড়ানো হয়েছে নিজের অক্ষের চারদিকে একবার পাক পৃথিবার সময় লাগে ২৪ ঘণ্টা। কিন্তু চিরাচরিত সেই সত্য কি এবার পাল্টাতে চলেছে? তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। গত বছর ২৯ জুন পৃথিবীর গতি এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে, ২৪ ঘণ্টার চেয়ে ১.৫৯ মিলিসেকেন্ড কম সময়েই এক পাক ঘুরে ফেলে পৃথিবী৷ সম্পূর্ণ হয় আহ্নিক গতি!

আরও পড়ুন- মাথার উপর গনগনে লাল সূর্য, প্রাণপণে সে দিকেই কি ছুটছে পৃথিবী? কেমন হবে শেষের সে দিন?

পৃথিবীর দিনরাত্রি নির্ভর করে তার অক্ষের ঘূর্ণনের উপর৷ কিন্তু, নিজের অক্ষে পৃথিবীর ঘূর্ণনের গতি রহস্যজনকভাবে বাড়ছে। ১৯৭৩ সাল থেকে পারমাণবিক ঘড়ির মাধ্যমে পৃথিবীর ঘূর্ণনের উপর নজরদারি চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল আর্থ রোটেশন অ্যান্ড রেফারেন্স সিস্টেম সার্ভিস’ বা ‘আইইআরএস’ নামক সংস্থার নেতৃত্বেই মূলত এই পর্যবেক্ষণের কাজ চলছে। কয়েক বছর আগেও ‘আইইআরএস’-এর বিজ্ঞানীদের অনুমান ছিল, পৃথিবীর গতি ক্রমশ কমে যাচ্ছে। কিন্তু সেই ধারণায় ক্রমেই সম্প্রতি বদল আসতে শুরু করেছে। বিজ্ঞানীররা দেখলেন, দীর্ঘ নয়, বরং দিনের দৈর্ঘ্য ক্রমশ ছোট হচ্ছে। ২০২২-এর ২৯ জুন দ্রুততম গতিতে নিজ অক্ষে এক পাক সম্পন্ন করে পৃথিবী। এর আগে গত বছর ২৬ জুলাই মাসে ২৪ ঘণ্টার থেকে ১.৫০ মিলিসেকেন্ড কম সময়ে এক বার পাক খেয়েছে পৃথিবী।

কেন এমনটা হচ্ছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা৷  কেউ কেউ বলছেন, মেরু প্রদেশের বরফের চাদর গলে যাওয়ার ফলে এমনটা ঘটছে। কেউ কেউ আবার বলছেন, পৃথিবীর অভ্যন্তরের গলিত পদার্থ সরে যাওয়াই এর নেপথ্য কারণ৷ 

এর কতখানি প্রভাব পড়তে চলেছে? 

ভৌগোলিক ভাবে পৃথিবার গতিবেগ বৃদ্ধির ফলে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা। তবে প্রযুক্তিগত দিক থেকে এর পরিণাম বিপজ্জনক হতে পারে৷ কারণ, যে কৃত্রিম উপগ্রহগুলি পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে, পৃথিবীর গতিবেগ বৃদ্ধি পেলে সেগুলিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে৷ উদাহরণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন, পৃথিবীর গতি আধ মিলিসেকেন্ড বদলে গেলে, নিরক্ষীয় অঞ্চলে উপগ্রহগুলির অবস্থান প্রায় ১০ ইঞ্চি সরে যেতে পারে। ইন্টারনেট ব্যবস্থা থেকে জিপিএস প্রযুক্তি, আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার অনেকটাই  এই কৃত্রীম উপগ্রহগুলির উপর নির্ভরশীল। ফলে পৃথিবীর গতির হেরফেরে এই উপগ্রহগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হলে, বড়সড় সমস্যা তৈরি হবে বলেই আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের।