ওজন মাত্র ৪০০ গ্রাম! দৈর্ঘ্য ৩০ সেন্টিমিটার, কী ভাবে লড়ল দেশের ‘ক্ষুদ্রতম’ শিশু শিবান্য

ওজন মাত্র ৪০০ গ্রাম! দৈর্ঘ্য ৩০ সেন্টিমিটার, কী ভাবে লড়ল দেশের ‘ক্ষুদ্রতম’ শিশু শিবান্য

পুণে: দেশের সবচেয়ে ছোট আকারের শিশু সে৷ জন্মের সময় শিশুটির দৈর্ঘ্য ছিল মাত্র ৩০ সেন্টিমিটার। মাত্র ২৪ সপ্তাহ মাতৃগর্ভে থাকার পরই পৃথিবীর আলো দেখে সে৷ এই শিশুকন্যার নাম রাখা হয়েছে শিবান্য।

আরও পড়ুন- মধ্যপ্রদেশে একসঙ্গে ভেঙে পড়ল বায়ুসেনার প্রশিক্ষণরত জোড়া বিমান, দুর্ঘটনা রাজস্থানেও

ঘটনাটি মহারাষ্ট্রের পুণা শহরের। জানা গিয়েছে, জন্মের পর তার ওজন আধ কিলোও পেরোয়নি। জন্মের সময় শিবান্যর ওজন ছিল মাত্র ৪০০ গ্রাম৷ সাধারণত, একটি সুস্থ শিশুর জন্মের সময় ওজন থাকে কমপক্ষে আড়াই থেকে সাড়ে ৪ কিলোগ্রাম। সেখানে শিবান্যর ওজন ৫০০ গ্রামেও পৌঁছয়নি। জন্মের পরই চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, এত কম ওজনে শিশুকে বাঁচানো সহজ হবে না৷ তবে তাঁরা হাল ছাড়েননি৷ চিকিৎসকদের চেষ্টায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে একরত্তি মেয়েটা। জন্মের পর থেকে তিন মাস হাসপাতালই ছিল তার ঠিকানা৷ অবশেষে সখান থেকে সুস্থ হয়ে মায়ের সঙ্গে বাড়ি গিয়েছে শিবান্য।

শিবান্যর মা উজ্জ্বলা পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। গর্ভাবস্থাতেই তিনি জানতে পেরেছিলেন, প্রসবের সময় কিছু সমস্যা তৈরি হতে পারে। সন্তান যে বাঁচবে, সেই আশাটুকুও করতে পারেননি তিনি। উজ্জ্বলা যখন ২৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা, তখন পুণের চিঞ্চওয়াড়ের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হন তিনি৷ সেখানেই তাঁর কোলে আসে শিবান্য। জন্মের পরেই তাঁকে নার্সিংহোম থেকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয়৷

এর পর থেকে শুরু হয় যুদ্ধ৷ পুণের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে মায়ের সঙ্গে টানা ৯৪ দিনের সংগ্রাম৷ কঠিন লড়াইয়ের শিবান্য যখন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেল, তখন তার ওজন ২ কেজি ১৩ গ্রাম।

উল্লেখ্য, ২৪ সপ্তাহে জন্মানে কোনও শিশুকে এই প্রথম বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হল। এর আগে ২০১৯ সালে আমদাবাদের হাসপাতালে ২২ সপ্তাহে এক শিশুর জন্ম হয়েছিল। জন ছিল ৪৯২ কিলোগ্রাম। শিবান্যের ওজন তার চেয়েও কম হয়েছিল। শিবান্যের মা বলেন, ‘‘যখন প্রথমবার মেয়ের মুখ দেখি তখন ওর চোখ বড় বড় করে খোলা ছিল। চোখ দেখেই আমি বুঝতে পেরেছিলাম, ও বাঁচবে। জীবনের লড়াইয়ে ও জিতবেই৷ সেটাই হয়েছে।’’

উজ্জ্বলা জানিয়েছেন, মেয়েকে বাঁচাতে হাসপাতালে ২১ লক্ষ টাকা তাঁদের খরচ হয়েছে। তবে তাতে কোনও দুঃখ নেই তাঁর৷ মেয়েকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে পেরেছে, সেটাই তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven − 10 =