ছেলেমেয়ের স্কুলের ফি দিতে সবজিওয়ালার থেকে টাকা ধার! ঠিক মতো খাওয়াও জুটত না মুকেশের

ছেলেমেয়ের স্কুলের ফি দিতে সবজিওয়ালার থেকে টাকা ধার! ঠিক মতো খাওয়াও জুটত না মুকেশের

মুম্বই: সঙ্গীতের দুনিয়ায় তিনি এক উজ্জ্বল নক্ষত্র৷ তাঁর নাম জানেন না বা তাঁর গানের ভক্ত নন, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়৷ তাঁর কণ্ঠের মাদকতায় আজও বুঁদ সঙ্গীত প্রেমীরা৷ আজও মনে আলোড়ন জাগায় ‘জিনা ইয়া মরনা ইহা’৷ এতক্ষণে নিশ্চয় বুঝে গিয়েছেন কার কথা বলছি৷ তিনি আর কেউ নন, বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী মুকেশ৷ কিন্তু এত বড় গায়কের জীবনেও ছিল অনেক চড়াই উতরাই৷ অনেক কঠিন পথ পেরিয়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন ‘মুকেশজি’৷

আরও পড়ুন- ‘ডিজনি’র মিউজিক্যাল ছবিতে প্রথম ভারতীয় রাজকন্যা! অপেক্ষা আর কিছুদিনের

একটা সময় এমনও গিয়েছে, যখন সব্জিওয়ালার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে ছেলের স্কুলের মাইনে দিতেন মুকেশ। গায়কের লড়াইয়ের এই দিনগুলি হয়তো অনেকেরই অজানা। সম্প্রতি সেই অজানা কাহিনিই প্রকাশ্যে আনলেন তাঁর পুত্র নিতিন মুকেশ। একের পর এক হিট গানে বলিউডকে সমৃদ্ধ করেছিলেন গায়ক। তবু অর্থাভাব কাটেনি৷ প্রতি দিন বেঁচে থাকাটা ছিল তাঁর পরিবারের কাছে ছিল বড় চ্যালেঞ্জ৷ সেই কষ্টের দিনগুলো খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন ছোট্ট নিতিন। সম্প্রতি এক রিয়্যালিটি শো-এর মঞ্চে এসে পুরনো স্মৃতিতেই ডুব দিয়েছিলেন ৭২ বছরের এই নেপথ্য গায়ক। 

পরবর্তীতে বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই এগিয়ে গিয়েছেন তিনি৷ তবে এর মধ্যে রয়েছে কালের বিস্তর ফারাক৷ নিতিন বলেন, ‘‘আমি কখনও আর কারও জীবনে এত ওঠাপড়ার কথা শুনিনি৷ আমার বাবাকে যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তা কেউ ভাবতেও পারবেন না। খাওয়া তো দূর, এক একদিন তো জল পর্যন্ত জোটেনি। কিন্তু সেই মানুষই এক দিন ‘মুকেশজি’ বলে ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচিতি পেলেন। ‘আওয়ারা হুঁ’, ‘মেরা জুতা হ্যায় জাপানি’ গাওয়ার পর তাঁকে সবাই চিনল। তবে পরিচিত পাওয়ার পরেও দীর্ঘ ৬-৭ বছর তাঁকে অর্থাভাবে কষ্ট পেতে হয়েছে। লড়াই করতে হয়েছে।” 

নিতিন আরও জানান, এক সময় ছেলেমেয়েদের স্কুলে পড়ানোর সামর্থ্যটুকুও ছিল না তাঁর বাবার। তিনি বলেন, “আমার আর বোনের স্কুলের মাইনে বাকি পড়ে যেত হামেশাই৷ আমাদের  বাড়ির কাছে এক সব্জিবিক্রেতা ছিলেন৷  তিনি বাবাকে খুব ভালবাসতেন। বাবা কণ্ঠে গান শোনার জন্য উতলা হয়ে থাকতেন৷ তিনিই এক দিন বাবাকে টাকা ধার দেন৷ সেই টাকা দিয়েই আমাদের স্কুলের বেতন মেটানো হয়। তবে এই কথাটা বাবা কিংবা সেই সব্জিওয়ালা, দু’জনের কেউই আমাদের জানতে দেননি।” 

কিন্তু পরে ছেলেমেয়েদের সবটাই জানিয়েছিলেন মা সরলা। তিনিই জানিয়েছিলেন, তাঁদের বাবা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। নিতিনের দাবি,  সংগ্রামের ওই দিনগুলোর কথা কখনও ভুলবেন না। বরং বাবার মতোই দারিদ্রের মধ্যেও মাথা উঁচু করে থাকতে চান তিনি।