পৃথিবীর খুব কাছে বৃহস্পতি! স্পষ্ট ধরা পড়বে বাষ্পীয় বলয়, শীঘ্রই মহাজাগতিক দৃশ‍্যের সাক্ষী থাকবে বিশ্ব

পৃথিবীর খুব কাছে বৃহস্পতি! স্পষ্ট ধরা পড়বে বাষ্পীয় বলয়, শীঘ্রই মহাজাগতিক দৃশ‍্যের সাক্ষী থাকবে বিশ্ব

8361d269ca6fd53b77e871ceabdfa6c0

কলকাতা: রাতের আকাশে দূরবিনে চোখ রেখে তারাদের দেশে হারিয়ে যাওয়ার সাধ অনেকেরই থাকে৷ এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের রহস্যভেদে মরিয়া হয়ে ওঠে দুটো চোখ৷ গ্রহ-নক্ষত্রদের সলুক সন্ধানে নেমে পড়েন মহাকাশপ্রেমীরা৷ তাঁদের জন্য এবার সুখবর৷ রাতের আকাশে এবার পৃথিবীর খুব কাছে বৃহস্পতি৷ এক দিনের জন্য হলেও খুব কাছ থেকে দেখা যাবে ‘গুরু’ বৃহস্পতিকে৷ আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর এই সুবর্ণ সুযোগ আসতে চলেছে৷ শুধু তাই নয়, দূরবিক্ষণ যন্ত্রে চোখ রাখলে দেখা মিলতে পারে সৌরমণ্ডলের সবচেয়ে বড় গ্রহের তিন-চারটি উপগ্রহেরও৷ 

আরও পড়ুন- সূর্যের গায়ে মৌচাকের মতো এগুলি কী! শক্তিশালী সোলার টেলিস্কোপে ধরা পড়া ছবিতে বাড়ছে রহস্য

আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে চলে আসবে বৃহস্পতি৷ কপক্ষপথের অবস্থান অনুযায়ী সাধারণত পৃথিবী থেকে বৃহস্পতির সর্বাধিক দূরত্ব ৬০ কোটি মাইল। তবে ২৬ তারিখ নীল গ্রহ থেকে ‘গুরু’ বৃহস্পতির দূরত্ব থাকবে ৩৬.৫ কোটি মাইল। গত ৭০ বছরে এই প্রথম পৃথিবীর এত কাছাকাছি চলে আসবে বৃহস্পতি।

প্রতি ১৩ মাস অন্তর পৃথিবীর ঠিক বিপরীত অবস্থানে বিরাজ করে বৃহস্পতি। অর্থাৎ পশ্চিম দিকে সূর্যাস্ত ঘটলে, পূর্বে থাকে বৃহস্পতি। ফলে অগাস্টের শেষ থেকে সেপ্টেম্বরে বৃহস্পতিকে বড় দেখায়। সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে করতে বছরভর পৃথিবী ও বৃহস্পতির মধ্যে দূরত্বের তারতম্যও ঘটে থাকে৷ এ বার পৃথিবীর খুব কাছাকাছি চলে আসছে সৌরমণ্ডলের সবচেয়ে বড় গ্রহটি। তাই ‘গুরু’কে নিয়ে মহাকাশপ্রেমীদের মধ্যে উন্মাদনার পারদ চড়ছে৷ 

বৃহস্পতি এবং পৃথিবীর এই কাছাকাছি চলে আসাকে ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলে ব্যাখ্যা করছেন বিজ্ঞানীরা। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানাচ্ছে,  ভাল দূরবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে দেখলে ২৬ তারিখ বৃহস্পতিকে শুধু স্পষ্ট ভাবে দেখাই যাবে না, তাকে জড়িয়ে থাকা বাষ্পীয় বলয়ও (অন্তত মাঝখানের বলয়টি) স্পষ্ট দেখা যাবে। বৃহস্পতির দক্ষিণ গোলার্ধে একটি লাল বিন্দু রয়েছে৷ যা বৃহত্তম সৌরঘূর্ণি বলে পরিচিত। বিগত ৩০০ বছর ধরে একই ভাবে সেটিকে দেখে আসছেন বিজ্ঞানীরা। শক্তিশালী দূরবীক্ষণ যন্ত্রে চোখ রাখলে সেটিরও দেখাও মিলবে৷ 

প্রাপ্তির এখানেই শেষ নয়৷ ওই দিন দেখা মিলতে পারে বৃহস্পতির তিন-চারটি উপগ্রহেরও৷ ১৭ শতকে গ্যালিলিও প্রথম বৃহস্পতির তিনটি উপগ্রহ নিরীক্ষণ করেছিলেন। সেকারণেই এই উপগ্রহগুলি গ্যালিলিয়ান উপগ্রহ নামে পরিচিত। উঁচু জায়গায় দূরবিন রাখলে সেগুলি স্পষ্ট দেখা যাবে৷ প্রসঙ্গত, এখনও পর্যন্ত বৃহস্পতির ৭৯টি উপগ্রহের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে ৫৩টির নামকরণ করা হয়েছে। এই ৫৩টি উপগ্রহের মধ্যে বৃহত্তম চারটি হল- আইও, ইউরোপা, গ্যানিমিড এবং ক্যালিস্টো৷ এই চারটি উপগ্রহই গ্যালিলিয়ান উপগ্রহ নামে পরিচিত।