কলকাতা: সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে শোকাহত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেলভিউ হাসপাতালে গিয়ে দেখা করলেন তাঁর পরিবারের সঙ্গে৷ অভিনেতার প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করলেন তিনি৷ হাসপাতালে পৌঁছনোর পর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কন্যা পৌলমীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি৷ সঙ্গে রয়েছেন অরূপ বিশ্বাস, মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব৷ তাঁর পরিবারে তো বটেই আপামর বাঙালির কাছে আজ অতি বেদনার দিন৷ ‘আইকনিক হিরোকে’ হারাল বংলা৷
আরও পড়ুন-শ্রীমান অপূর্ব, কবি, নাট্যকার, সম্পাদক, চিত্রকর, সাহিত্যিক ও শিল্পীকে শ্রদ্ধা
বাংলা ছবির এই কিংবদন্তী অভিনেতার প্রয়াণে ব্যাথিত হৃদয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সৌমিত্র দা বাংলা তথা বিশ্ব চলচ্চিত্র জগতের শুধু মহানায়কই নন, এক মহান প্রতিভাবান ব্যক্তিত্ব৷ একজন বরণীয় মানুষ যিনি চলচ্চিত্র, নাটক, কবিতার বাইরে বেরিয়ে বার বার ছুটে গিয়েছেন গণআন্দোলন, মানবিক আন্দোলনে৷’’ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে যখন ওঁনার শেষ কথা হয়, তখন আমি মেদিনীপুরে৷ উনি কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর ওঁনার সঙ্গে কথা হয়েছি৷ সেই সময় ওঁনার কণ্ঠস্বর শুনে আমার মনে হয়েছিল উনি স্থিতিশীল৷ তিনি কোভিডের কাছে হার মানেননি৷ পারিপার্শ্বিক সমস্যা ছিল সৌমিত্রদার৷ বিশিষ্ট চিকিৎসক এবং সরকারের বিশেষ চিকিৎসক প্যানেলও ছিল৷ সকলেই সাধ্যমতো চেষ্টা করেছে৷ কিন্তু আমরা তাঁকে ধরে রাখতে পারিনি৷’’
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, জন্ম হলে মৃত্যু হবেই৷ এটাই কঠিন বাস্তব৷ আজ আমরা হারালাম একটা অধ্যায়কে৷ তিনি বলেন, ‘‘একজন মানুষ তৈরি হতে সময় লাগে৷ যে জায়গায় সৌমিত্র দা পৌঁছেছিলেন, সেখানে পৌঁছতে অনেক সময় লাগে৷ তাঁর প্রয়াণ খুবই বেদনাদায়ক, মর্মস্পর্শী৷ আজ বাংলার দুঃখের দিন৷ চলচ্চিত্র জগতে আজ শোকের ছায়া৷ আমরা কেওড়াতলা মহাশ্মশানে তাঁকে গান স্যালুট দিয়ে শেষ সম্মান জানাব৷ ’’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সৌমিত্র দা পার্থিব শরীর ছেড়ে চলে গিয়েছেন ছিকই৷ কিন্তু তাঁর কাজ, তাঁর প্রাণের উদ্দীপনা থেকে যাবে৷ সৌমিত্র দা’র বিকল্প সৌমিত্র নিজেই৷ এই জায়গা কেউ পূরণ করতে পারবে না৷’’
আরও পড়ুন- BIG BREAKING: প্রয়াত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সংসার ছাড়লেন ‘অপু’! অস্তাচলে ‘ফেলুদা’
এদিন তাঁর কন্যা জানান, এদিন দুপুর ২টো নাগাদ হাসপাতল থেকে বেড়িয়ে গলফ গ্রিনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে সৌমিত্রবাবুর নিথর দেহ৷ সেখান থেকে বেড়িয়ে টেকনিশিয়ান স্টুডিয়ো এবং সাড়ে তিনটের মধ্যে রবীন্দ্র সদন পৌঁছব৷ সেখানে ২ ঘণ্টা তাঁর দেহ শায়িত রাখা হবে৷ সেখান থেকে কেওরাতলা মহাশ্মশানে পদযাত্রা করে নিয়ে যাওয়া হবে তাঁর দেহ৷ মুখ্যমন্ত্রী ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছেও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি৷ কৃতজ্ঞতা জানান চিকিৎসকদের৷