সুন্দরবনে বাড়ছে হাতির হানা, হিঙ্গলগঞ্জে গিয়ে প্রকৃতি পুজো দেবেন মুখ্যমন্ত্রী

সুন্দরবনে বাড়ছে হাতির হানা, হিঙ্গলগঞ্জে গিয়ে প্রকৃতি পুজো দেবেন মুখ্যমন্ত্রী

কলকাতা: কখনও হাতির হানা, কখনও প্রকৃতির তাণ্ডব৷ বারবার আঘাত নেমে এসেছে সুন্দরবনের উপর৷  সুন্দরবনে হাতির হানা ও সাইক্লোন-বন্যা নিয়ে এবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ জঙ্গলে খাবার না পেয়ে মাঝে মধ্যেই হানা দিচ্ছে হাতির দল৷ নষ্ট করছে ধানের খেত৷ নষ্ট হচ্ছে বিঘার পর বিঘা জমির ফসল৷ এই পরিস্থিতিতে প্রকৃতি পুজোর কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী৷ 

আরও পড়ুন- রাজ্যপাল পদে শপথ নিলেন সিভি আনন্দ বোস, অনুষ্ঠানে হাজির মুখ্যমন্ত্রী, এলেন না শুভেন্দু

এদিন বিধানসভার মমতা আরও বলেন, হাতির হানায় স্থানীয় বন কর্মীদের প্রাণ যাচ্ছে৷ বনকর্মীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের চাকরির ব্যবস্থাও করা হবে৷ এই বিষয়টি আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে বনন্ত্রীকে৷ 

বিধানসভায় দাঁড়িয়েই তিনি বলেন, ‘‘আগামী মঙ্গলবার হিঙ্গলগঞ্জে বৃক্ষ ও প্রকৃতি পুজো করব৷ ইদানীং হাতির হানা বেড়েছে। জঙ্গলে খাবার না পেয়ে ধান খেতে ঢুকে পড়ে ওরা। অনেক জমি নষ্ট হয়। প্রাণ যাচ্ছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘‘ভৌগলিক কারণে সুন্দরবনে নানা সমস্যা রয়েছে৷ জেলা শাসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন না৷ আমরা নীতি আয়োগে জমা দিয়েছি। প্রতি বছর সাইক্লোন হয়, বন্যা হয়। মাস্টার প্ল্যান হলে সমস্যা মিটবে। আমি বনমন্ত্রীকে বলব, আরও সিরিয়াস হয়ে বিষয়গুলি দেখতে।” তাঁর সাফ কথা, ‘‘এক চোখ বন্ধ করে আরেক চোখ দিয়ে দেখতে পারি না৷ হিঙ্গলগঞ্জে গিয়ে প্রকৃতি পুজো করব৷ বৃক্ষরোপন করতে হবে, মানুষকে বাঁচাতে হবে৷’’  স্থানীয় বনকর্মী, জঙ্গলের বাসিন্দাদেরও এই পুজোয় শামিল করা হবে বলে জানান তিনি৷ 

মূলত সুন্দরবন অঞ্চলের মৎস্যজীবী, মধু-সংগ্রাহক ও কাঠুরিয়া সম্প্রদায়ের মানুষরা প্রকৃতি ও  বনদেবীর আরাধনা করে থাকে। বাঘের আক্রমণ-থেকে বাঁচতে ও  গভীর জঙ্গলে বিপদআপদ থেকে রক্ষা পেতে এই পুজো করা হয়ে থাকে। এই দেবী বনবিবি, বনদুর্গা, ব্যাঘ্রদেবী, বনচণ্ডী নামেও পরিচিত৷ 

প্রসঙ্গত,  এর আগেও সুন্দরবনের উন্নয়ন প্রসঙ্গে একাধিক পদক্ষেপের কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এদিন ফের বিধানসভায় সুন্দরবন নিয়ে কড়া বার্তা দিলেন তিনি। মমতা জানান, মাছ বা কাঁকড়া ধরতে গিয়ে কুমীর বা হাতির আক্রমণে কারও মৃত্যু হলে সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি দেখতে হবে। পাশাপাশি স্থানীয়রা যাতে চাকরি পান, বনদফতরকে সে দিকেও নজর দেওয়া নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কারণ বনকর্মীরাই এই বিষয়টি ভালোভাবে বুঝবেন। স্থানীয়দের চাকরি পাওয়ার বিষয়টিকে বাধ্যতামূলক করা নিয়েও জোর সওয়াল করেন মুখ্যমন্ত্রী৷