কলকাতা: কেন্দ্রের কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবিতে উত্তাল গোটা দেশ৷ বিদ্রোহী কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে মেয়ো রোডে অবস্থান কর্মসূচির কথাও ঘোষণা করেছে তৃণমূল৷ যেখানে সামিল হবেন অকালি দলের প্রতিনিধিরাও৷ অথচ এই সময় দাঁড়িয়ে রাজ্যের সিলেবাস থেকে বাদ পড়ল ‘শ্রমিক-কৃষক ও বামপন্থী আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য ও পর্যাবোচনা’৷ রাজ্যের এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা৷
আরও পড়ুন- জানুয়ারি থেকে স্কুল খোলার অনুমতি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি CISCE -র
কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলনে তোলপাড়া গোটা দেশ৷ বিজেপি’র বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ অন্যদিকে, রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করেও সরগরম হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি৷ তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনকে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য পাঠিয়েছেন তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রী কৃষক নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথাও বলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের দাবিদাওয়ার কথা জানি৷ ওখানে দেবেন্দ্রজি আছেন, ডেরেক ও’ব্রায়েন আছেন৷ যত কৃষক ভাইবোন আছেন, সবার পাশে আছি৷’’ মুখ্যমন্ত্রী যখন কৃষক পাশে দাঁড়াচ্ছেন ঠক তখনই বাদ পড়ল বিশ শতকের কৃষক-শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন৷
করোনা আবহে প্রায় ৯ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে স্কুলের পঠন পাঠন৷ দুই দিল্লি বোর্ডের মতো সেলেবাসে কাটছাট করেছে রাজ্য সরকারও৷ দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ সিলেবাস কমানো হয়েছে৷ সেই সূত্র ধরেই ইতিহাসের সিলেবাস থেকে বাদ পড়েছে কৃষক-শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন৷ ২০২১ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার যে সিলেবাস প্রকাশ করেছে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ তাতে দেখা গিয়েছে মাধ্যমিকে দশম শ্রেণির ইতিহাসে ৩টি অধ্যায় বাদ দেওয়া হয়েছে৷ এর মধ্যে অন্যতম বিশ শতকের ভারতে কৃষক-শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য এবং পর্যালোচনা৷ রাজ্য সিলেবাস কমিটির দাবি, কৃষক-শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলনের অংশটি সিলেবাসের শেষের দিকে রয়েছে৷ তা এখনও পড়ানো হয়নি৷ তাই বাদ দেওয়া হয়েছে৷ এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই৷ যদিও শাসকদলের এই দাবি মানতে নারাজ বিরোধীরা৷ শুরু হয়েছে বাম-তৃণূমূল তরজা৷
আরও পড়ুন- দশম ও দ্বাদশ বোর্ড পরীক্ষা নিয়ে বড় ঘোষণা CBSE-র
বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলনে, ‘‘স্বাধীনতা আন্দোলনে বামপন্থার যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তা কোনও ঐতিহাসিকই অস্বীকার করতে পারে না৷ এটা না জানা মানে ইতিহাসের একটা বড় অধ্যায় সম্পর্কে অন্ধকারে থাকা৷’’ অন্যদিতে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘৪২-এর আন্দোলনে তো বামপন্থীরা অংশগ্রহণ করেনি৷ বিরোধিতা করেছে৷ তাই বাদ হয়ে ঠিকই হয়েছে৷’’ এর জবাবে বিমান বসু বলেন, ‘‘হয়তো কোনও বাধ্যবাধকতায় একথা বলতে বাধ্য হয়েছেন তিনি৷ পেশায় অধ্যাপক হয়ে ইতিহাসের বিকৃতি যদি মেনে নেন সেটা খুবই দুঃখের৷’’