মুম্বই: সুশান্তের আত্মহত্যার পর থেকে সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে রিয়া চক্রবর্তী। একের পর এক অভিযোগ উঠছে তাঁর নামে। তাঁর বিরুদ্ধে সুশান্তের বাবা কে কে সিং অভিযোগ করেছিলেন। যার কারণে রিয়া চক্রবর্তীর সমস্যায় জড়িয়ে পড়েন। সুশান্ত সিংহের বাবা রিয়ার বিরুদ্ধে সুশান্তকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া ও আর্থিক তছরূপের অভিযোগ এনেছিলেন। এরপরই শুরু হয় তদন্ত। মামলা যায় সিবিআইয়ের হাতে। আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্ত শুরু করে ইডি। জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে রিয়া ও সুশান্তের সঙ্গে ড্রাগ চক্রের যোগাযোগের অভিযোগ। মামলায় ঢোকে নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। মঙ্গলবার এই সংস্থার হাতেই গ্রেপ্তার হন রিয়া। কিন্তু কে এই রিয়া?
রিয়ার জন্ম ১৯৯২ সালের ১ জুলাই, বেঙ্গালুরুতে। বাবা ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন অফিরাস। ছোট থেকেই তাই আর্মি স্কুলে পড়াশোনা করেছেন রিয়া। আম্বালার সেনানিবাসের 'আর্মি পাবলিক স্কুল' থেকে তিনি পড়াশোনা করেন তিনি। ছোট থেকেই ব্রাইট ছাত্রী ছিলেন রিয়া। কোনওদিন চলচ্চিত্র বা টিভিতে উপস্থিত হওয়ার কোনও ইচ্ছা ছিল না তাঁর। কিন্তু একবার তিনি একটি এমটিভি সিরিয়ালের জন্য অডিশন দিয়েছিলেন। যেখানে তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর এমটিভিতে পেপসি এমটিভি ওয়াসাপ, টিকট্যাক কলেজ বিট এবং এমটিভি গোন ইন ৬০ সেকেন্ডসের মতো অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছিল রিয়াকে। গ্ল্যামার দুনিয়ায় রিয়ার এই প্রবেশ।
এছাড়া সিরিয়াল টিভিএস স্কুটি টিন দিউতে আত্মপ্রকাশ করেন রিয়া। এই সিরিয়ালে তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়ে। তিনি আয়ুষ্মান খুরানার অ্যালবাম “ও হেরিয়ে”তেও কাজ করেছেন। ২০১২ সালে তিনি তামিল ছবিতে কাজ করেছিলেন। ছবির নাম 'তুনিগা তুনিগা'। এটিই তাঁর ফিল্ম ডেবিউ। এরপরই তিনি বলিউড ছবিতে চলে আসেন। বলিউডে তাঁর প্রথম ছবি মুক্তি পায় ২০১৩ সালে। ছবির নাম 'মেরে ডেড কি মারুতি'। এছাড়াও তিনি আরও ৬টি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, 'সোনালি কেবল', 'ব্যাংক চোর', 'হাফ গার্লফ্রেন্ড'। 'হাফ গার্লফ্রেন্ড' ছবিতে তিনি অতিথি শিল্পী হিসেবে কাজ করেছিলেন। রিয়া ২০১৮ সালে 'জলেবি' করেছিলেন। ছবিটি আলোচিত হলেও এতে তিনি কোনও বিশেষ স্বীকৃতি পাননি।
আরও পড়ুন: মুম্বই পুলিশের বিরুদ্ধে 'অপমানসূচক' মন্তব্য, কঙ্গনাকে আইনি নোটিস প্রাক্তন পুলিশকর্তার
রিয়া বাঙালি। অতএব কলকাতার সঙ্গে তাঁর যোগসূত্র ছিল কিনা, তা নিয়ে প্রচুর আলোচনা হয়েছে। সত্যিই কলকাতার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল রিয়ার। কবি নজরুল মেট্রো স্টেশনের খুব কাছেই একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে রিয়ার পরিবারের। গড়িয়ার রামকৃষ্ণ নগরের ভিক্টোরিয়া গ্রিনস আবসনের এ৬ টাওয়ারের ৩০২ নম্বর ফ্ল্যাটটি কিনেছিলেন অভিনেত্রীর ঠাকুরদা শিশির চক্রবর্তী। তাঁর দুই ছেলের নামে এই আবাসন কেনা হয়েছিল। বর্তমানে এই আবাসনের পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি রয়েছে রিয়ার মা সন্ধ্যা চক্রবর্তীর নামে। যদিও কোনওদিনই রিয়ার পরিবারের কেউ কলকাতায় বসবাস করেনি। শেষ ২০১৮ সালে শুধু একবারের জন্যই কলকাতায় এসেছিলেন রিয়ার মা ও বাবা। রক্ষণাবেক্ষণের হিসাব সামলে ব্রোকারের মাধ্যমে ওই ফ্ল্যাটটি ভাড়া দিয়ে দেন তাঁরা। এরপর আর কখনওই সেখানে আসেননি রিয়া কিংবা তাঁর পরিবার।