কলকাতা: বিধানসভা ভোটের আগে গেরুয়া পালে হাওয়া দিয়ে শুরু হয়েছিল দল বদলের হিড়িক। বিদ্রোহ ঘোষণা করে ঝাঁকে ঝাঁকে নেতারা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি’তে নাম লিখিয়েছিলেন। ক্ষমতা দখলের হুঙ্কার দিয়ে বাংলায় মাটি কামড়ে প্রচার চালিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বরা৷ পালা করে এ রাজ্যে সভা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহরা৷ কিন্তু ভোটের ফল বেরতেই বদলে গেল চিত্র৷ বিপুল জনাদেশ মাথায় নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য তৃণমূল ক্ষমতার অলিন্দে আসতেই ফের একবার শুরু হল ফুল বদলের হিড়িক৷ তবে এবার ঘাসফুল ছেড়ে পদ্মে নয়৷ বরং পদ্ম ছেড়ে দলে দলে ঘাস ফুলে নাম লেখাতে শুরু করলেন গেরুয়া নেতারা৷ আর দল বদলের খেলায় ‘পিষ্ট’ সাধারণ মানুষের ‘বিশ্বাস’৷
আরও পড়ুন- ফের উত্তরে অজানা জ্বরের বলি দুই শিশু, বাড়ছে সংক্রমণের প্রকোপ
বিজেপি ছেড়ে সপুত্র মুকুল রায় তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন করার পরেই ভাঙন ধরেছে গেরুয়া শিবিরে৷ একের পর এক বিধায়ক বিজেপি’র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে পুরনো ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন৷ দলে ফেরায় অপেক্ষায় রয়েছে আরও অনেকে৷ এমনটাই দাবি করা হয়েছে তৃণমূলের তরফে৷ এরই মাঝে শনিবারের বারবেলায় সকলকে চমকে দিয়ে রাজনৈতিক সন্ন্যাস ভাঙলেন আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়৷ অভিষেক বন্দ্যেপাধ্যায়ের হাত ধরে তিনি যোগ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে৷ তিনি কথা দিয়েছিলেন সক্রিয় রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নিলেও আসানসোলের মানুষের পাশে থাকবেন৷ কিন্তু তিনি ‘কথা’ রাখলেন না৷ আজ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়ে দিলেন দল বদলের পর আর কোনও ভাবেই সাংসদ পদ ধরে রাখবেন না৷ তিনি নতুন দলে নতুন দায়িত্ব নিয়ে নতুন উদ্যমে রাজনৈতিক জীবন শুরু করলেন আজ থেকে৷ অন্যদিকে নিজের জনপ্রতিনিধিকে হারালেন আসানসোলের মানুষ৷
আরও পড়ুন- মাঝ পথেই গায়ের সরকারি প্রকল্পের টাকা! জেলা শাসককে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
রাজ্যের মানুষ যে বিশ্বাস, যে আশা নিয়ে নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছিল, রাজনৈতিক নেতাদের দলবদলে তা কতখানি বজায় রইল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷ ধাক্কা খাচ্ছে তাঁদের আস্থা৷ রাজনৈতির স্বার্থ সিদ্ধির দৌড়ে ভাঙছে নাকি আম আদমির বিশ্বাস?