কলকাতা: সকলকে ‘আলবিদা’ জানিয়ে আচমকাই না ফেরার দেশে তারকা শিল্পী কৃষ্ণকুমার কুনাথ ওরফে কেকে৷ বন্ধুর অকাল প্রয়াণ শোকাহত তাঁর কলেজ জীবনের বন্ধু গৌতম চিকারমানে৷ কেকের সঙ্গে একই ব্যন্ডে কাজ করতেন তিনি৷ শিল্পীর মৃত্যুর পর তিনি ডুব দিলেন পুরনো স্মৃতির জগতে৷ লিখলেন, ‘আমি এখনও পর্যন্ত এমন কাউকে দেখিনি যিনি কেকের গান ভালবাসেন না। একটা সাধারণ টি-শার্ট আর জিনস পরে ও স্টেজে উঠে যেত। আর শীতকাল হলে একটা চামড়ার জ্যাকেট জড়িয়ে নিত। প্রতিটি কনসার্টে ও এমন ভাবে পারফর্ম করত যেন ওটাই ওঁর জীবনের শেষ পারফরম্যান্স।’
আরও পড়ুন- হোটেলের লবিতে কেকে! মৃত্যুর কয়েক মিনিট আগের ফুটেজ দেখে চোখে জল ভক্তদের
বর্তমানে অবজার্ভার রিসার্চার ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি গৌতম চাকারমানে। দীর্ঘ দিনের সহপাঠী, সঙ্গীতের সহকর্মী কেকের আকস্মিক প্রয়াণ তাঁর মনেও গভীর দাগ কেটে গিয়েছে। বন্ধুর মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পরেই দীর্ঘ টুইটে তিনি ডুব দেন স্মৃতির সাগরে৷ গৌতম লেখেন, তিনি যেন এখনও চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছেন বন্ধুকে। তিনি জানান, কেকে ব্যান্ড ছাড়ার পর ৩ বার তাঁর লাইভ শো দেখতে গিয়েছিলেন গৌতম। হাতে সময় কম থাকতেও অডিটোরিয়াম থেকে পা সরেনি তাঁর৷ কোনও বারই মাঝ পথে কেকে-র শো ছেড়ে উঠে আসতে পারেননি তিনি৷ কেকের কণ্ঠে ছিল এমনই এক দুর্বার আকর্ষণ। সে এক অদ্ভুত অনুভূতি! ’’ তাই তিনি বোঝেন তাঁর অনুরাগীদের অনুভূতি৷ কলেজের শেষ দিন ‘ইয়াদ আয়েঙ্গে ইয়ে পল’ হোক বা বন্ধুদের নিয়ে ‘ইয়ারো দোস্তি’, অসংখ্য স্মৃতি বাঁধা পড়ে রয়েছে ওঁর গানে৷
গৌতম জানান, তখন তাঁরা দিল্লির কিরোরি মাল কলেজের ছাত্র৷ যে ব্যান্ডের সঙ্গে গৌতম যুক্ত ছিলেন, সেই ব্যান্ডেরই প্রধান গায়ক এবং ড্রামার ছিলেন কেকে। আইআইটি কানপুর থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন কলেজে তাঁরা একসঙ্গে অনুষ্ঠান করেছেন৷ তাঁর কথায়, ডাক আসতেই থাকত৷ আর গানের নেশাতেই কখনও চাকরির চেষ্টা করে উঠতে পারেননি কেকে। এর জন্য আর্থিক টানাটানিও হয়েছে৷ কঠিন সময়ের মধ্যে যেতে হয়েছে কেকে-কে৷ তবু গান ছাড়তে পারেননি৷ এমনও দিন গিয়েছে, যখন দু’মুঠো অন্নের জন্য প্রিয় টাইপরাইটার বিক্রি করতে হয়েছিল ওঁকে। গৌতম বলেন, শাহরুখ খানের মতো কেকেও এক দিন মেরিন ড্রাইভে দাঁড়িয়ে ভেবেছিলেন, এই মুম্বই কি তাঁকে জায়গা করে দেবে?
মুম্বই শুধু তাঁকে জায়গাই দেয়নি৷ জড়িয়ে রেখেছিল ভালোবাসায়৷ গৌতম জানান, সঙ্গীতে প্রথাগত প্রশিক্ষণ ছিল না কেকের। কিন্তু তিনি যে স্কেলে গাইতেন, বহু গায়ক সাধনা করেও সেই স্কেলে গলা তুলতে পারেন না। কলকাতাতেও বহু বার অনুষ্ঠান করতে এসেছেন৷ বলতেন, কলকাতা নাকি তাঁর প্রিয় শহর। মঙ্গলবার সেই প্রিয় শহরেই যে তাঁর শেষ অনুষ্ঠান হবে কে ভেবেছিল!
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>