মুম্বই: ওয়েব সিরিজে ট্রান্স মহিলা কুকু-এর চরিত্রে অভিনয় করে নজর কেড়েছেন অভিনেত্রী কুবরা সাইত৷ ‘সেক্রেড গেমস’ খ্যাত অভিনেত্রী এবার ফাঁস করলেন নিজের ব্যক্তিগত জীবনের কথা৷ ‘ওপেন বুক: নট কোয়াইট আ মেময়ার’ নামে বইয়ের পাতায় সাজিয়ে দিলেন নিজের জীবনের নানা অভিজ্ঞতার কথা৷ সেখানেই তিনি জানিয়েছেন, মাত্র ১৭ বছর বয়সে কী ভাবে যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয়েছিল তাঁকে৷
আরও পড়ুন- নিজের কথায়-সুরে রূপঙ্করের গাওয়া গানের লিরিক পাল্টে কেকে বন্দনা সুমনের
প্রায় দুই দশক পর কৈশরের যৌন হেনস্থার বিভীষিকা বর্ণনা করতে গিয়ে কুবরা লিখেছেন, মায়ের ‘বিপদের বন্ধু’ সেজে পরিবারের ঘনিষ্ঠ উঠেছিলেন এক ব্যক্তি। মায়ের সেই বন্ধুর হাতেই একাধিকবার যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয়েছিল তাঁকে। তখন কুবরার বয়স মাত্র ১৭৷ তিনি জানান, প্রায় আড়াই বছর ধরে এই শোচনীয় যন্ত্রণা সইতে হয়েছিল। মুখ ফুটে মাকে বলার মতো সাহস পাননি। কারণ মুখ খুললে তাঁর পরিবারকে শেষ করে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দিতেন ওই ব্যক্তি।
সেই সময় মুখ খুলতে না পারলেও নিজের বইয়ে সব যন্ত্রণা উগড়ে দিয়েছেন কুবরা৷ জানান, সেই সময় প্রায়শই বেঙ্গালুরুর একটি রেস্তোরাঁয় পরিবারের সঙ্গে যেতেন তিনি। ওই রেস্তোরাঁ মালিকের সঙ্গেই তাঁদের পারিবারিক ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। সেই সুযোগে শুরু হয় বাড়িতে যাতায়াত৷ ওই ব্যক্তি অভিনেত্রীর মাকে আর্থিকভাবেও নাকি সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু, সাহায্য করার পরেই ওই ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে অভব্য আচরণ শুরু করেন। তিনি বিবাহিত ছিলেন। তাঁর এক সন্তানও ছিল৷ আড়াই বছরের মধ্যেই আরও এক সন্তান হয়।
কুবরা জানান, প্রথমবার গাড়ির পিছনের সিটে বসে থাকার সময় তাঁর নোংরা মানসিকতার আঁচ পান তিনি। তাঁর পোশাকের নীচে হাত ঢুকিয়ে দেন ওই রোস্তোরা মালিক। থাইয়ের উপর হাত ঘষতে শুরু করেন। এই পরিস্থিতিতে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন কিশোরী কুবরা। এরপর তাঁদের বাড়িতে শুরু হয় নিয়মিত যাতায়াত৷ ফাঁক পেলেই তাঁর গালে চুমু দেওয়া থেকে গায়ে হাত, সবটাই চলত। কুবরার মা মুখের আড়ালে নোংরা চেহারাটা ধরতে পারেননি৷ তিনি ভাবতেন পুরোটাই স্নেহের বশে করছেন৷
ওই বইয়ের একটি প্রচ্ছদে কুবরা জানিয়েছেন, একদিন তাঁকে সঙ্গে নিয়ে হোটেলে যান ওই ব্যক্তি। সেখানে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে৷ ওই ব্যক্তি গালে হাত ঘষতে ঘষতে ঠোঁটের উপর ঠোঁট চেপে ধরেন৷ প্রচণ্ড ভয়ে পেয়ে যান অভিনেত্রী৷ চিৎকার করে পালাতে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু, পারেননি। কিশোরী কুবরা বুঝে উঠতে পারছিলেন না কী ভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবেন! তাঁর কথায়, ‘ও আমায় বোঝানোর চেষ্টা করে, সবটা ভালো লাগবে৷ বুঝতে পারছিলাম না কী করা উচিত। আমার ঠোঁটের উপর ওর ঠোঁট৷ আমাকে ঠেসে ধরে নিজের প্যান্ট খুলে ফেলেন। বুঝতে পারি, আমার উপর যৌন হেনস্থা হতে চলেছে।’
তিনি জানান, তাঁর সঙ্গে অশান্তির জন্য তাঁর পারিবারকে আর্থিক সাহায্য করাও বন্ধ করে দিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। এমনকি তাঁর পরিবারের ক্ষতি করার হুমকিও দেন। এর জন্য মায়ের বকুনিও খেতে হয়েছে তাঁকে৷ এত বছর পর সব পর্দা ফাঁস সরিয়ে সত্য সামনে নিয়ে এলেন অভিনেত্রী নিজেই৷