সাগর থেকে ৫০০ কিমি দূরে সিত্রাং! সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু কলকাতায়, বইছে ঝোড়ো হাওয়া

সাগর থেকে ৫০০ কিমি দূরে সিত্রাং! সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু কলকাতায়, বইছে ঝোড়ো হাওয়া

d044d779c09b7eb224675f337eb141fd

কলকাতা: দীপাবলীর সকাল থেকেই কলকাতায়  আকাশের মুখ গোমরা। কালো মেঘে ঢাকা পড়েছে নীল আকাশ। দফায় দফায় হালকা বৃষ্টির সঙ্গে বইছে ঝোড়ো হাওয়া।

আরও পড়ুন- আন্দোলনের মাঝেই প্রাথমিকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, ‘বুমেরাং’ হবে না তো?

ঘণ্টায় ১২ কিলোমিটার গতিতে উত্তর এবং উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে চলেছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। এখন থেকেই সেই প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বঙ্গে৷ সোমবার পোর্ট ব্লেয়ার থেকে প্রায় ৭৭০ কিমি, সাগর থেকে ৫০০ কিমি এবং বরিশাল থেকে ৬৫০ কিমি দূরে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং।

গত ২০ অক্টোবর বঙ্গোপসাগরে যে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছিল ক্রমেই তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। সোমবার সেটি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে হাওয়া দফতরের পূর্বাভাস৷ আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যেই প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে সিত্রাং। ২৫ অক্টোবর অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালে বরিশালের কাছে তিনকোণা দ্বীপ এবং সন্দ্বীপের মধ্যে দিয়ে তা আছড়ে পড়তে পারে বাংলাদেশ উপকূলে। ফণি’, ‘আমপান’, ‘ইয়াস’-এর পর আরও এক ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’-এর তাণ্ডবের মুখে পড়বে বাংলাও।

এদিকে, পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, আগাম সতর্ক নবান্ন৷ উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে জেলাশাসকদের পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। উপকূলবর্তী এলাকা থেকে মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ক’দিন বিপর্যয় মোকাবিলা দলের ছুটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি মৎস্যজীবীদের জন্যেও লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে৷ সিত্রাং মূলত বাংলাদেশের ভূখণ্ডে আছড়ে পড়লেও, এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পড়বে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় জেলাগুলিতেও৷ সোম এবং মঙ্গলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া এবং হুগলিতেও। উপকূলবর্তী এলাকায় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১৪টি দল পাঠানো হয়েছে৷ বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১৪টি দলের মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনায় ২টি, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৪টি, পূর্ব মেদিনীপুরে ৩টি, কলকাতায় ২টি, পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলী এবং নদিয়াতে ১টি করে দল মোতায়েন করা রয়েছে। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় উপকূলবর্তী এলাকায় ক্রমাগত প্রাশাসনের তরফে মাইকিং করা হচ্ছে৷ 

আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, রবিবার রাতের পর থেকেই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়তে শুরু করবে দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকায়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে সুন্দরবন অঞ্চল। রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সোমবার দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। হাওয়ার সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৬০ কিমি৷ দুই ২৪ পরগনার পাশাপাশি ঝড়ের তাণ্ডব চলতে পারে পূর্ব মেদিনীপুরেও৷

দুই ২৪ পরগনায় ঘণ্টায় ৭০-৯০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে বলে জানাচ্ছে হাওয়া অফিস। ঝড়ের সর্বোচ্চ বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১০০ কিমি। পূর্ব মেদিনীপুরে হাওয়ার সর্বোচ্চ বেগ থাকবে ঘণ্টায় ৮০ কিমি। সিত্রাং তাণ্ডব চালাবে বাংলাদেশের ১৯টি জেলায়৷ সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে৷  

মঙ্গলবার ঝড়ের গতি আরও বাড়বে। ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে সমুদ্রের উপরে৷ গতিবেগ ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে৷ তবে মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে ঝড়বৃষ্টির দাপট কিছুটা কমবে। বুধবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হবে। বৃহস্পতিবার দেখা মিলবে সূর্যের।