কলকাতা: একুশের মহারণে প্রার্থী তালিকায় ফের চমক বিজেপি’র৷ প্রার্থী করা হল মুকরুল রায়কে৷ এবারের ভোটে নদীয়ায় বেড়ে ওঠা পদ্ম বাগান সামালানোর দায়িত্ব সঁপা হল তাঁর বলিষ্ঠ কাঁধেই৷ কৃষ্ণনগর উত্তর আসন থেকে ভোটে লড়বেন তিনি৷
আরও পড়ুন- বিজেপির ‘শত্রু’ সেই জিতেন্দ্রই গেরুয়া প্রার্থী!
যদিও ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা মুকুলের ছিল না৷ বরং অন্তরালে থেকে দলের সংগঠক হিসাবে কাজ করেতই তিনি অধিক স্বচ্ছন্দ৷ তা সত্বেও নদীয়ায় মুকুলকে সামনে রেখেই যুদ্ধক্ষেত্রে নামতে চায় বিজেপি৷ ২০০১ সালে জগদ্দল থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি৷ সেই বছর অবশ্য হেরে গিয়েছিলেন৷ কিন্তু এর পর রাজনীতির আকাশে তাঁর উত্থান ঘটে ধূমকেতুর মতো৷ তবে আর ভোটে লড়েননি৷ বরং হয়ে উঠেছিলেন তৃণমূলের সংগঠক৷ পরে ২০০৬ সালে তৃণমূলের টিকিটেই রাজ্যসভার সাংসদ হন৷ হয়েছিলেন রেলমন্ত্রীও৷ ২০০৯ থেকে ২০১১ পর্যন্ত তিনিই ছিলেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের মুখ৷ ২০ বছর পর ফের সরাসরি ভোট ময়দানে নামছেন মুকুল রায়৷
রাজনীতির কারবারিরা অবশ্য বলছেন মুকুল রায়কে নির্বাচনী রণে প্রার্থী করে চতুর চাল চেলেছে গেরুয়া শিবির৷ কারণ তৃণমূল থেকে বিজেপি’তে এসে রাতারাতি বড় পদ পেয়েছিলেন তিনি৷ এবার বাংলা দখলের লক্ষ্যে তাঁকেই সৈনিক হিসাবে নামাচ্ছে দল৷ ভোটের ফল বিরূপ হলে বা তিনি ভোটে হারলে, তাঁকে পদ থেকে সরানোও অনেক সহজ হয়ে যাবে৷ কিন্তু বলা হয় ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে বিজেপি’র ভালো ফলের পিছনে ছিল মুকুল ম্যাজিক৷ বিধানসভাতেও সেই ম্যাজিক অব্যাহত থাকে কিনা, সেটাই দেখার বিষয়৷
এক সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডান হাত বলা হত তাঁকে৷ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি’তে যাওয়ার পরেও অনুগামী সমর্থকের কাছে তাঁর জনপ্রিয়তা বিন্দুমাত্র কমেনি৷ ছিলেন তৃণমূলের সংগঠক৷ বলা হত, তিনি নাকি নিজের হাতের তালুর মতোই চিনতেন তৃণমূলের সংগঠনকে৷ পছন্দ করতেন কিং মেকার বা কুইন মেকার হয়ে হতে উঠছে৷ ৩৪ বছরের বাম জমানার অবসান ঘটিয়ে তৃণূলের সাম্রাজ্য গঠনের পিছনেও ছিল তাঁর অনবদ্য ভূমিকা৷ কিন্তু নারদা কাণ্ডে নাম জড়ানোর পর সিবিআই-এর জেরার মুখে পড়তে হয় তাঁকে৷ এর পরেই ক্রমশ দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে তাঁর৷ অবশেষে তিনি নাম লেখান গেরুয়া শিবিরে৷ কেন্দ্রীয় নেতাদের বেশ কাছের লোক হয়ে উঠেছেন মুকুল রায়৷ তিনি কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের অত্যন্ত স্নেহভাজন৷ তাঁকে প্রার্থী করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন খোদ অমিত শাহ৷
আরও পড়ুন- কয়লা খনিতে দুর্নীতি! আসানসোল থেকে CBI জালে জড়ালেন ৫ অভিযুক্ত
শুধু তাই নয়, তাঁর হাত ধরে তৃণমূল থেকে বহু নেতা বিজেপি’তে এসেছে৷ এর মধ্যে রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী, সব্যসাচী দত্তের মতো নেতারা৷ এবার ভোটে মুকুল রায়ের বিপরীতে আছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী অভিনেত্রী কৌশামী মুখোপাধ্যায়৷