কলকাতা: শীর্ষ আদালতের বিচারপতি হিসাবে সোমবার শপথ গ্রহণ করলেন বম্বে হাই কোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত৷ রবিবারই বিচারপতি দত্তকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। মাস তিনেক আগে তাঁর নাম সুপারিশ করেছিল সর্বোচ্চ আদালতের কলেজিয়াম৷ এই সিদ্ধান্তের ফলে আরও এক বাঙালি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব নিলেন। ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কর্টে নিজের কর্তব্য পালন করছেন কলকাতা হাই কোর্ট থেকে আসা বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু৷ রয়েছেন বিচারপতি হৃষীকেশ রায়ও৷
আরও পড়ুন- মেডিক্যাল কলেজে গেলেন চন্দ্রিমা, দিন না বললেও ছাত্র নির্বাচন নিয়ে বড় আশ্বাস
১৯৬৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় জন্ম বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের। তাঁর পরিবারও আইনের সঙ্গে যুক্ত৷ বিচারপতি দত্তর বাবা প্রয়াত সলিলকুমার দত্ত ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি৷ সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অমিতাভ রায় তাঁর ভগ্নীপতি৷ কলকাতা হাই কোর্টের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ১৯৮৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন বিচারপতি দত্ত। ওই বছরই ১৬ নভেম্বর থেকে অ্যাডভোকেট হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কৌঁসুলি হিসেবেও সুপ্রিম কোর্টে ওকালতি করেছেন। রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশন-সহ শিক্ষা জগতের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেছেন৷ ২০০২ সালের ১৬ মে থেকে ২০০৪ সালের ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জুনিয়র স্ট্যান্ডিং কাউন্সেল৷ ২০০৬ সালে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করার পর ২০২০ সালে বোম্বে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হন। সেই সময় তিনি একাধিক তাৎপর্যপূর্ণ রায় দিয়েছিলেন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের ছাত্র থাকাকালীন শটপাট ও জ্যাভলিনে প্রথম স্থান ছিল তাঁর বাধা৷ আড়াই বছর আগে কলকাতা হাই কোর্ট থেকে বম্বে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে বদলি হয়ন বিচারপতি দত্ত৷ সেই সময় দেশজুড়ে কোভিড পরিস্থিতি৷ চলছে লকডাউন৷ বিমান, ট্রেন সব বন্ধ। সেই সময় গাড়ি চেপে প্রায় দু’হাজার কিলোমিটার রাস্তা পার করে কলকাতা থেকে মুম্বই পৌঁছেছিলেন তিনি। ছেলের সঙ্গে পালা করে গাড়ির স্টিয়ারিং ধরেছিলেন তিনিও।
কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি থাকাকালীন পাড়ুই-মামলায় তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের প্রতি পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষপাতিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি দত্তি। বম্বে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে কোভিডের সময়ে চিকিৎসা সংক্রান্ত সাহায্য, লকডাউনের ফলে সমস্যায় পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরাহা, বয়স্ক ও বিশেষ ভাবে সক্ষমদের বাড়ি গিয়ে টিকাকরণ, সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যু নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কাটাছেঁড়া, মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই তদন্ত, মহারাষ্ট্র পুলিশের কনস্টেবল পদে তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের আবেদনের সুযোগের মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলায় রায় দিয়েছেন।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>