অনিল থেকে আক্রম, একাধিক হেভিওয়েট প্রেম! বিয়ে থেকে ‘বেঁচেছেন’ তিন বার, সেই সুস্মিতায় মগ্ন ললিত

অনিল থেকে আক্রম, একাধিক হেভিওয়েট প্রেম! বিয়ে থেকে ‘বেঁচেছেন’ তিন বার, সেই সুস্মিতায় মগ্ন ললিত

মুম্বই: মডেলিং নিয়ে তেমন কোনও আগ্রহ ছিল না তাঁর৷ কৌতূহলবশতই মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতার ফর্ম পূরণ করেছিলেন। আর সেখান থেকেই ঘোরে জীবনের মোড়৷ 

আরও পড়ুন- ললিতের টুইটে প্রেমের ছোঁয়া! পলাতক ললিতের প্রেমে বঙ্গতনয়া সুস্মিতা সেন! নিভৃতে প্রেম করছেন তাঁরা?

মাত্র ১৮ বছর বয়সে মিস ইন্ডিয়া৷ তারপর মিস ইউনিভার্স। ২০ বছর বয়সে পা রাখেন মায়ানগরীর বিনোদন দুনিয়ায়৷ বলিউডের কেরিয়ার তেমন চমকপ্রদ না হলেও,  ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে হামেশাই চর্চায় থাকেন বঙ্গতনয়া সুস্মিতা সেন। একাধিক সম্পর্ক, প্রেম, বিয়ের খুব কাছে পৌঁছেও ফিরে আসা৷ মিস ইউনিভর্সের জীবন যেন কোনও চিত্রনাট্য৷ 

susmita

১৯৭৫ সালের নভেম্বর মাসে হায়দরাবাদের এক বাঙালি পরিবারে জন্ম সুস্মিতার। বাবা সুবীর সেন ছিলেন ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার। মা শুভ্রা সেন একজন জুয়েলারি ডিজাইনার। দুবাইতে নিজস্ব দোকানও রয়েছে তাঁর। মডেলিং-এর প্রতি গভীর টান থেকে নয়, নেহাতই কৌতূহলবশত মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন সুম্মিতা। সালটা ১৯৯৪৷ ঐশ্বর্যা রায়কে হারিয়ে ‘মিস ইন্ডিয়া’ খেতাব জেতেন বঙ্গ তনয়া৷ ওই বছরই মাত্র ১৮ বছর বয়সে  ‘মিস ইউনিভার্স’ হন তিনি।

এর পর ১৯৯৬ সালে ‘দস্তক’ ছবি দিয়ে বলিউডে অভিষেক সুস্মিতার। তারপর ‘বিবি নম্বর ওয়ান’, ‘সির্ফ তুম’, ‘ফিজা’, ‘আঁখে’, ‘ম্যায় হু না’-র মতো অসংখ্য ছহিতে অভিনয়৷ কেরিয়ারে চমকপ্রদ সাফল্য আসেনি৷ তবে সর্বদাই লাইমলাইট কেড়েছে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন৷ ইন্ডাস্ট্রি বা ইন্ডাস্ট্রির বাইরের একাধিক নামীদামি ব্যক্তিত্বের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের গুঞ্জনে সর্বদাই সরগরম থেকেছে বি-টাউন৷ 

রণদীপ হুডা থেকে মুম্বইয়ের রেস্তরাঁর মালিক রিতিক ভাসিন, পরিচালক বিক্রম ভাট৷ কখনও আবার তাঁর নাম জড়িয়েছে বয়সে অনেকটা ছোট রহমান শলের সঙ্গে৷ তবে সুস্মিতার জীবনে প্রথম প্রেম রজত তারা। তখনও তিনি বিশ্বসুন্দরী নন৷ দিল্লিবাসী, সদ্যতরুণী সুস্মিতা রজতের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। সে সম্পর্ক অবশ্য বেশি দিনের নয়৷ 

‘কর্মা অ্যান্ড হোলি’ ছবির শ্যুটে সুস্মিতার সঙ্গে আলাপ হয় রণদীপ হুডার৷ বন্ধুত্ব থেকে প্রেম। সেই সময় রীতিমতো শোরগোল ফেলেছিল তাঁদের এই সম্পর্ক। যতটা গর্জন শোনা গিয়েছিল, ততটা বর্ষণ কিন্তু হয়নি৷ অল্পদিনের মধ্যেই সম্পর্ক ভাঙে। 

susmita

রণদীপের আগে সুস্মিতার জীবনে এসেছিলেন পরিচালক বিক্রম ভাট৷ জীবনের প্রথম ছবি ‘দস্তক’-এ কাজ করতে গিয়েই বিক্রমের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন অভিনেত্রী। সেই সময় বিক্রম বিবাহিত৷ সুম্মিতার সঙ্গে সম্পর্কের জেরেই নাকি ঘর ভেঙেছিল পরিচালকের! বিক্রম ভাটের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর বঙ্গ তনয়ার নাম জড়ায় হোটেল মালিক সঞ্জয় নারাংয়ের সঙ্গে। সেই সম্পর্কের জলও বেশি দূর গড়ায়নি। অচিরেই ঘটে ছন্দপতন৷ 

susmita

সঞ্জয়ের পর বহু পুরুষ এসেছে সুস্মিতার জীবনে৷ কখনও বান্টি সচদেব, কখনও হটমেলের প্রতিষ্ঠাতা সাবির ভাটিয়া, কখনও পরিচালক মুদস্‌সর আজিজ, কিংবা মানব মেনন৷ কিন্তু সেই অর্থে কোনও সম্পর্কই দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। তবে পাক ক্রিকেটার ওয়াসিম আক্রমের সঙ্গে সুস্মিতা সেনের সম্পর্কের খবর যে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। ২০০৮ সালে একটি রিয়্যালিটি শোয়ের সেটে দুই তারকার পরিচয়।  দু’জনেই ছিলেন ওই শোয়ের বিচারক৷ 

susmita

২০০৯ সালে মারা যান আক্রমের স্ত্রী৷ এর পর আরও বেশি যেন একে অপরের কাছে চলে আসেন আক্রম-সুস্মিতা। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁদের দু’জনকে এক সঙ্গে দেখা গিয়েছিল। তবে কখনই নিজেদের সম্পর্কের কথা সরাসরি স্বীকার করেননি তাঁরা। কিন্তু, বলিপাড়ায় কান পাতলে শোনা যায়, পাকিস্তানি তারকা ক্রিকেটার ওয়াসিম আক্রমকে নাকি বিয়েও করেছিলেন অভিনেত্রী!

সুম্মিতার আরও একটি প্রেম শোরগোল ফেলেছিল৷  অনিল অম্বানীর সঙ্গে বঙ্গতনয়ার ঘনিষ্ঠতা কেড়েছিল যাবতীয় ফোকাস। শোনা যায়, অনিলের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী টিনা মুনিমের সম্পর্কে দূরত্বের ফাঁক গলেই তাঁর মনে জায়গা করে নেন বিশ্বসুন্দরী। সুস্মিতার প্রেমে এতটাই মজেছিলেন অনিল যে, তাঁকে ২২ ক্যারাটের হিরের আংটি উপহার দেন৷  এ-ও শোনা যায় যে, সুস্মিতার প্রেমে অনিল এতটাই পাগল হয়ে উঠেছিলেন যে, টিনাকে ডিভোর্স দিতে উঠেপড়ে লেগেছিলেন৷ কিন্তু, টিনা তাঁকে ডিভোর্স দেননি। অবশেষে পরিবারের হস্তক্ষেপে সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন অনিল আম্বানী৷ 

susmita

এর পর সুম্মিতার জীবনে এন্ট্রি নেন তাঁর চেয়ে বয়সে অনেক ছোট মডেল রহমান শল৷ রহমানের সঙ্গে টানা তিন বছর সম্পর্কে ছিলেন সুস্মিতা। রহমানের সঙ্গে তাঁর দুই কন্যার সম্পর্কও বেশ মধুর ছিল বলে শোনা যায়৷ মাঝে মধ্যেই একসঙ্গে ছুটি কাটাতে বেরিয়ে পড়তেন চারজন৷  কিন্তু, গত বছর আচমকাই সেই সম্পর্কে ইতি টানেন অভিনেত্রী।

সুস্মিতা

বৃহস্পতিবার ফের ব্যক্তিগত জীবনের জন্য শিরোনামে উঠে আসেন বঙ্গ তনয়া৷ এ বার তাঁর নাম জড়ায় প্রাক্তন আইপিএল কর্তা ললিত মোদীর সঙ্গে৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় গুচ্ছ ছবি পোস্ট করে নিজেদের সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে আনেন ললিত নিজে৷ পরিবারের সঙ্গে মলদ্বীপ এবং সার্ডিনিয়ায় ছুটি কাটানোর ছবি শেয়ার করার ফাঁকেই সুস্মিতার সঙ্গে তাঁর ছবি পোস্ট করেন প্রাক্তন আইপিএল কর্তা৷ এমনকী অভিনেত্রীকে নিজের ‘বেটার হাফ’ বলেও উল্লেখ করেন। আর সেই পোস্টেই যত শোরগোল৷ তার উপর সুস্মিতার হাতে বিরাট হীরের আংটি দেখে অনেকেই ধরে নেন বাগদান পর্বও সাড়া হয়ে গিয়েছে তাঁদের৷ যদিও সেই ভুল ভেঙে অপর এখটি পোস্টে ললিত জানান, আপাতত ডেট করছেন তাঁরা৷ 

সুস্মিতা

সুস্মিতা চিরকালই নিজের ছন্দে বেঁচেছেন। জীবনে একাধিক পুরুষ-সঙ্গী এলেও, কখনও তা গোপন করেননি৷ সম্পর্ক নিয়ে তিনি বরাবরই খোলামেলা৷ ক্যামেরার সামনেও তা স্বীকার করতে দ্বিধা করেননি৷ দিন কয়েক আগে অভিনেত্রী নিজে জানিয়েছিলেন, জীবনে কয়েক বার তাঁর বিয়ে হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু, শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদলান। ওগুলোই তাঁর জীবনের সবচেয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল বলেও জানান বঙ্গ তনয়া সুস্মিতা সেন।