কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে নয়া নাম কুন্তল ঘোষ৷ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলকে জেরা করে উঠে আসে হুগলি জেলার যুবতৃণমূল নেতা কুন্তলের নাম৷ তাঁর চিনার পার্কের ফ্ল্যাচে হানা দিয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু নথি উদ্ধার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি৷ এবার চিনার পার্কের কাছেই অভিজাত বহুতল আবাসনে কুন্তল ঘোষের সঙ্গে যোগসূত্রে আরও একটি ফ্ল্যাট এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট-এর নজরে। ইডি সূত্রে খবর, ওই ফ্ল্যাটই নাকি নিয়োগ দুর্নীতির অন্যতম ‘যন্তরমন্তর ঘর’। ওই ফ্ল্যাটের ঘরে বসেই হয়েছিল নিয়োগ দুর্নীতির বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা৷
আরও পড়ুন- ২ লক্ষ ২৯ হাজার কোটি নয়ছয়ের অভিযোগ রাজ্যের বিরুদ্ধে, মামলায় যুক্ত হবে CAG
‘যন্তরমন্তর ঘর’ শব্দটির সঙ্গে বাঙালির পরিচয় সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশ’ ছবির মাধ্যমে। ওই ছবির অন্যতম চরিত্র গবেষক ‘যন্তরমন্তর ঘরে’ই ‘মস্তিষ্ক প্রক্ষালন যন্ত্র’, সোজা কথায় ‘মগজধোলাই’-এর যন্ত্র বসিয়েছিলেন। এর ভিতরে ঢুকিয়েই জনতার মগজধোলাই করা হত। তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অধিকারিকেরা মনে করছেন, কুন্তলের নিউ টাউনের ওই ফ্ল্যাটেই চাকরিপ্রার্থীদের ‘মগজধোলাই’-এর পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
গত শুক্রবার সকাল থেকেই চিনার পার্কের ওই আবাসনের দু’টি ফ্ল্যাটে একসঙ্গে হানা দিয়ে তল্লাশি চালায় ইডির দু’টি দল। সেই দুটি ফ্ল্যাটের মধ্যে একটি থেকে উদ্ধার হয়েছে একাধিক নথি। উদ্ধার হয়েছে একটি নোটবুকও। বিছানার তলা এবং তোশকের ভিতর থেকে ওই নথিগুলি উদ্ধার করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রের খবর। সেই নথিগুলিতে স্পষ্ট ধরা পড়েছে ‘দুর্নীতির ছাপ’৷ ওই নথি খতিয়ে দেখার পর ইডি আধিকারিকরা মনে করছেন, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির বেশ কিছু পরিকল্পনা হয়েছিল ওই ফ্ল্যাটে বসেই। ওই ফ্ল্যাটে যাতায়াত ছিল নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত অনেকেরই। তাপসের যে সহযোগীর বিরুদ্ধে ‘হুমকি’ দিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ এনেছিলেন কুন্তল, সেই নীলাদ্রি ঘোষও জানিয়েছেন, চিনার পার্কের ওই ফ্ল্যাটে ডেকেই তাঁর হাতে দু’লক্ষ টাকা তুলে দিয়েছিলেন বলাগড়ের তৃণমূল নেতা। ওই ফ্ল্যাটে শিক্ষক পদে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে সরাসরি টাকার লেনদেন হয়েছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখছেন কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকেরা৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>