আলিপুর: দক্ষিণ ২৪ পরগণার ছোট্ট গ্রাম আসিনা৷ এই গ্রামেরই মিষ্টি মেয়ে রাহিলা খাতুন৷ দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী৷ বয়স কম হলেও নিজের লক্ষ্যে সে অবিচল৷ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই লকডাউনের মধ্যে অসাধ্য সাধন করে ফেলেছে সে৷
আরও পড়ুন- মমতার মিছিলে ষাঁড়ের তাণ্ডব, হুলুস্থুল পিলখানায়
নিজের গ্রামে বাড়ির একটি ঘরে লাইব্রেরি তৈরি করে ফেলেছে রাহিলা৷ যেখানে রয়েছে নানাবিধ বই৷ যাতে গ্রামের কোনও পড়ুয়া স্কুল ছুটের দলে নাম না লেখায়৷ লকডাউনে অনলাইন ক্লাসের চক্করে বহু ছাত্রছাত্রীর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ অর্থের অভাবে তারা কিনতে পারেনি স্মার্ট ফোন৷ সেই সকল ছেলেমেয়েকে উৎসাহ জোগাতেই রিহানা নিজের বাড়িতে তৈরি করেছে আস্ত একখানি লাইব্রেরি৷ রয়েছে ছাত্রছাত্রীদের জন্য অনেক প্রয়োজনীয় বই৷ প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের পাঠ্যক্রমের কিছু বইও জোগাড় করেছে সে৷
এই লাইব্রেরির তত্বাবধানে রয়েছেন মোট নয় জন৷ এই দলে রাহিলার মা সহ আছেন চারজন মহিলা৷ তাঁদের লাইব্রেরির নাম নয়নাভিরান৷ এখানে লুকিয়ে রয়েছে এক টুকরো স্বর্গ৷ রয়েছে পড়ার টেবিল৷ যার প্রতিটি রাখা রয়েছে একটি করে জলের বোতল৷ রয়েছে কিছু চেয়ারও৷ মেঝেতে বিছানো রয়েছে সাদা চাদর৷ তার এই প্রচেষ্টা অনন্য৷ রাহিলা নিজে এখন দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া৷ সামনেই উচ্চমাধ্যমিক৷ কিন্তু লকডাউনের মধ্যে রাহিলা তাঁর গ্রামের পড়ুয়াদের পড়া ছাড়তে দেয়নি৷
আরও পড়ুন- বারাণসীতে আসুন কাশীর মানুষ আপনাকে দিল্লি যেতে দেবে না, মমতাকে বিঁধলেন নমো
রাহিলাদের লাইব্রেরিতে অষ্টম আশ্চর্যেক কম কী! সারা দেশে যখন হিন্দু মুসলিম ধর্ম নিয়ে রেষারেষি, তখন রাহিলার ঘর মাখা সূর্যের আলোয়৷ ভবিষ্যতের স্বপ্ন সাজানো চার দেওয়ালের মধ্যে৷ সেখানে লাল কালিতে লেখা মাতৃভাষা আশা জাগায়। আসলে রহিলার মতো মেয়েরা সমাজকে ভুল পথ দেখানো মিথ্যাবাদী শক্তির হাত থেকে মুক্তি দিতে আসে। এই ছোট্ট লাইব্রেরিই হয়ে উঠুক দেশের গর্ব৷ পাখা মেলুক এই সদ্যোজাত৷ রাহিলার এখন একটাই স্বপ্ন আরও বড় হয়ে উঠুক তার লাইব্রেরি৷ এই ঘর ভরুক আরও বইয়ের সমাহারে৷