কলকাতা: চলচ্চিত্র পরিচালক তরুণ মজুমদারের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ স্ত্রী সন্ধ্যা রায়৷ চোখের যেন জল বাঁধ মানছে না তাঁর৷ অবস্থা সঙ্কটজনক শোনার পরেই ছুটি গিয়েছিলেন হাসপাতালে৷ কিন্তু, শেষ দেখাটুকু হয়নি৷ কারণ এসএসকেএম হাসপাতালে বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে ছিলেন বর্ষীয়ান এই পরিচালক৷ সেখানে সকলের প্রবেশ যে নিষিদ্ধ৷ প্রথমসারির এক বাংলা দৈনিককে সন্ধ্যা জানান, বহু দিন দেখা নেই তাঁদের৷ কথাও নেই৷ সন্ধ্যা বলেন, বড় কাজ পাগল ছিল মানুষটা। দিন কয়েক আগেও ঝাড়গ্রামে লোকেশন দেখতে গিয়েছিলেন। ফিরে এসেই অসুস্থ হয়ে পড়েন।
আরও পড়ুন- শিল্পী গড়ার কারিগড় ছিলেন উনি, আমার বাবা চলে গেল, তরুণ প্রয়াণে অঝোরে কাঁদছেন দেবশ্রী
এদিকে স্বামীর অসুস্থতার পর থেকেই নাওয়া-খাওয়া ভুলে ঠাকুর ঘরে হত্যে দিয়েছেন বর্ষয়ীন অভিনেত্রী৷ একটাই প্রার্থনা ছিল, মানুষটা যেন ঘরে ফিরে আসেন৷ কিন্তু সেটা যে আর হওয়ার নয়, বোঝার পরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি৷ সন্ধ্যা বলেন, ‘‘আজকাল আমরা বাইরে বাইরেই বেশি থাকতাম। উনি বেঙ্গালুরু, চেন্নাই। আমি দিল্লি কিংবা মেদিনীপুর। তাই কাজ নিয়ে কথা বলা বা দেখা সাক্ষাতের সুযোগটুকুও সেই ভাবে হত না।’’
তরুণ মজুমদার শুধু সন্ধ্যা রায়ের স্বামীই ছিলেন না৷ ছিলেন পরিচালক ও গুরু৷ এক সঙ্গে কাজ করতে করতেই প্রেম। তার পর বিয়ে। বিনোদন জগতে পরিচালক ও নায়িকার প্রেম-পরিণয় নতুন নয়। তবে তরুণ-সন্ধ্যার এই জুটি বহু ভাল ছবি ও নতুন নায়ক-নায়িকার জন্ম দিয়েছে। মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় থেকে রাখী গুলজার, মহুয়া রায়চৌধুরী, তাপস পাল, অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবশ্রী রায়, নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ শিল্পীরা ছিলেন তরুণ মজুমদারেরই আবিষ্কার। ফাস্ট লুক থেকে প্রত্যেক নায়িকাকে যত্ন করে নিজের হাতে তৈরি করতেন সন্ধ্যা নিজে। দু’জনে মিলে তাঁদের অভিনয়ের প্রশিক্ষণ দিতেন৷ যার ফলশ্রুতি ছিল এক গুচ্ছ জনপ্রিয় ছবি। স্বামীর প্রয়াণের পর সেই পুরনো স্মৃতিতেই ডুব দিলেন সন্ধ্যা৷
তিনি বলেন, প্রাণ প্রাচুর্যে ভরা ছিলেন উনি৷ কাজ ছাড়া থাকতে পারতেন না৷ ইচ্ছা ছিল শচীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘জনপদবধূ’ উপন্যাস নিয়ে ছবি বানাবেন৷ নায়িকা হিসাবে প্রথম পছন্দ ছিল ঋতুপর্ণা৷ কিন্তু সেই ইচ্ছে আর পূরণ হল না৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>