ডিব্রুগড়: স্কুলে দিনের পর দিন সহপাঠীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গেও অভব্য আচরণ করছিল কিছু পড়ুয়া৷ সেই সঙ্গে পড়াশোনাতেও ফাঁকি দিচ্ছিল তারা৷ কোনও ভাবেই তাদের সঠিক পথে আনতে না পেরে শিক্ষিকা নালিশ জানান তাঁদের বাড়িতে। কেন বাড়িতে জানাল? সেই রাগে স্কুলের মধ্যেই অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষিকাকে চুলের মুঠি ধরে মারধর করার অভিযোগ উঠল ছাত্রদের একাংশের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি অসমের ডিব্রুগড় জেলার জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের। ছাত্রদের দৌরাত্ম এখানেই শেষ নয়৷ স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল এই ঘটনার কথা পুলিশকে জানানোয় তাঁর বাড়িতেও হামলার চেষ্টা করে দশম ও একাদশ শ্রেণির কিছু ছাত্র।
আরও পড়ুন- লিভ-ইনে থাকাকালীন পুলিশি হানা! কঠিন লড়াইয়ের পর আংটিবদল, রূপকথার গল্প লিখছে ওঁরা
গত রবিবার ছিল স্কুলের শিক্ষক-অভিভাবক বৈঠক। সেখানেই এক পড়ুয়ার বাবা-মাকে তার বিরুদ্ধে নালিশ জানান শিক্ষিকা৷ জানান, তার পড়াশোনায় অমনোযোগিতা এবং সবার সঙ্গে দুর্ব্যবহারের কথা৷ ইতিহাসের ওই শিক্ষিকা বর্তমানে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা৷ ওই দিন শিক্ষক-অভিভাবক বৈঠক শেষ হতেই স্কুলের প্রধান বিল্ডিংয়ের সামনে ওই শিক্ষিকাকে ঘিরে ধরে কিছু পড়ুয়া৷ তাঁকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে।
স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল রথিস কুমার বলেন, ‘‘বৈঠক শেষ হতেই স্কুলের প্রধান প্রশাসনিক বিল্ডিংয়ের সামনে কিছু পড়ুয়া ওই শিক্ষিকাকে হেনস্থা করতে শুরু করে। কয়েক জন তাঁকে ধাক্কাও মারে৷ এক জন আবার শিক্ষিকার চুলের মুঠি ধরে টানতে থাকে। এই ঘটনা দেখেই কয়েক জন শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী এবং ছাত্রীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে বাঁচান।’’ এই ঘটনার পর সংজ্ঞা হারান ওই অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষিকা৷ তড়িঘড়ি তাঁকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রিন্সিপাল বলেন, ‘‘তদন্ত করে আমরা জানতে পেরেছি যে, এই ঘটনার সঙ্গে দশম এবং একাদশ শ্রেণির ২২ জন ছাত্র জড়িত রয়েছে। ওই ছাত্ররা আমাকেও ফোন করে হুমকি দেয় এবং আমার বাড়িতে হামলা করার চেষ্টা করে। আমি কোনও ভাবে পালিয়ে মোরান থানায় চলে আসি৷ পুলিশকে সবটা জানাই। পুলিশ গিয়ে কড়া ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিতে পরিস্থিতি শান্ত হয়।’’
তবে এখনও কোনও ছাত্রের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। কারণ, এ ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি।