মালদা: দু’চোখ ভরা স্বপ্ন ছিল তাঁদের৷ আর ছিল স্বপ্ন পূরণের তাগিদ৷ কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যাবসায় সেই স্বপ্নই আজ বাস্তব৷ সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা নিট পরীক্ষায় সফল মালদার দুই ছেলে৷ একজনের বাবা পেশায় চা বিক্রেতা৷ অন্যজনের বাবা বেচেন ফল৷
আরও পড়ুন- বিএড কোর্স চার বছর করার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের
চরম দারিদ্রতার মধ্যেই বেড়ে ওঠা তাঁদের৷ এক সময় ভেবেছে পড়াশোনা করার অর্থ জুটবে কোথা থেকে? মনে ভয় হতো৷ কিন্তু তা বলে নিজেদের লক্ষ্য থেকে সড়ে আসেনি তাঁরা৷ মন দিয়ে পড়াশোনা করে গিয়েছে৷ কিন্তু অভাবের সংসারে সারাক্ষণ বই মুখে বসে থাকার সৌভাগ্যকী হয়? সংসারের হাল ধরতে তাঁরা কখনও চা বিক্রি করেছেন আবার কখনও ফল৷ আজ তাঁদের সাফল্যে গর্বিত গোটা গ্রাম৷ দুই কৃতীকে সংবর্ধনা জানানো হয়েছে রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে৷
এই দুই ছাত্রের মধ্যে একজনের বাড়ি মালদার গাজোল ব্লকের মসজিদ পাড়ার৷ নাম ইনজামামুল হক। তাঁর বাবা আনওয়ারুল হক পেশায় একজন চা বিক্রেতা৷ অন্যজন হরিশ্চন্দ্র পুর ১ ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা সাবির আলি। তাঁর বাবা শেখ সোলেমান আবার রাস্তার ধারে ফল বিক্রি করেন। সাবির আলির প্রাপ্ত নম্বর ৬২৬। নিটে তাঁর ব়্যাঙ্ক ৯৫২৬। অন্যদিকে ইনজামামুল হক পেয়েছে ৫৮৫। নিটে তাঁর ব়্যাঙ্ক হল ১৪,২৫০।
গাজোল মসজিদপাড়া এলাকার ছেলে ইনজামামুল হকের সাফল্যের খবর পেতেই তাঁকে সংবর্ধনা জানাতে ছুটে আসেন পাড়া পড়শিরা৷ আসে বন্ধু বান্ধবেরাও। ইনজামামুলের সাফল্যে গর্বিত পরিবার সহ গোটা গ্রাম। স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে অভাবের সংসার আনওয়ারুলের। চা বিক্রি করে কঠোর পরিশ্রম করে ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছেন তিনি। সোমবার সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা নিটের ফলাফল প্রকাশিত হয়৷ ছেলের সাফল্যে আনন্দে মাতোয়ারা ইনজামামুল এর গোটা পরিবার।
অন্যদিকে হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ সলেমানের ছেলে সাবির আলিকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত তাঁর গ্রাম৷ সাফল্যের খবর পেয়েই তাঁকে সংবর্ধনা জানাতে ছুটে আসেন রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা। শুভেচ্ছে জানায় প্রতিবেশিরাও৷