কলকাতা: গত ২৬ জানুয়ারি থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রবাদ প্রতিম সঙ্গীত শিল্পী। পর দিন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে গ্রিন করিডোর করে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছিল তাঁর। পরবর্তী ক্ষেত্রে কোভিড আক্রান্ত হন তিনি, যদিও সেরে ওঠেন। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হল না। কিছু দিন আগেই দেশের সঙ্গীত জগতের অনন্য নক্ষত্র লতা মঙ্গেশকরকে হারিয়েছে দেশ, আজ আরও এক নক্ষত্র পতন। আধুনিক বাংলা গানের শ্রেষ্ঠ কণ্ঠগুলির মধ্যে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, শ্যামল মিত্র, মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়রা একে একে চলে গিয়েছেন অনেক আগে। আজ চলে গেলেন ‘গীতশ্রী’।
আরও পড়ুন- গরুপাচার-কাণ্ডে নিজাম প্যালেসে CBI দফতরে দেব, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ
১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবর কলকাতার ঢাকুরিয়ায় জন্ম সন্ধ্যার৷ তাঁর বাবা নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ছিলেন রেলের কর্মকর্তা৷ মায়ের নাম হেমপ্রভা দেবী৷ ছয় ভাইবোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ তিনি৷ পণ্ডিত সন্তোষ কুমার বসু, অধ্যাপক এটি ক্যানন এবং অধ্যাপক চিন্ময় লাহিড়ীর কাছে সঙ্গীত শিক্ষা লাভ করেন গীতশ্রী। তবে তাঁর গুরু ছিলেন উস্তাদ বড়ে গোলাম আলি খান৷ তাঁর পুত্র উস্তাদ মুনাওয়ার আলি খানের ছত্রছায়ায় ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিখেছিলেন তিনি৷ শাস্ত্রীয় সঙ্গীত থেকে আধুনিক বাংলা গানের জগতে তাঁর সুরের বিস্তার৷ তাঁর কন্ঠে প্রাণ পেয়েছে অগণিত গান৷ তাঁর ঝুলিতে রয়েছে জাতীয় পুরস্কার৷ ১৯৭১ সালে ‘জয় জয়ন্তী’ এবং ‘নিশিপদ্ম’ ছবির জন্য এই পুরস্কার পান সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়৷ ২০১১ সালে তাঁকে ‘বঙ্গবিভূষণ’ উপাধিতে সম্মানিত করে রাজ্য সরকার৷ প্রায় গোটা জীবন সঙ্গীতের জগতে অতিবাহিত করেছেন তিনি৷
বাংলার পাশাপাশি সন্ধ্যা কাজ করেছেন মুম্বই ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রিতেও৷ ১৯৫০ সালে ‘তারানা’ ছবির একটি গান দিয়ে বলিউডে গান গাওয়া শুরু তাঁর। এর পর ১৭টি হিন্দি ছবিতে প্লেব্যাক করেছেন৷ ব্যক্তিগত কারণে ১৯৫২ সালে কলকাতায় ফিরে আসেন৷ ১৯৬৬ সালে তিনি বাঙালী কবি শ্যামল গুপ্তের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে বাঁধা পড়েন৷ শ্যামল গুপ্ত তাঁর অনেক গানের কথা লিখে দিয়েছিলেন। বাংলা বিনোদন জগতে অন্যতম সেরা ছিল হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের জুটি৷