কোনও ভাবেই কি নেওয়া যেত না মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক? দিশা দেখালেন শিক্ষক

কোনও ভাবেই কি নেওয়া যেত না মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক? দিশা দেখালেন শিক্ষক

9c1fd07f9bc67214064d80f04bec7cb3

কলকাতা:  করোনা পরিস্থিতিতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে৷ অনেকে যেমন এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন, তেমন অনেকই আবার এর তীব্র সমালোচনা করেছেন৷ শিক্ষক মেহেবুব মণ্ডলের কথায়, ‘‘মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের মত পরীক্ষাগুলোকে যদি প্রতিবার প্যান্ডেমিক পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে মূল্যায়ন পদ্ধতিতে একটা বড় খামতি থেকে যাবে বলে আমি মনে করি।’’

আরও পড়ুন- কবে হবে দ্বাদশের ফল প্রকাশ? রাজ্যের বোর্ডগুলিকে কড়া নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

তিনি আরও বলেন, ‘‘প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে যদি এত বড় একটা নির্বাচন হতে পারে, সভা-সমিতি, মিটিং-মিছিল সবকিছু হতে পারে, তখন পরীক্ষা নেওয়াও সম্ভব হত। প্রয়োজনে যে হোম সেন্টারের কথা বলা হয়েছিল, সেভাবে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারত৷  যদি তাতেও সমস্যা দেখা দিত, তাহলে নিকটবর্তী স্কুলে সেন্টার করে পরীক্ষার বন্দোবস্ত করা যেত৷’’ তিনি মনে করেন,  পরীক্ষা নেওয়ার আগে ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকদের সঙ্গেও বৈঠক করা উচিত ছিল৷ অথবা তাঁদের একটা নিয়ম বিধির খসড়া পাঠিয়ে দেওয়া যেতে পারতো। তিনি মনে করেন, প্রত্যেক অভিভাবক তাঁর সন্তানকে নিয়ে সেন্টারে পৌঁছাবে তার নির্দিষ্ট একটি সময়ে বলে দেওয়া  যেতে পারতো। সেন্টারে পৌঁছে তাঁদের কী করতে হবে সেই বিষয়ক নির্দিষ্ট নিয়ম বলে দেওয়া যেতে পারত। 

মেহেবুব মণ্ডলের কথায়, এছাড়াও প্রায় প্রতিটি স্কুলে একটা বড় খেলার মাঠ আছে৷ সেখানে দূরত্ব বিধি মেনে চুন দিয়ে একটা করে বক্স করে দেওয়া যেতে পারত। সেই মতো অভিভাবকরা সেখানে বসতেন৷ স্কুল স্টাফ, শিক্ষকরা অথবা সিভিক ভলেন্টিয়ার ১ জন একটি বেঞ্চের দুই কোনে দুই পরীক্ষার্থীকে বসাতে পারতেন৷ একটা স্কুলে মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিকের সর্বাধিক ২০০ জন ছাত্রছাত্রী হতে পারে৷ সেই সংখ্যক ছাত্রছাত্রীকে সামাল দেওয়া খুব সহজ ব্যাপার ছিল। 

তিনি বলেন, আমি আমার স্কুলের কথা বলি সেখানে সাড়ে তিন হাজার ছেলে আছে। আমরা যখন স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে সাড়ে তিন হাজার ছেলেকে সামাল দিতে পারি। তাহলে এরকম একটা সিচুয়েশনে স্টাফ বাড়িয়ে, সিভিক ভলেন্টিয়ার, পুলিশ প্রশাসন ও আরও অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করে ২০০ ছেলের পরীক্ষা নেওয়া যেত না, এটা হতে পারে না। পরীক্ষা শেষ হলে ওই একই পদ্ধতি তে  স্টুডেন্টকে বার করে তার অভিভাবকের বক্সে পৌঁছে দেওয়া যেত। প্রয়োজন হলে প্রশ্নের নম্বর কমিয়ে দেওয়া অর্থাৎ স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে  যেখানে ১০০ নম্বরের  পরীক্ষা হয়, সেখানে ৬০ নম্বরের পরীক্ষা নিয়ে বাকিটা  স্কুলের হাতের ছেড়ে ব্যবস্থা করা যেতে পারত।

আরও পড়ুন- স্নাতকস্তরের পাঠক্রমে রামদেব ও যোগীর লেখা বই!

 তিনি বলেন, শিক্ষা ব্যাপারটা যৌথ তালিকার মধ্যে পড়ে। তাই এটা ভাগের মা। ইতিমধ্যে কেন্দ্র বেশ কয়েকটা পরীক্ষা বাতিল করেছে৷ ফলে রাজ্য যদি ঝুঁকি নিয়ে একটা পরীক্ষা শুরু করে এবং যদি কোনও কিছু অপ্রীতিকর ঘটটা ঘটে তাহলে সেটা নিয়ে আবার সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হতে পারত। উভয় সরকারেরই একটা সদিচ্ছার অভাব এখানে পরিলক্ষিত হয়েছে। মাঝখান থেকে শিক্ষা ব্যবস্থায় একটা সংকট নেমে আসছে। সরকারকে অবশ্যই এ বিষয়ে একটা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার কারণেই প্যান্ডেমিক সিচুয়েশনেও এমন কিছু রাজ্য দৃষ্টান্ত হিসেবে আছে যারা পরীক্ষা ব্যবস্থাকে চালিয়েছে। 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *