বেঙ্গালুরু: ম্যাচ গড়াপেটা নিয়ে বহুবার বহু বিতর্ক হয়েছে৷ আপামর ক্রিকেটপ্রেমীর কাছে এটা তঞ্চকতা৷ কিন্তু আইনের চোখে ম্যাচ গড়াপেটা কোনও অপরাধ নয়৷ এমনই রায় দিল কর্ণাটক হাইকোর্ট৷
আরও পড়ুন- রিফিউজি ক্যাম্প থেকে ফুটবল মাঠে রাজত্ব, তালিবানকে বোকা বানানো নাদিয়া এবার পাশ করলেন ডাক্তারিও
২০১৯ সালে কর্নাটক প্রিমিয়ার লিগে চার জনের বিরুদ্ধে ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগ উঠেছিল৷ মামলা গড়ায় হাইকোর্টে৷ সেই মামলার রায় দিতে গিয়েই এদিন বিচারপতি শ্রীনিবাস হরিশ কুমার বলেন, ‘‘ম্যাচ গড়াপেটা অর্থ নিশ্চিত ভাবেই অসততা, দুর্নীতি৷ এর জন্য যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের। কিন্তু ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ নম্বর ধারা অনুযায়ী ম্যাচ গড়াপেটার জন্য এফআইআর দায়ের করা যায় না।’’
এই মামলার রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি কর্নাটক পুলিশ অ্যাক্টের ২(৭) ধারা তুলে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, জুয়া খেলার মধ্যে কোনও অ্যাথলেটিক স্পোর্টস অন্তর্ভুক্ত নয়৷ প্রসঙ্গত, কর্নাটক প্রিমিয়ার লিগে দুই ক্রিকেটার সিএম গৌতম ও আবরার কাজি এবং জুয়াড়ি অমিত মালভি এবং বেলাগাভি প্যান্থার্স দলের মালিক আলি আসফাকের বিরুদ্ধে ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগ ওঠে। এই চার জনের বিরুদ্ধেই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ নম্বর ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়৷
মামলার শুনানির সময় অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, মানুষ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে মাঠে খেলা দেখতে যান। অর্থাৎ এর সঙ্গে টাকার সম্পর্ক রয়েছে৷ ফলে ৪২০ ধারা বলবৎ করা হোক। কিন্তু বিচারপতি বলেন, ক্রিকেটপ্রেমীদের টাকা দিয়ে টিকিট কেটে মাঠে যান৷ ফলে তাঁরা মনে করেন যেন ফেয়ার গেম হয়৷ কিন্তু তাঁরা তো স্বেচ্ছায় টিকিট কেটে খেলা দেখতে যান৷ ফলে টিকিট কাটার জন্য তাঁদের কেউ প্ররোচিত করে না৷ তাই এখানে ৪২০ ধারা আনা যাবে না৷
শুধু তাই নয়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০বি ধারাও আনা যাবে না বলে জানিয়ে দেন কর্ণাটক হাইকোর্ট। কারণ এই ধারায় ফৌজদারি চক্রান্তের কথা বলা হয়েছে। বিচারপতির যুক্ত, চার্জশিটে থাকা অভিযোগগুলিকে ৪২০ ধারার মধ্যে ফেলা যায় না৷ তাফ এক্ষেত্রে ১২০বি ধারাএ প্রয়োগ করা যায় না৷
তবে কর্ণাটক প্রিমিয়ার লিগে নিশ্চিত ভাবে ম্যাচ গড়াপেটা হয়েছিল৷ ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর বেঙ্গালুরুর সেন্ট্রাল ক্রাইম ব্রাঞ্চের ইন্সপেক্টর কে প্রকাশ ম্যাচ গড়াপেটার তদন্তে নামেন এবং বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার, কোচ এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিককে জেরা করেন। জেরায় জানা যায় ওই বছর ১৫ অগস্ট থেকে ৩১ অগস্টের মধ্যে কর্নাটক প্রিমিয়ার লিগের বেশ কিছু ম্যাচে গড়াপেটা হয়েছিল। এরপর কুবন পার্ক থানায় রিপোর্টও জমা দেন তিনি। তার রিপোর্টের ভিত্তিতেই চার জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়৷ চার্জশিটও দেওয়া হয় তাঁদের নামে৷