‘ডান হাতটা নাড়তে পারছি না..’, মঙ্গলের অভিশপ্ত দুপুরে ঠিক কী হয়েছিল? জানালেন ঐন্দ্রিলার মা

‘ডান হাতটা নাড়তে পারছি না..’, মঙ্গলের অভিশপ্ত দুপুরে ঠিক কী হয়েছিল? জানালেন ঐন্দ্রিলার মা

কলকাতা:  তিনি একজন রিয়্যাল ফাইটার৷ বারবার মৃত্যুকে হারিয়ে ফিরে এসেছেন ফিনিক্স পাখির মতো৷ দু’বার ক্যান্সারকে জয় করেছেন৷ আরও একবার তিনি ফিরে আসবেন৷ নিজের সাবলীল অভিনয় দক্ষতায় অনুরাগীদের মুদ্ধ করবেন৷ সকলের মনে একটাই প্রার্থনা৷ সকলের মুখে একটাই কথা ফাইট ঐন্দ্রিলা ফাইট’৷ 

আরও পড়ুন- TET: সিলেবাস, মডেল প্রশ্নপত্র-সহ বিস্তারিত গাইডলাইন প্রকাশ

গত মঙ্গলবার আচমকা ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন অভিনেত্রী৷ ভর্তি করা হয় হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে৷ ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে৷ এখনও জ্ঞান ফেরেনি৷ অবস্থা আশঙ্কাজনক হলেও একটাই স্বস্তি, চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা৷ ঐন্দ্রিলার প্রেমিক সব্যসাচী স্পষ্ট জানিয়েছেন, ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে যেন কোনও নেগেটিভ খবর রটানো না হয়।

এদিকে মেয়ের চিন্তায় দু’চোখের পাতা এক করতে পারছেন না ঐন্দ্রিলার মা শিখা শর্মা। মেয়েকে হাসপাতালে বেডে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে শুয়ে রয়েছেন, এই দৃশ্য দেখার সাহস নেই তাঁর৷ তাই সেখানে যাননি। মনের উপর দিয়ে প্রবল ঝড় বয়ে চলেছে৷ দুশ্চিন্তার প্রহর গুণছে ঐন্দ্রিলার পুরো পরিবার৷ এর মাঝেই একটি সংবাদমাধ্যমের সামনে মঙ্গলের সেই অভিশপ্ত দুপুরের ঘটনাক্রম নিয়ে মুখ খুললেন শিখাদেবী৷ 

কান্নাভেজা গলায় তিনি জানান, ‘বাড়িতে লক্ষ্মী পুজো করেছি, দিওয়ালি সেলিব্রেট করা হল। সেই সময় কোনওরকম সমস্যা ছিল না ওর৷ বরং ওয়েব সিরিজের শ্যুটিংয়ে গোয়া যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল৷ দু-দিন আগে সব্যর (সব্যসাচী) জন্মদিন দারুণ ভাবে পালন করল।  মঙ্গলবার ঘুম থেকে ওঠার পর মাসি ওকে খেতে দেয়। এরপর ও বাচ্চা দুটোকে (পোষ্য) খাওয়ালো, ওষুধ দিল। আমাদের বলল, আমি পাঁচ-সাতদিন থাকব না, ওদের কীভাবে খেয়াল রাখতে হবে সবটাই বুঝিয়ে দিল। ওয়েব সিরিজের জন্য গোয়া যাবে। এরপর হঠাৎ আমার পাশে একটু শুয়ে পড়ল। কিছুক্ষণ পর বলল মা আমি ডান হাতটা নাড়াতে পারছি না। আমি ভাবলাম ফাজলামি করছে। এরপর হাতটা তুলে দেখি, অসাড়ের মতো পড়ে যাচ্ছে। তখন আমার কেমন যেন মনে হল। আমিও তো মেডিক্যাল পার্সন…’।

টলি ফ্যাক্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঐন্দ্রিলার মা আরও বলেন, ‘এরপর মিনিট পাঁচেকের মধ্যে দু-টো পা… দশ মিনিটের মধ্যে গোটা শরীরে ডিপ্লেজিয়া হয়ে গেল। আর কিচ্ছু নাড়াতে পারল না। মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা৷ আমার কাছে মাথা যন্ত্রণার ওষুধ ছিল, সেটাই দিলাম। কিন্তু কাজ হল না৷  শুরু হয় চূড়ান্ত বমি। এর পর আর মাথা তুলতে পারেনি। পরিস্থিতি বুঝে সঙ্গে সঙ্গে ডাঃ সুমন মল্লিককে ফোন করি৷ উনি বললেন সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে চলে আসতে। সব্যকে ফোন করলাম৷ ও আসার পর গার্ডদের ডেকে ঐন্দ্রিলাকে নামিয়ে নিয়ে গেলাম। নিউরো সার্জেন নিলয় বিশ্বাস সারক্ষণ ছিলেন। হাসরাতালে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ট্রিটমেন্ট পেয়েছে। উনি আমাদের জানান, ব্রেন ড্যামেজ হয়েছে। হঠাৎ করেই পুরো বিষয়টা ঘটে গেল৷ কোথাও পড়ে যায়নি, চোটও পায়নি.. কিচ্ছু হয়নি! রাত তখন সাড়ে ৮টা৷ ওকে ওটি-তে ঢোকানো হল৷  ওটি থেকে বার করা হয় সাড়ে ১০টা নাগাদ। তারপর থেকেই আইসিইউ-তে রয়েছে৷  সেই থেকে চলছে।’