কাজ করেছেন বলিউড তারকাদের সঙ্গে, এখন কী করেন ‘করিশ্মা কা করিশ্মা’র ছোট্ট মেয়েটি?

কাজ করেছেন বলিউড তারকাদের সঙ্গে, এখন কী করেন ‘করিশ্মা কা করিশ্মা’র ছোট্ট মেয়েটি?

মুম্বই: ছোট পর্দার কুশিলবরা বারবারই ভাবনা চিন্তা করেছে ছোটদের নিয়ে৷ দু’দশক আগে ছোটদের জন্য মুক্তি পেয়েছিল বেশ কিছু হিন্দি ধারাবাহিক৷ ওই সকল ধারাবাহিকগুলির গল্প যেমন ছোটদের টিভির সামনে বেঁধে রাখত, তেমনই নজর কাড়তেন শিশু অভিনেতারা৷ সেই সময় শিশু অভিনেতাদের মধ্যে অগ্রগন্য ছিলেন ঝনক শুক্ল।

আরও পড়ুন- ছুটছে RRR-এর বিজয়রথ! সেরা সঙ্গীত বিভাগে গোল্ডেন গ্লোবস পুরস্কার জিতে নিল ‘নাটু নাটু’

তবে আসল নামের চেয়ে ঝনক অনেক বেশি পরিচিত ছিলেন ‘করিশ্মা’ নামে। জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘করিশ্মা কা করিশ্মা’য় ‘করিশ্মা’ নামের রোবট চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের মন জিতে নিয়েছিলেন তিনি৷ ‘করিশ্মা কা করিশ্মা’ ছাড়াও আরও একটি ধারাবাহিক সেই সময় ছোট পর্দার দর্শকদের মন ছুঁয়েছিল৷ আর সেটি হল ‘সোন পরি’৷ ওই ধারাবাহিকে ‘প্রিন্সি’ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ঝনক। তবে একদা জনপ্রিয়তার শিখরে থাকা এই শিশুশিল্পী বহু দিনই ক্যামেরা থেকে দূরে। ছোট বা বড় পর্দায় কোনও বিশেষ চরিত্রে তাঁকে দেখা না গেলেও, সম্প্রতি নতুন করে চর্চায় এসেছেন তিনি। সোমবার দীর্ঘদিনের প্রেমিক স্বপ্নিল সূর্যবংশীর সঙ্গে আংটিবদল করেলেন অভিনেত্রী। নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে রিং সেরিমনির ছবিও পোস্ট করেন তিনি।

গোলাপি সালোয়ার স্যুট এবং হলুদ ওড়নায় সেজেছিলেন করিশ্মা৷ অদ্ভূত সুন্দর দেখাচ্ছিল তাঁকে৷ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিতিতে আংটিবদল করেন তিনি৷ নতুন জীবনের সূচনা লগ্নে স্মৃতি ঝা, কানওয়াড় ধিলোঁ, মোহিত হিরানন্দনী, অভিকা গোরের মতো তারকারা শুভেচ্ছাবার্তা জানিয়েছেন ঝনককে।
স্বপ্নিল ঝনকের দীর্ঘ দিনের সঙ্গী। তবে অভিনয় জগৎ থেকে শতহস্ত দূরে থাকেন তিনি। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করার পর এমবিএ করেছেন৷ 

ঝনক

স্বপ্নিলের নিজস্ব একটি সংস্থা রয়েছে। পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তাঁর সংস্থা স্বাস্থ্য এবং ডায়েট সম্পর্কিত বিভিন্ন উপদেশ দিয়ে থাকে। তিনি এক জন ফিটনেস ট্রেনারও। স্বপ্নিলের সঙ্গে আংটিবদলের ছবি প্রকাশ্যে আসার সঙ্গে সঙ্গে ঝনকের দেওয়া পুরনো একটি সাক্ষাৎকারও ছড়িয়ে পড়েছে৷ যেখানে ঝনক বলেছিলেন, কেন রাতারাতি অভিনয় জগৎ থেকে সরে এসেছিলেন তিনি।

ঝনক

মাত্র ১৫ বছর বয়সে ইন্ডাস্ট্রি থেকে সরে আসেন পর্দার করিশ্মা। ধারাবাহিক ছাড়াও বেশ কয়েকটি হিন্দি ছবিতে কাজ করেছিলেন তিনি। কিন্তু শেষের দিকে হিন্দি ছবিতেও আর সে ভাবে সুযোগ পাচ্ছিলেন না। তাই দীর্ঘ বিরতির সিদ্ধান্ত নেন৷ ঝনক ওই সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘ছোটবেলা থেকে খালি শুটিং আর স্কুলের হোমওয়ার্ক নিয়েই আমার জীবন কেটেছে। তাই নিজের শৈশবকে সে ভাবে উপভোগই করতে পারিনি৷ এই ব্যস্ত জীবন আমার ভালই লাগত। কিন্তু, এর পাশাপাশি খারাপ লাগাটাও ছিল। বাবা-মা দু’জনেই বলতেন এত চাপ নিও না।’’

ঝনক জানিয়েছিলেন,তিনি যখন রাস্তায় বেরতেন, মানুষ তাঁকে নিয়ে মাতামাতি করতেন। এই জনপ্রিয়তা উপভোগ করলেও মনে মনে ভাবতেন এমনটা হতে থাকলে নিজের ইচ্ছেমতো ঘোরাফেরাও করতে পারবেন না৷ তবে হিন্দি ধারাবাহিকে এই সুনামের খাতিরেই তিনি বড় পর্দাতেও সুযোগ পান৷ শাহরুখ খান, সইফ আলি খান, ইরফান খান, কঙ্কনা সেনশর্মার মতো তারকাদের সঙ্গে অভিনয় করেছেন৷ ২০০৩ সালে মুক্তি পায় শাহরুখ খান অভিনীত ‘কল হো না হো’। ওই ছবিতে ‘জিয়া কাপুর’-এর চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি৷ এর ৩ বছর পর ‘ডেডলাইন: সির্ফ ২৪ ঘণ্টে’ ছবিতে রজিত কাপুর, ইরফান খান এবং কঙ্কনা সেনশর্মার সঙ্গে অভিনয় করে তাক লাগান ঝনক।

ঝনক

বলিউডের পাশাপাশি হলিউডেও কাজ করেছেন অভিনেত্রী। ২০০৬ সালে মুক্তি পায় ‘ওয়ান নাইট উইথ দ্য কিং’। এই ছবিতে স্বল্প দৈর্ঘ্যের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ‘সোন পরি’ খ্যাত এই শিশু শিল্পী৷ 
 

২০০৫ সালে মুক্তি পায় সঞ্জয় লীলা বনশালী পরিচালিত ছবি ব্লকব্লাস্টার ছবি ‘ব্ল্যাক’। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ঝনককে বেছে নিয়েছিলেন পরিচালক। কিন্তু সময়ের অভাবে ব্ল্যাক ছবিতে কাজ করতে পারেননি তিনি।

পুণের একটি কলেজ থেকে প্রত্নতত্ত্ব নিয়ে স্নাতক পাশ করেন ঝনক৷ একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন ভাবতাম ২৪ বছর বয়সে আমি অনেক টাকা রোজগার করব। বিয়ে করে নিজের জীবন সাজিয়ে ফেলব। কিন্তু আমার ২৫ বছর বয়স হয়ে গেল, আমি কোনও উপার্জনই করি না।’’

অভিনয় থেকে দূরে সরে যাওয়ার পর নিজের সংস্থা খুলেছেন ঝনক। তাঁর সংস্থা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। ইনস্টাগ্রামেও বেশ সক্রিয় অভিনেত্রী। তাঁর অনুরাগীর সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৫০ হাজারেরও বেশি৷