কলকাতা: রবিবার ছিল জনপ্রিয় রিয়্যালিটা শো সারেগামাপা-র গ্র্যান্ড ফিনালে৷ এই শো নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে উন্মাদনা দেখা গিয়েছে দর্শকদের মনে৷ কিন্তু সারেগামাপা’র ফলাফলে হতাশ দর্শকদের একাংশ৷ শো শেষে ছয় ফাইনালিস্টের মধ্যে সেরার সেরা শিরোপি ছিনিয়ে নেন পদ্মপলাশ হালদার এবং অস্মিতা কর৷ দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে দার্জিলিং-এর পাহাড়ি ছেলে অ্যালবার্ট কাবো৷ প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হন সোনিয়া গ্যাজমের৷ কিন্তু, বিচারকদের রায় মেনে নিতে পারছেন না দর্শকদের একাংশ৷ স্বভাবতই তাঁরা নাখুশ৷ তাঁদের চোখে পদ্মপলাশ নন, সেরা কাবো৷ কারণ তিনি অনেক বেশি ভার্সাটাইল৷ সেই সঙ্গে এবছরের সারেগামাপা নিয়েও উঠে এসেছে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ৷ পরেরবার থেকে তাঁর আর সারেগামাপা দেখবেন না বলেও সাফ জানিয়েছেন নেটাগরিকরা৷
আরও পড়ুন- এক বছর অতিক্রান্ত, সম্রাজ্ঞী হীন সুরের জগত, মৃত্যু বার্ষিকীতে লতার কিছু অজানা কথা
এক সোশ্যাল মিডিয়া ইউজার লিখেছেন, ‘গুরুজির ছাত্র বলে কথা। ওকে তো জেতাবেই। একজন গোটা সিজনে কীর্তন গাইল। কোনও ভার্সেটালিটি নেই। তাও কীভাবে জিততে পারে পুরস্কার?’ আরেকজন লিখলেন, ‘অ্যালবার্ট কাবো এই সিজনের সেরা ছিল। ফের একবার ভুল সিদ্ধান্ত নিল বিচারকরা।’ বলে রাখা ভালো, ভিউয়ারস চয়েস পুরস্কার জিতেছেন কিন্তু কাবোই৷ আর সেই প্রসঙ্গ তুলেই এক ফেসবুক ইউজার লিখলেন, ‘ভিউয়ারস চয়েস অ্যাওয়ার্ডই তো বুঝিয়ে দিচ্ছে কে কতটা জনপ্রিয়। যতই বিচারকরা গুরুজির মন রাখতে পদ্মপলাশকে জেতাক। সারেগামাপা-র বিজেতা হওয়ার কোনও গুণ ওর নেই। একা অস্মিতাকে ট্রফি দেওয়া হলে তাও বুঝতাম।’
দক্ষিণ ২৪ পরগণার লক্ষ্মীকান্তপুরের পদ্মপলাশ হলেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর শ্রুতিনন্দনের ছাত্র৷ বিচারকরা গুরুজিকে সম্মান জানাতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে অনেকেরই অভিযোগ৷ দর্শকরা বলছেন, পদ্মপলাশকে কোনও শক্ত গানই দেওয়াই হয়নি৷ বাজে কীর্তন গাইলেও তাঁকে কম নম্বর দিয়ে ডেঞ্জার জোনে পাঠানো হয়নি৷ রবিবার ফাইনালে প্রথম রাউন্ডের শেষেই বাদ পড়েন উত্তরবঙ্গের ইসলামপুরের বিমান বুলেট সরকার ও মালদার ঋদ্ধিমান বিশ্বাস। পদ্মপলাশ হালদার, সোনিয়া গ্যাজমের, আলবার্ট কাবো, ও অস্মিতা করকে নিয়ে শুরু হয় দ্বিতীয় রাউন্ড। শেষে জয়ী হন পদ্মপলাশ ও অস্মিতা৷ উল্লেখ্য, ফাইনালে আসা এই ৬ প্রতিযোগীকেই তালিম দেবেন অজয় চক্রবর্তী।
অস্মিতাকে নিয়ে সেভাবে আপত্তি না উঠলেও, পদ্মপলাশের হাতে বিজেতার ট্রফি উঠতেই অনেকে সমালোচনায় মত্ত হয়েছেন। পদ্মপলাশের জয় নিয়ে অনেকে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও খুশি তাঁর গানের মাস্টার৷ যিনি শ্রুতিনন্দনে পদ্মপলাশকে গান শেখান৷ ফেসবুকে দুজনের একটি ছবি শেয়ার করে তিনি লিখলেন, ‘পদ্মপলাশ আজ থেকে বারো বছর আগে যখন আমার কাছে গান শিখতে এসেছিল ওর বাবার সঙ্গে, সে দিনই লক্ষ্য করেছিলাম, খুব ভালো সাঙ্গীতিক বীজ তো ওর মধ্যে আছেই, সাথে আছে আরও কতগুলো বিশেষ গুণ। যে গুণগুলো মানুষকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যায়। সেগুলো হলো শ্রদ্ধা, বিনয়, সরলতা, বিচক্ষণতা আর পরিমিতি বোধ৷’
এতো না হয় গেল তর্ক-বিতর্কের পালা৷ কিন্তু জানেন কি কত টাকা পেলেন সারাগামাপা-এর বিজেতারা? সারেগামাপা বিজেতা পদ্মপলাশ হালদার এবং অস্মিতা পেয়েছেন ৭ লক্ষ টাকার চেক, সোনার নেকলেস এবং গাড়ি। দ্বিতীয়স্থানে থাকা আলবার্ট কাবো পেয়েছেন তিন লক্ষ টাকা। দ্বিতীয় স্থান দখল করার পাশাপাশি ফেসবুক ভিউয়ার্স চয়েস অ্যাওয়ার্ড জেতায় তিনি পেয়েছেন অতিরিক্ত ৪ লক্ষ টাকা পান। তৃতীয় স্থানাধিকারী সোনিয়া গ্যাজমের পেয়েছেন ১ লক্ষ টাকার চেক।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>